কিছু করতে হবে না। তাহলেই মিলবে পুরস্কার। অবাক হচ্ছেন! এমনও এক প্রতিযোগিতা রয়েছে, যেখানে কিছু না করার জন্যই দেওয়া হয় পুরস্কার। কিন্তু সে প্রতিযোগিতায় জেতার নিয়ম কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রাজনীতি থেকে বিনোদন, প্রতিযোগিতার ছোঁয়া সর্বত্র। নিজেকে সেরা প্রমাণ করতেই হবে। তার জন্য স্ট্রঙ্গার কিংবা ফাস্টার হওয়াই কাম্য। কিন্তু এমনও এক প্রতিযোগিতা রয়েছে যেখানে এসব কিছুই প্রয়োজন নেই। প্রতিযোগীরা কিছু না করলেই জয়ী হতে পারেন।
আরও শুনুন: দুই দেশের নাগরিকত্ব চাই একইসঙ্গে, সন্ন্যাসিনীর দাবিতে বিপাকে পড়ে ভারত সরকার
কথা বলছি, দক্ষিণ কোরিয়ার ‘স্পেস-আউট’ কম্পিটিশন সম্পর্কে। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা কিছুই করেন না। কিছুই না মানে এক্কেবারে কিচ্ছুটি না। হাসি, কান্না সব বারণ। ওঠা যাবে না, এদিক ওদিক দেখাও যাবে না। অনেকটা স্ট্যাচু স্ট্যাচু খেলার মতো। তবে সেখানে চেহারার মধ্যে আড়ষ্টতা থাকে অনেকের। এক্ষেত্রে প্রতিযোগীরা আরষ্ট হলেও চলবে না। সবসময় তাঁদের হার্টরেট মনিটর করা হবে। কোনও অস্বাভাবিকতা দেখলেই বাতিল হতে হবে। প্রথমে দশে যারা উঠবেন তাঁদের বিচার হবে ওই স্বাভাবিক আচরণের ভিত্তিতেই। কিচ্ছুটি না করেও যারা একেবারে স্বাভাবিক থাকতে পারবেন, তাঁরাই এই প্রতিযোগিতায় সামনের সারিতে থাকতে পারবেন। কিছু না করা বা চুপ করে বসে থাকা মানেই ধরে নেওয়া হয় ব্যক্তি অলস। এই প্রতিযোগিতা সেই ধারণা বদলানোর চেষ্টা চালায়। আসলে, ভিস্যুয়াল আর্টের দুনিয়াও এও এক ধরনের শিল্প। প্রথমবার প্রতিযোগিতা শুরু হয় এই শিল্পকে সম্মান দেখিয়েই।
আরও শুনুন: রেলের ধাক্কায় আর যেন হাতির প্রাণ না যায়! AI দিয়েই মৃত্যু রোখার পরিকল্পনা বনদপ্তরের
কিন্তু প্রতিযোগিতায় জিততে হলে কী করতে হবে?
বলাই বাহুল্য, কিছু করতে হবে না। কিন্তু ওইভাবেই থাকতে হবে অন্তত ৯০ মিনিট। শুনে সহজ মনে হলেও, ব্যাপারটা তেমন সহজ নয়। কিছু না করে টানা দেড় ঘণ্টা বসে থাকা বেশ কঠিন। শুধু তাই নয়, যদি প্রতিযোগীর চোখে মুখে চিন্তার ছাপ ফুটে ওঠে তাহলেও চলবে না। এমনভাবেই বসে বা শুয়ে থাকতে হবে, যেন কিছু না করাটাই স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। প্রতিযোগিতায় জেতার জন্য এমনটা করা হচ্ছে বুঝলেই পুরস্কার হাতছাড়া হতে বাধ্য। প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতায় হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। আবেদন পাঠিয়েছেন ৪০০০ হাজারেরও বেশি। সেখান থেকে বেছে নেওয়া হয় ১১৭ জনকে। নির্দিষ্ট সময় অবধি তাঁদের কিছুই না করে থাকতে বলা হয়। সেইসঙ্গে চলে পর্যবেক্ষণ। কেউ সামান্য কিছু করলেই বাতিল। সেরা দশ জনকে বেছে নেওয়া হয় সেই হিসাবে। সেরার সেরা শিরোপা পান একজনই। বয়সের কোনও গণ্ডি নেই। স্কুল পড়ুয়া থেকে বয়স্করাও অংশ নিতে পারেন এই খেলায়। এই সময়ের মধ্যে হাতের কাছে রাখা যাবে না সাধের মোবাইল ফোনও। যা অনেকের কাছে রতিমতো অস্বস্তির। মানে চুপচাপ বসে ফোন ঘাঁটছেন এমনটা চলবে না। স্রেফ শান্ত হয়ে বসে থাকা। তাহলেই প্রতিযোগিতায় সেরার সেরা হতে পারেন যে কেউ।