গরম কাল, আমের মরশুম। কিন্তু একইসঙ্গে বইছে ভোটের মরশুমের গরম হাওয়াও। ফলে আমজনতাকে নিয়েই মাথাব্যথা রাজনৈতিক নেতাদের। তবে আমআদমির ভোট কিন্তু আপাতত দ্রুত ছুটছে আমের দিকেই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
তিহাড় জেলে বসে নাকি গুছিয়ে আম খাচ্ছেন আম আদমি পার্টির কর্ণধার অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিনকয়েক আগেই ইডির দাবিতে শোনা গিয়েছিল এমন তথ্য। তবে এই প্রথম নয়, রাজনীতির বাজারে আমের কথা উঠেছে এর আগেও। এমনিতে বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনা কিংবা বাংলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক সৌজন্যে আম উপহার দেওয়ার চল আছেই। মনে পড়তে পারে, একবার খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদির সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েই অক্ষয় কুমার প্রশ্ন করে বসেছিলেন, তিনি আম খান কী উপায়ে? সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, নেতা থেকে জনতা, আমের কদর সর্বত্রই।
আরও শুনুন:
মাছ, মাংস, মিষ্টি… স্বাদের আহ্লাদও আসর মাতাচ্ছে ভোট-রাজনীতির
এই মরশুমে অবশ্য আম বাদ দিয়ে আম আদমিকে নিয়েই বেশি মাথা ঘামাতে বাধ্য হচ্ছেন রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা। গরম কাল, আমের মরশুম। কিন্তু একইসঙ্গে ভোটের মরশুমের গরম হাওয়াও বইছে যে! আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো জেলবন্দি হতেই পারেন। কিন্তু ভোটের বাজারে আম আদমির দাম তো তা বলে কমবে না। না না, দল নয়, বলছি দেশের মানুষের কথাই। এমনিতে আমজনতাকে নিয়ে নেতাদের মাথাব্যথা থাক বা না থাক, নির্বাচনী মরশুমে আমজনতার পাল্লাই ভারী। তবে বাজারে আম ওঠার ইঙ্গিত পেতেই, রাজনীতির বাজার ছেড়ে আম আদমির নজর ঘুরছে সেদিকেই।
এমনিতেই তীব্র গরমের দাবদাহে কাঁচামিঠে আমের রান্না বা আমপোড়া শরবতে বিনাবাক্যে ভোট দিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু শুধু তাই নয়, পাকা আমও ক্রমশ পাত জুড়ে বসছে এবার। আম খেতে তো ভালোই, সঙ্গে এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই, কে-এর মতো উপাদান। ফাইবার, কার্বোহাইড্রেটে সমৃদ্ধ আম যে শরীরের খেয়াল রাখে না, এমন নয়। তবে গরমের দিনে তা কিন্তু উলটে কাবু করতেও পারে। সেই দিকে খেয়াল রাখার জন্য একটু হিসেব করে খাওয়া তো যেতেই পারে। তা ছাড়া খাওয়ার অন্তত কয়েক ঘণ্টা আগে আম জলে ভিজিয়ে রাখাই স্বাস্থ্যকর। শুধু ধুয়ে পরিষ্কার করে নেওয়ার জন্যই নয়, আজকাল যে হারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয় তার থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যেও এই পন্থা কার্যকরী।
আরও শুনুন:
দুধে-ভাতে নয়, সন্তান যেন থাকে সেরেল্যাক-বোর্নভিটায়! প্রার্থনা বদলাল, লাভ হল কি?
তবে আম আদমির মধ্যে আম যতই জনপ্রিয় হোক না কেন, ভোটের বাজারে আমও যে কাঠগড়ায় উঠবে না তার কিন্তু নিশ্চয়তা নেই। কারণ মুঘলরা এ দেশে না এলে আমের জনপ্রিয়তা এত বাড়ত কি না সন্দেহ। দিল্লির বাবর-আকবরই হোন কি বাংলার মুর্শিদকুলি খাঁ বা সিরাজদৌলা, অনেক সম্রাটই ভালো আমের ফলনে নজর দিয়েছিলেন। সুতরাং কেবল মাছ-মাংস নয়, আম খাওয়াকেও কোনও নেতা মুঘলদের মতো খাদ্যাভ্যাস বলে দাগিয়ে দেবেন কি না, কে বলতে পারে!