অনেকেই বলেন অযোধ্যার রামলালার মূর্তিতে, দক্ষিণের ছাপ স্পষ্ট। কেউ আবার মূর্তির সঙ্গে মথুরার কৃষ্ণ বিগ্রহের মিল খুঁজে পান। আদতে রামমূর্তিতে দেশের অংশের প্রভাব রয়েছে? উত্তর দিলেন খোদ মূর্তির নির্মাতা অরুণ যোগীরাজ। কী বলছেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অরুণ যোগীরাজ কে, তা হয়তো কদিন আগেও অনেকেই জানতেন না। কিন্তু এখন আর সে কথা বলার উপায় নেই। রাম মন্দির উদ্বোধনের পর দেশজোড়া চর্চায় তাঁর নামও। রামলালার মূর্তি তৈরির নানা খুঁটিনাটি এর আগে জানিয়েছেন তিনি। প্রকাশ্যে এনেছেন মূর্তি তৈরি সরঞ্জামের ছবিও। এবার মূর্তির বৈশিষ্ট্য নিয়েও বিশেষ মন্তব্য করলেন অরুণ।
আরও শুনুন: স্বয়ং হনুমান আসতেন রামলালার মূর্তি গড়া দেখতে, দাবি অরুণ যোগীরাজের
লোকসভা ভোটের আগেই অযোধ্যার মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রামলালার মূর্তি। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রামলালার দর্শন সারতে মন্দিরে ভিড় জমাচ্ছেন ভক্তরা। বিদেশ থেকেও অনেকে এসে রামলালার দর্শন সারছেন। সেইসঙ্গে গর্ভগৃহে থাকা রামলালার মূর্তি নিয়ে চর্চা চলছেই। মন্দির কর্তৃপক্ষ আগে ঘোষণা করেছিল, রামলালাকে দেখতে হবে পাঁচ বছরের বালকের মতো। প্রতিষ্ঠিত মূর্তিটি যে সত্যিই তেমন হয়েছে, তা নিয়ে বিশেষ সংশয় প্রকাশ করেননি অনেকেই। তবে বিগ্রহের রূপ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। খোদ শিল্পী অরুণ যোগীরাজও সেই দাবিতে সায় দিয়েছেন। তাঁর কথায়, অনেকেই মনে করছেন রামলালার মূর্তিটি ভেঙ্কটেশ্বর স্বামীর আদলে তৈরি। আবার অনেকে বলছেন মূর্তিতে মথুরার কৃষ্ণ বিগ্রহের ছাপ স্পষ্ট। শিল্পীর দাবি রামলালা বিগ্রহ নিয়ে এই ধরনের আলোচনাই তিনি চেয়েছিলেন। আসলে, দক্ষিণের শিল্পী হিসেবে উত্তর ভারতের মূর্তি গড়া রীতিমতো চ্যালেঞ্জের কাজ ছিল অরুণ যোগীরাজের কাছে। তিনি চেয়েছিলেন এমন এক মূর্তি গড়তে যেখানে ভারতের সংস্কৃতি প্রকট হবে। উত্তর-দক্ষিনের কোনও বিভেদ থাকবে না। তাই একই মূর্তিতে ভেঙ্কটেশ্বর এবং মথুরার কৃষ্ণের ছাপ ফুটে ওঠায়, নিজের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে বলেই মনে করছেন অরুণ যোগীরাজ। তাঁর দাবি, এভাবেই উত্তর-দক্ষিণের ভেদাভেদ ঘুচিয়েছেন রামলালা।
আরও শুনুন: সোনার ছেনি, রুপোর হাতুড়িতেই রামলালার ঐশ্বরিক চোখ গড়েছিলেন অরুণ
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রামলালার মূর্তি প্রসঙ্গে নানা খুঁটিনাটি ভাগ করে নেন যোগীরাজ। মূর্তি তৈরির যাবতীয় কৃতিত্ব তিনি ভাগ করে নিতে চেয়েছেন ভক্তদের সঙ্গেই। নিজেকে রামলালার সেবক হিসেবে দাবি করা অরুণ, সবসময় বলছেন যা হয়েছে তা রামের জন্যই হয়েছে। পাশাপাশি নিজের স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিল্পী। যদিও এত সুনাম যে অযোধ্যার মন্দিরের জন্য, সেখানে পাকাপাকি থাকার কথা ভাবছেন না অরুণ। তাঁর দাবি, রাম চাইলে এমনটা হতেই পারে, তবে এখন তিনি যেভাবে রয়েছেন সেভাবেই আগামীদিনে থাকতে চান। এই মুহূর্তে নতুন কোনও মূর্তি তৈরির কাজে হাতও দিচ্ছেন না অরুণ। রামলালা তৈরি করার সময় প্রায় সব কাজই বন্ধ রাখতে হয়েছিল তাঁকে। সেইসব শেষ করেই নতুন কিছু গড়ার কথা ভাববেন বলে জানিয়েছেন শিল্পী।