ভোটে জিতেছে দল। তার জন্য বিজয়মিছিলের আয়োজন সেরেছেন দলের কর্মীরা। কিন্তু দলের নির্দেশ, রাস্তায় নেমে মিছিলে করবেন স্রেফ পুরুষরাই। সম্প্রতি, মুসলিম লিগের এমনই ‘ফতোয়া’ নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। ঠিক কী বলছেন মুসলিম নেতারা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
নির্বাচনের ফল ঘোষণা হতেই বিজয়মিছিলের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকুক, এক-দুই আসনের জয়ই আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করতে চাইছে বিভিন্ন দল। সেই তালিকায় রয়েছে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ। দেশজুড়ে মাত্র দুটি আসন নিজেদের ঝুলিতে ভরেছে এই দল। সেটুকু উদযাপন করতেই বিজয়মিছিলের আয়োজন শুরু করেছেন দলের কর্মীরা। কিন্তু মিছিলে দলের মহিলা কর্মীরা যেন শামিল না হন, দলের তরফে দেওয়া হয়েছে এমনই নির্দেশ।
আরও শুনুন: যত দোষ আমিষে! অথচ মাছ-মাংস নয়, ভোটের হাওয়া ঘোরাল ডাল-সবজিও
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ে নেমেছিলেন ৭৮ মুসলিম প্রার্থী। তার মধ্যে জয়ী হয়েছেন মাত্র ২৪ জন। এঁদের মধ্যেই রয়েছেন IUML-র দুই প্রার্থী। একজন কেরল, অন্যজন তামিল নাড়ুর এক কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই জয় নিয়ে উচ্ছ্বসিত দলের কর্মীরা। ভোটের আগে দিনরাত এক করে কাজ করেছিলেন তাঁদের অনেকেই। সেই কাজের ফল তাঁরা পেয়েছেন। এলাকার মানুষজন মুসলিম লিগের প্রার্থীকেই নিজেদের আগামী সাংসদ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তাই বিজয়মিছিলের তোড়জোড় শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। মহিলা পুরুষ সকলেই সেখানে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। কিন্তু তার আগেই, দলের মহিলা কর্মীদের জন্য বিশেষ নির্দেশ এসেছে দলের তরফে। মুসলিম লিগের মহিলা কর্মীদের ‘সংযম রাখার’ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় এক নেতার হুঁশিয়ারি, মহিলা কর্মীরা রাস্তায় নেমে বিজয় মিছিলে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এক্ষেত্রে ধর্মের দোহাই দিয়েছেন ওই নেতা। তাঁর দাবি, মহিলার স্রেফ জয়ী সাংসদকে অভিবাদন জানান, তাহলেই হবে। অর্থাৎ বিজয়মিছিলে তাঁদের অংশ নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছেন ওই মুসলিম নেতা। পরে অবশ্য নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
আরও শুনুন: শরীর দেখালেই জেলে পোরার হুমকি বিজেপির! এবার কঙ্গনাকে চড় মারায় কী বলছেন উরফি?
তাঁর কথায়, মুসলিম লিগ কখনই মহিলা কর্মীদের বঞ্চিত করে না। দলের প্রায় সমস্ত কর্মসূচিতেই অংশ নেন মহিলারা। কিন্তু নির্বাচন জয়ের বিজয়মিছিলে অংশ না নিতে বলার বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে। তাঁর দাবি, ফল ঘোষনার দিন দলের মহিলারা ছোটখাটো একটি মিছিল করেন। যা নিয়ে নানা কথা হয়েছিল। নতুন করে দলের মহিলাদের নিয়ে এই ধরনের আলোচনা হোক, এমনটা চাইছেন না বলেই দাবি ওই নেতার। পাশাপাশি ধর্মের কথাও মনে করিয়েছেন ওই নেতা। আনন্দ করলেও নিজের ধর্মের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে দলের মহিলাদের, এমনটাই দাবি তাঁর। আর সেই কারণেই বিজয়মিছিল থেকে মহিলাদের বিরত থাকতে বলেছেন তিনি। জয়ী সাংসদদের জন্য যে সভা হবে, সেখানে মহিলারা যেতে পারেন। সাংসদদের সম্বর্ধনাও জানাতে পারেন। কিন্তু রাস্তায় নেমে মিছিলে হাঁটার কোনও প্রয়োজন নেই। এমনটাই দাবি IUML নেতার।