কাটা যাচ্ছে নম্বর, তবে ছাত্রের নয়, শিক্ষকের। তাও আবার ‘বেড পারফরম্যান্সে’র জন্য। সরাসরি বেতনেই কোপ পড়েছে তাঁদের। ব্যাপারটা ঠিক কী? শুনেই নেওয়া যাক।
শিক্ষকের কাজ পড়ানো। শ্রেণিকক্ষে তিনি কেমন পড়াচ্ছেন, সেই পারফরম্যান্স নিয়ে কথা হতেই পারে। কিন্তু শয্যাদৃশ্যের পারফরম্যান্স নিয়ে কেউ মাথা ঘামাতে যাবেন কেন? তাও খোদ শিক্ষা দপ্তর তা নিয়ে মাথা ঘামাবে, এ আবার হয় নাকি?
আজ্ঞে হ্যাঁ। এমনটাই ঘটেছে বিহারে। সেখানে খোদ শিক্ষা দপ্তরের কাছ থেকে চিঠি পেয়েছেন একাধিক শিক্ষক। যে চিঠির বক্তব্য, ‘বেড পারফরম্যান্সে’র জন্য বেতন কাটা গিয়েছে তাঁদের। আর সেই চিঠি পেয়েই চক্ষু চড়কগাছ সকলের।
আরও শুনুন: ‘আঙুল ঠিক জায়গায় দিন’, অভিনেত্রীর হস্তমৈথুনের দৃশ্য ঘুরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচনী প্রচারও
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিহারের জামুই এলাকায় একাধিক স্কুলে পরিদর্শন করতে এসেছিলেন শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকেরা। এদিকে সেদিন অনেক শিক্ষক গরহাজির ছিলেন। স্কুলের বাদবাকি কাজকর্মও সর্বতোভাবে সন্তুষ্ট করতে পারেনি আধিকারিকদের। আর সে সবকিছু খতিয়ে দেখে শুনে রিপোর্ট দিয়েছেন তাঁরা। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই মোট ১৬ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছেন জেলা শিক্ষা আধিকারিক। গরহাজির থাকার কারণে চিঠি পাঠানো হয়েছে তাঁদের। উপরন্তু আরও ১৩ জন শিক্ষককে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তাঁদের কাজ পছন্দসই নয় বলে। সকলেরই শাস্তি হিসেবে একদিনের বেতন কাটা গিয়েছে। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল, কিন্তু গোল বেধেছে চিঠিতে উল্লেখ করা কারণটি নিয়েই। বেতন কাটা যাওয়ার কারণ হিসেবে সেখানে স্পষ্ট লেখা, ‘বেড পারফরম্যান্সে’র জন্যই শাস্তির মুখে পড়েছেন ওই শিক্ষকেরা।
আসলে গোল পাকিয়েছে একটি বানান। আজকাল ভুল বানান লেখার প্রসঙ্গে অনেকেই যুক্তি দিয়ে থাকেন, বানানে কী-ই বা এসে যায়! বক্তব্য বোঝা গেলেই তো হল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বানানে অনেক কিছুই এসে যায়। যেমন এখানে, ‘ব্যাড’ লিখে গিয়ে ভুল করেই ‘বেড’ লিখে বসেছেন ওই আধিকারিক। অর্থাৎ ইংরেজি এ অক্ষরের জায়গায় ই। একবার দুবার নয়, একটি রিপোর্টে মোট ১৬ জায়গায় জ্বলজ্বল করছে একই ভুল। আর তার জেরেই, শিক্ষকদের বেতন কাটার কারণ হিসেবে হাজির হয়েছে ‘বেড পারফরম্যান্স’। এমন উচ্চপদস্থ কোনও কর্মী কীভাবে এহেন সাধারণ ভুল করতে পারেন, তাও বারেবারে, সেই প্রশ্নই উঠছে। তার উপর শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকের হাতেই এহেন ভুল যেন সামগ্রিকভাবে প্রশ্ন তুলে দিল সেখানকার স্কুলশিক্ষার মান নিয়েই।