তৃতীয়বারের জন্য দেশের সরকার গড়ছে বিজাপি শাসিত এনডিএ। নতুন করে তৈরি হচ্ছে মন্ত্রিসভা। সেখানেই ৩৭ জন মন্ত্রীকে প্রাক্তন করেছে বিজেপি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, নতুন মন্ত্রিসভায় পুরনোদের না রেখে উন্নয়নের খামতিই মেনে নিল বিজেপি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মোদি। একইসঙ্গে তৈরি হয়েছে নতুন মন্ত্রীসভা। সেখানে এনডিএ জোটের তরফে যেমন মন্ত্রক পেয়েছেন কেউ কেউ। একইভাবে পুরনো দায়িত্বেই বহাল থেকেছেন অমিত শাহ্, নির্মলা সীতারমন, রাজনাথ সিং-রা। এদিকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছেন পুরনো ৩৭ জন।
আরও শুনুন: মোদির মন্ত্রিসভায় তিন-এ তিন নির্মলার, মহিলা মন্ত্রী হিসাবে গড়লেন নতুন রেকর্ড
ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চালাচ্ছে বিজেপি। বরাবরই এই অভিযোগে সরব হন বিরোধীরা। ভোটের আগে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার পর অভিযোগের বহর আরও বাড়ে। শুধু তাই নয়, রামমন্দির প্রতিষ্ঠার পর দেশজুড়ে যে ধর্মের হাওয়া বইতে শুরু করেছিল, তা নিয়ে একযোগে সরব হন বিরোধীরা। তৈরি হয় নতুন বিতর্ক। সনাতন ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান বিরোধী শিবিরের অনেকেই। সবমিলিয়ে অনেকেই একপ্রকার ধরে নিয়েছিলেন, ধর্মের দোহাই দিয়েই ভোটবাক্স ভরাবে বিজেপি। কিন্তু ভোটের ফল খানিকটা চমকে দিয়েছে সকলকেই। আদপে ধর্মের রাজনীতি ভোটে প্রভাব ফেলেনি তা প্রমাণ করেছে অযোধ্যায় ফলাফল। যে রামমন্দির নিয়ে বিজেপির এত মাতামাতি দেখা গিয়েছিল, সেখানকার মানুষই প্রত্যাখান করেছে গেরুয়া শিবরকে। তার একাধিক কারণও দেখিয়েছেন অযোধ্যাবাসী। একইভাবে ফলাফল অবাক করেছে উত্তরপ্রদেশের। জনপ্রিয় নেত্রী স্মৃতি ইরানিও হেরেছেন লোকসভায়। একইভাবে আরও অনেক দাপুটে বিজেপি নেতার লোকসভা ফল অবাক করেছে সকলকে। যদিও শেষমেশ এনডিএর দৌলতে সরকার গঠন করছে সেই বিজেপিই। তবে মন্ত্রিসভায় একাধিক রদবদল করেছেন মোদি।
আরও শুনুন: মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি! তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, তবু আক্ষেপ মোদির
বাদ দেওয়া হয়েছে, স্মৃতি ইরানি, অনুরাগ ঠাকুরের মতো বিজেপি নেতাকে। যারা দীর্ঘদিন মোদি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক সামলেছেন। তার জায়গায় নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন জে পি নাড্ডার মতো নেতা। বিজেপির সর্বভারতীয় পদ থেকে সরিয়ে নাড্ডাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এদিকে বাংলা থেকেও সুকান্ত মজুমদার ও শান্তনু ঠাকুর প্রতিমন্ত্রির পদ পেয়েছেন। ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী হচ্ছেন চিরাগ পাসোয়ান। অন্নপূর্ণা দেবী নারী ও শিশুকল্যাণ। শিক্ষার দায়িত্বে ধর্মেন্দ্র প্রধান। মোদির এই মন্ত্রক বণ্টনেই স্পষ্ট, ধর্মের বদলে সংস্কারকে প্রাধান্য দিয়েছেন মোদি। একইভাবে বাংলার বিজেপি নেতাদের মন্ত্রকে রাখার মধ্যেও বিশেষ ভাবনার রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। গত নির্বাচনে বাংলাইয় ১৮ কেন্দ্রে জয়লাভ করেছিল বিজেপি। অথচ একজনও সাংসদকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি। এবার মাত্র ১২ আসনের ২ জন মন্ত্রিসভার অংশ হলেন। সুতরাং মন্ত্রক বণ্টন নিয়ে বিজেপি যে বিশেষ ভাবনা চিন্তা করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কোথাও গিয়ে এমনটাই মনে করা হচ্ছে, বিগত ১০ বছরে উন্নয়নের খামতি কার্যত মেনে নিচ্ছে মোদি সরকার। আগামী নির্বাচনেও এই ভুল যেন না দেখতে হয়, তাই তড়িঘড়ি এমন মন্ত্রক বণ্টনের ভাবনা। গত দুবারের তুলনায় পরিস্থিতি তাই সব মিলিয়ে অন্যরকম। প্রথম থেকেই মোদি সরকারকে চাপে রাখতে যে বিরোধীরা একজোট বাঁধতে পারে, সেই সম্ভাবনা রয়েছে। পদ্ম শিবির সেই বিরোধিতা কী করে সামলায় সেদিকেও নজর রাখবে ওয়াকিবহাল মহল।