নিজের পুরনো কেন্দ্র আমেঠিতে হারতে হয়েছিল স্মৃতি ইরানির কাছে। সেই হারের স্মৃতি ভুলতে এবার আসন বদলে ফেললেন রাহুল গান্ধী। কিন্তু কংগ্রেসের দুর্গ বলে পরিচিত রায়বরেলিতেও এর আগে হারের মুখোমুখি হয়েছে হাত শিবির। কবে? শুনে নেওয়া যাক।
পুরনো কেন্দ্র আমেঠির বদলে রায়বরেলিকেই তুলনায় বেশি নিরাপদ মনে করেছেন রাহুল গান্ধী। অন্তত লোকসভায় তাঁর আসন বাছাই দেখে সে কথাই ভাবছে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু কংগ্রেসের জন্য রায়বরেলিও কি নিরাপদ থেকেছে সবসময়? রাজনৈতিক ইতিহাস কিন্তু সে কথা বলছে না। বরং দেখা যাচ্ছে, এই শক্ত ঘাঁটিতেও এর আগে হারের মুখ দেখেছে হাত শিবির। তাও একবার নয়, একাধিকবার। কবে, কার কাছে হারতে হয়েছিল কংগ্রেসকে? লোকসভা ভোটের মরশুমে শুনে নেওয়া যাক সে কথাই।
আরও শুনুন:
এমন কাণ্ড করবেন না যাতে কেজরির হাল হয়! ইঙ্গিতে অন্য নেতাদের সতর্ক করলেন মোদি?
এমনিতে আমেঠি ও রায়বরেলি, দুই কেন্দ্রেরই পরিচয় ছিল কংগ্রেসের দুর্গ হিসেবেই। কিন্তু উনিশের ভোট সে হিসেব উলটে দিয়েছে। সেবার আমেঠিতে স্মৃতি ইরানির কাছে ৫৫ হাজার ভোটে হারেন রাহুল গান্ধী। সেই হারের স্মৃতি চলতি নির্বাচনেও তাঁকে তাড়া করবে কি না, সে আশঙ্কা ছিলই। তবে আগের বারের জেতা কেন্দ্র ওয়ানাড় থেকে রাহুল প্রার্থী হওয়ার পরেও জল্পনা ছিল, হয়তো ওয়ানাড়ের ভোট মেটার পর ফের আমেঠি থেকে নাম ঘোষণা হবে রাহুলের। এদিকে জেতা আসন রায়বরেলি ছেড়ে সোনিয়া গান্ধী এবার রাজ্যসভা থেকে সাংসদ হলেন, ফলে সেই ফাঁকা আসনে প্রিয়াঙ্কা দাঁড়াতে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে হল না কোনোটিই। রায়বরেলিই উত্তরপ্রদেশের একমাত্র আসন, যেখানে ২০১৯-এ জিতেছিল হাত শিবির। সেই নিরাপদ আসনটিকেই বেছে নিলেন রাহুল।
রায়বরেলি থেকে গান্ধীদের ভোটে লড়ার ইতিহাস বহু পুরনো। প্রথমবার এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হন ইন্দিরার স্বামী ফিরোজ গান্ধী। স্বাধীনতার পর পরপর দুই নির্বাচনে এই আসন ধরে রেখেছিলেন তিনিই। এরপর ১৯৬৭, ১৯৭১ আর ১৯৮০-তে রায়বরেলি থেকে প্রার্থী হন খোদ ইন্দিরা। রাজনীতিতে আসার পর সোনিয়াও এই আসনটিই বেছে নিয়েছিলেন। ২০০৪ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে চারবার এই কেন্দ্রে জয় ধরে রেখেছেন তিনি। সুতরাং আপাত চোখে এই আসনটিকে নিরাপদ মনে হওয়ারই কথা। কিন্তু ইতিহাস বলছে, ইতিপূর্বে এই আসনেও একাধিকবার হারের মুখ দেখতে হয়েছে কংগ্রেসকে।
আরও শুনুন:
নেহরু-ইন্দিরা বোকা ছিলেন নাকি! ভাষা-ধর্মের বিতর্কে চটলেন জেএনইউ উপাচার্য
রায়বরেলি থেকে কংগ্রেস যেবার প্রথম হারের মুখোমুখি হয়, সেবার অন্য কেউ নন, এই আসনে লড়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী স্বয়ং। তারপরেও হারতে হয়েছিল কংগ্রেসের আয়রন লেডিকে। সেটা ১৯৭৭ সাল। জরুরি অবস্থার পরবর্তী সময়ে ইন্দিরার জনপ্রিয়তা যে হারে কমেছিল, তার সুযোগ নিয়েই সেবছর এই আসনে জনতা পার্টির ছাপ বসান রাজ নারায়ণ। এর পর ১৯৯৬ ও ১৯৯৮, দুবার এই আসনে জেতেন বিজেপির অশোক সিং।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, রায়বরেলি থেকে এর আগে জেতার রেকর্ড রয়েছে বিজেপির। ফলে হারের স্মৃতি ভুলতে রাহুল যতই আমেঠি ছেড়ে রায়বরেলিতে আসুন না কেন, লড়াইটা খুব সহজ নাও হতে পারে, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।