বয়স ১৮ পেরোলেই মেলে ভোট দেওয়ার অধিকার। কিন্তু কাকে ভোট দেওয়া হবে, কেনই বা ভোট দেওয়া হবে, সেই নিয়ে ধন্দে থাকেন অনেকেই। এক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে কয়েকটা বই। কোন বিষয়ে লেখা সেই বই? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সকাল সকাল বুথে হাজির। তারপর লাইনে কিছুক্ষণ অপেক্ষা। ভোটার কার্ড দেখালেই বুথ কর্মীরা দেখিয়ে দেবেন কোথায় গিয়ে ভোট দিতে হবে। কিন্তু স্রেফ ওতটুকুই। এরপর নিজেকেই ঠিক করতে হবে কোন চীহ্নের পাশে বোতাম চাপবেন। কারও নির্দেশে নয়। একেবারে নিজের পছন্দ মতোই দিতে হবে ভোট।
কিন্তু এই কাজ শুনতে যত সহজ লাগে, আদতে ততটা নয়। প্রথমবার ভোট দিতে গিয়ে অনেকেই রীতিমতো ঘাবড়ে যান কাকে ভোট দেবেন সেটা ঠিক করতে। কেউ কেউ বাড়ির রাজনৈতিক মতাদর্শে অনুপ্রাণিত। ব্যালট বক্সে সেই প্রভাব পড়বে। কেউ বা কলেজ সিনিয়রদের কাছে রাজনীতি শিখেছে। তাঁরও ভোট ঠিক হবে সেইমতো। কেউ আবার পছন্দের অভিনেতা প্রার্থী হয়েছেন বলে, তাঁকেই ভোট দেবেন। এমনই আরও একাধিক উপায়ে ঠিক হয় কোন দল মূল্যবান ভোটটি পাবে। কিছুই না হলে আন্দাজে ঢিল। তবে এর কোনওটাই ভোটদানের সঠিক পদ্ধতি নয়। অন্তত এই ভাবনার ক্ষেত্রে যে কাকে ভোট দেবেন, কেন ভোট দেবেন, খানিক পড়াশোনার অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে। সিলেবাসে সেসবের দেখা মেলে না কখনও। তাই ভরসা হতে পারে এ বিষয়ে লেখা পাঁচটি বই।
প্রথমেই বলা যেতে পারে শিবম শঙ্কর সিং-এর লেখা ‘হাউ টু উইন অ্যান ইন্ডিয়ান ইলেকশন’ বইটির কথা। বইটিতে মূলত ভোটকেন্দ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রত্যেকটা ভোট কতটা দামি সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এই বইয়ে। কাজেই নতুন ভোটাররা এই বই পড়লে বেশ খানিকটা ধারণা করতে পারবেন দেশের নির্বাচন সম্পর্কে। তালিকার দ্বিতীয় বইটি নবীন চাওলার লেখা ‘এভরি ভোট কাউন্টস’। নাম থেকেই স্পষ্ট এই বইয়ে প্রতিটি ভোটের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নবীন চাওলা ইলেকশন কমিশনের প্রাক্তন চিফ। কাজেই ভোট সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয় তিনি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন এই বইয়ে। পাশাপাশি পক্ষপাতহীন নির্বাচন আয়োজনে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সেসবও এখানে লিখেছেন। পরের বইটি সাংবাদিকের চোখে দেখা নির্বাচন। বইটির লেখক প্রণয় রায়। দুঁদে সাংবাদিক তাঁর ‘দ্য ভারডিক্ট’ বইটিতে ভারতের নির্বাচনের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেইসঙ্গে ওপিনিয়ন পোল এর মতো বিষয়, যা একজন সাংবাদিকের পক্ষেই সবথেকে ভালোভাবে আলোচনা করা সম্ভব, তাও প্রণয় করেছেন এই বইয়ে। যদিও তিনি একা নন, এই বইটির আরও আরেক লেখক হলেন দোরাব আর. সোপারিওয়ালা। পরের বইটি মুকুলিকা ব্যানার্জির লেখা ‘হোয়াই ইন্ডিয়া ভোটস’। এখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভোটারদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কোন জায়গায় মানুষ কীসের দ্বারা প্রভাবিত সেই নিয়েই এই বই। অর্থাৎ কোন জায়গার সংস্কৃতি কেমন, এবং তার প্রভাব সেখানকার রাজনীতিতে কীভাবে পড়ে সেই নিয়েই এই বই। শেষ বইটি ফারহাত খানের লেখা ‘দ্য গেম অফ ভোটস’। এই বইয়ে সামগ্রিক আলোচনা করা হয়েছে দেশের নির্বাচন নিয়ে। এমনকি বিভিন্ন দলের প্রসঙ্গ ধরেও আলোচনা করেছেন লেখক। যা সহজেই কোনও ভোটারকে এটুকু বুঝতে সাহায্য করবে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই মুহূর্তে ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে। সুতরাং এই কয়েকটি বই ভোটদানে ভোটারদের বিশেষ সাহায্য করবে একথা বলাই যায়।