মজার ছলে প্রধানমন্ত্রী মোদির নকল করতেন। তার জেরে বেশ জনপ্রিয়ও হয়েছিলেন। এবার লোকসভায় বারাণসী থেকে মোদির বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে চাইছেন সেই যুবকই। একসময় বিজেপির সমর্থক হলেও এখন সে সম্পর্ক একেবারেই আলাদা। ঠিক কী দাবি কমেডিয়ানের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পেশাদার কমেডিয়ান। তবে স্রেফ লোক হাসানো কাজ নয়। সমাজের নানা ‘ভুল’ মজার ছলে সকলের সামনে তুলে ধরতেই ব্যস্ত থাকেন এঁরা। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে নেতাদের নাম জড়ায়। এমন বহু কমেডিয়ান রয়েছেন যারা জনপ্রিয় হয়ছেন স্রেফ পলিটিশিয়ানদের নকল করে। এমনই এক কমেডিয়ান রাজস্থানের শ্যাম রঙ্গিলা। যদিও নির্বাচনের আবহে তাঁকে স্রেফ কমেডিয়ান বললে ভুল হয়। কারণ দেশের সবথেকে চর্চিত কেন্দ্র বারাণসী থেকে প্রার্থী হওয়ার দাবি তুলেছেন এই শ্যাম। যেখানে তাঁর বিপক্ষ খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
লোকসভার প্রথম দুই দফা ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। দু-বারেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বেশি ভোট পাওয়ার দাবি তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। বিরোধীরাও অবশ্য পালটা দিতে ছাড়েনি। কিন্তু সকলেই তাকিয়ে নির্বাচনের শেষ দফার দিকে। অনেকেই মনে করছেন, লোকসভার আসল লড়াই সেদিনই। কারণ এদিনই প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র বারাণসীতে ভোট। বিগত দু-বছরের মতো এবারও বারাণসীর রং গেরুয়াই থাকে কি না, সেদিকে নজর গোটা দেশের। এদিকে, বারাণসীতে মোদির বিরুদ্ধে এখনও তেমন জোরালো কোনও নাম শোনা যায়নি। প্রার্থী দিয়েও প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিরোধী শিবির। তাই অনেকেই ধরে নিচ্ছেন, এবার বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় বারাণসী কেন্দ্রে জিতবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এই আবহে উলটো সুরে কথা বলতে শোনা গেল, রাজস্থানের শ্যাম রঙ্গিলাকে। বছর ২৯-র এই যুবক, পেশায় একজন কমেডিয়ান। এবারের নির্বাচনে মোদির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে চাইছেন তিনিই।
এই পদক্ষেপ যে বেশ সাহসের, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু বাধ্য হয়ে বা কোনও উপায় না দেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শ্যাম এমনটা একেবারেই নয়। মোদির বিরুদ্ধে লড়াই করতেই, এই পদক্ষেপের কথা ভেবেছেন তিনি। যদিও শ্যামের কথায়, দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতেই এমনটা করতে হচ্ছে। বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় কেউ জিতুক সেটা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধাচরণ। মানুষের কাছে কোনও বিকল্প না থাকলে ভোটদানের মানেই হয় না। তাই তিনি নিজেই মোদির বিপক্ষ হিসেবে লড়াইয়ে নামতে চাইছেন। অথচ শ্যাম একসময় মোদির নকল করেই জনপ্রিয় হয়েছিলেন। বিখ্যাত কমেডি শো-তে তাঁর অনুষ্ঠান বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এ প্রসঙ্গে শ্যামের দাবি, প্রথম দিকে তিনি নিজেও মোদি ভক্ত ছিলেন। কিন্তু কাজের সুবাদে প্রধানমন্ত্রীর নকল করে রসিকতা করতেন। আর এতেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় শ্যামকে। বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান বাতিল থেকে স্ক্রিপ্ট বদলাতে বাধ্য করা, একাধিক অভিযোগ শ্যামের। আর এইসব কিছু কেন হচ্ছে তা বেশ বুঝতে পারেন শ্যাম। ২০২২ সালে আম আদমি পার্টির হাত ধরে রাজনীতির ময়দানে পা রাখেন। এবার ভোট যুদ্ধেও নাম লেখাতে চলেছেন তিনি। কিছুদিনের মধ্যেই মনোনয়ন জমা দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন শ্যাম। সব ঠিক থাকলে বারাণসীতে তিনি হবেন মোদির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মুখ।