দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। আবারও দর্শকের মন জয় করতে হাজির ‘পঞ্চায়েত’। অবশ্য তৃতীয় সিজনে দর্শকরা কতটা খুশি হবেন তা পরে বোঝা যাবে। আপাতত জানা যাচ্ছে, এই সিরিজেও অপেক্ষা করছে বিশেষ কিছু প্রশ্ন! আর সেই প্রশ্ন নাকি, কাটাপ্পা বাহুবলীকে কেন মারল- তা থেকেও বড়!
সাধারণ এক গ্রামের গল্প? নাকি, শহর ছেড়ে গ্রামে এসে পড়া এক যুবকের গল্প? কিংবা গ্রামের কিছু সাধারণ মানুষের গল্প? ‘পঞ্চায়েত’-এর দুই সিজন দেখে এর মধ্যে একটাও প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। তৃতীয় সিজনের ক্ষেত্রেও বিষয়টা খুব একটা বদলাবে না বলেই মনে করছেন অনেকে। একইসঙ্গে এমনটাও শোনা যাচ্ছে, এই সিরিজে অপেক্ষা করছে আরও রোমাঞ্চকর কিছু প্রশ্ন।
আরও শুনুন: ‘লাপাতা লেডিস’ থেকে ‘টুয়েলভথ্ ফেল’, ছোট সিনেমাই বড় স্বপ্ন দেখাচ্ছে বলিউডকে
সিনেমা বরাবরই মানুষের কথা বলে। কাজেই তার ভিতর দর্শকরা যত বেশি করে নিজেদের খুঁজে পান, ততই পছন্দের হয়ে ওঠে সেই সিনেমা। কোনও সিনেমা স্রেফ বিনোদনের জেরে হিট। কোথাও আবার এমন কোনও গভীর বার্তা লুকিয়ে আছে, যা সকলের মনে নাড়া দিয়েছে। কোনও সিনেমা দেখে হেসে লুটোপাটি খেয়েছেন দর্শকরা। তবে একই সিনেমায় এই সবকিছু আশা করা যায়? পঞ্চায়েতের মতো ওয়েব সিরিজের কাছে অবশ্যই করা যায়। সিনেমা না হোক, এই সিরিজে গল্প বলার ধরনটাই এমন, যে পছন্দ না হয়ে উপায় নেই। প্রথম দুই সিজন এতটুকু হতাশ করেনি। প্রত্যন্ত গ্রামের জীবনযাপন হয়ে উঠেছিল অনেকের রোজকার রুটিনের অংশ। সিরিজ দেখতে আর কতক্ষণ সময় লাগে! তারপর চলতে থাকে সেই নিয়ে চর্চা। পরের সিজন কবে আসবে, অমুক দৃশ্যের নেপথ্যে ঠিক কেমন গল্প রয়েছে, সবই চলতে থাকে চায়ের ঠেকে, মেট্রোর দরজার সামনে। ধীরে ধীরে আলোচনা ফিকে হয়। শুরু হয় অপেক্ষা। কিছু সিরিজের ক্ষেত্রে পরবর্তী সিজনের অপেক্ষা করতে করতেই আগ্রহ হারান অনেকে। পঞ্চায়েতে তেমনটা হয় না বললেই চলে। তথাকথিত সাসপেন্স ঘরানার না হয়েও এই সিরিজের শেষ দফায় যে কয়েকটা প্রশ্ন দর্শকদের জন্য জিইয়ে রাখা হয়েছিল, তার অপেক্ষা অবশেষে অবসান ঘটেছে। ইতিমধ্যেই কেউ কেউ তৃতীয় সিজন দেখা শুরু করেছেন। কেউ অপেক্ষা করছেন হাতের কাজ খালি করে বসার। কারণ এ সিরিজের এমন এক অমোঘ আকর্ষণ রয়েছে, যা সহজে কাটিয়ে ওঠা কঠিন।
আরও শুনুন: ধর্ম-ই বিষয় হয়ে উঠুক ‘সাহসী’ পরিচালকের, চাইছেন নাসিরুদ্দিন শাহ্
প্রথম দুই সিরিজে যে কয়েকটি চরিত্রকে নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, তাঁরা সচিবজি আর প্রধানজি। এ বলে আমায় দেখ, তো ও বলে তো আমায়। প্রথম দুই সিজনে এঁদের বন্ধুতার গল্প ছিল দেখার মতো। একদিকে প্রধানজি বুঝিয়ে ছিলেন তিনি কেবল হাসির পাত্র নয়। অন্যদিকে সচিবজিও নিজের কদর বুঝিয়েছেন। দ্বিতীয় সিজনে গল্পের মেজাজ বদলায়। পঞ্চায়েত প্রধান ব্রিজভূষণ দুবেও নিজেকে বদলে নেন সেইমতো। সময় যেমন করে মানুষকে আরও পরিণত করে, তেমন ভাবেই পরিণত হন তিনি। আর সেই হয়ে ওঠাকে সুনিপুণ ভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তোলেন দক্ষ অভিনেতা রঘুবীর যাদব। বুঝিয়ে দেন কেন গোটা গ্রামের অভিভাবক পঞ্চায়েত প্রধান। গ্রামের ভালোর জন্য তিনি হত্যে দিয়েছেন উদ্ধত বিধায়কের দরজায়, আবার প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেও কসুর করেননি। অন্যদিকে, সন্তানশোকে বিহ্বল প্রহ্লাদের মাথা নিজের বুকে টেনে নিয়েছেন একজন পিতার মতোই। সব হারানো একটা মানুষের পরিবার হয়ে উঠেছেন আপন স্বকিয়তায়। আবার প্রয়োজনে পঞ্চায়েত সচিবের অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেও পিছপা হননি পঞ্চায়েত প্রধান। তবে এইসব ঘটনার আড়ালেই লুকিয়ে ছিল বেশ কিছু প্রশ্ন। গ্রামে হটাৎ এসে পড়া সচিবজি আদৌ গ্রামেই থাকেন কি না, সেই নিয়ে দর্শকের মনে তৈরি হয়েছিল ধোঁয়াশা। পরে অবশ্য গল্পের মোড় দেখে বোঝা গিয়েছিল যাই হয়ে যাক সচিবজি গ্রাম ছেড়ে যাবেন না। শোনা যাচ্ছে, তৃতীয় সিজনে সেই ঘটনাই সত্যি হয়েছে। অর্থাৎ গ্রামে নতুন একজন সচিব এসেছেন। তাতে পুরনো সচিব যে চলে গিয়েছেন চিরতরে এমনটা বলা হয়নি ট্রেলারে। একইসঙ্গে এবারেও নাকি থাকছে বেশ কিছু প্রশ্ন। যা দর্শকের মনে রোমাঞ্চ তৈরি করতে যথেষ্ট। বছর খানেক আগে রিলিজ করেছিল বাহুবলী। দক্ষিণের সেই সিনেমা বলিউড কাঁপিয়েছিল। সিনেমার ক্লাইম্যাক্সে দেখানো হয়েছিল নায়ক বাহুবলীকে হত্যা করছেন কাটাপ্পা। দ্বিতীয় ভাগ আসা অবধি সেই প্রশ্নই ছিল বলিউডের সবথেকে চর্চিত বিষয়। পঞ্চায়েতের তৃতীয় সিজনে নাকি এর থেকেও জনপ্রিয় প্রশ্ন রয়েছে। যা বেশ কিছুদিন ভাবতে বাধ্য করবে দর্শকদের। কিন্তু সেই প্রশ্ন আসলে কী, তা জানতে হলে দেখে ফেলতে হবে পঞ্চায়েতের তৃতীয় সিজন। তবে, সচিবজি প্রধানজিদের নিয়ে দর্শক ইতিমধ্যেই বুঁদ, তা নেটদুনিয়ায় চোখ রাখলেই বোজা যায়।