ভোটের মরশুমে স্কুলই হয়েছিল পোলিং বুথ। কিন্তু ভোট শেষে তা পরিষ্কার করবে কে? স্কুলকে অপরিচ্ছন্ন রেখেই চলে যাওয়ার জন্য অফিসারদের ভীষণ বকল খুদে পড়ুয়া। শুনে নেওয়া যাক তার কথা।
শাসন করা কি কেবল বড়দেরই সাজে? নাকি কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল, তা বলার জন্য কোনও নির্দিষ্ট বয়সের সীমা রয়েছে? তা যে নয়, সম্প্রতি সে কথাই বুঝিয়ে দিল এক খুদে। প্রাইমারি স্কুলের এই খুদে ছাত্রী কার্যত ভর্ৎসনাই করে বসেছে নির্বাচনী আধিকারিকদের। তাঁরা কাজের জন্য তার স্কুলে এসেছিলেন বটে, কিন্তু তাঁদের কাজের দরুন স্কুলটি রীতিমতো অপরিষ্কার হয়ে পড়েছিল। আর তা দেখেই বেজায় ক্ষুব্ধ খুদে পড়ুয়া। কাজ শেষ হওয়ার পর স্কুলটিকে কেন ফের পরিষ্কার করে যাননি তাঁরা, এ নিয়ে একরকম কৈফিয়তই তলব করে বসেছে সে।
আরও শুনুন:
দলিতরা কেন জল পেয়েছে? প্রতিবাদে ভোট দিলেন না ৯০০ হিন্দু গ্রামবাসী
এই মুহূর্তে ভোট ঘিরে সাজো সাজো রব দেখছে গোটা দেশই। কেননা দেশজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে লোকসভা ভোট। আর তার প্রস্তুতি যেমন সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়সাপেক্ষ, তেমনই এই গোটা প্রক্রিয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে কর্মী ও স্থানের সংকুলান করাও জরুরি। এত মানুষের সুষ্ঠুভাবে ভোটদানের জন্য কম পোলিং বুথ তো লাগে না! তাই দেখা যায়, সরকারি কর্মীদের মতোই, অনেক সরকারি স্কুলকেও এ কাজে ব্যবহার করা হয়। এত মানুষজনের আনাগোনায় স্কুল যে খানিক অগোছালো, অপরিষ্কার হয়ে পড়বে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এ কথা তো সত্যিই যে, সেই জায়গাগুলিকে সেভাবেই রেখে যাওয়া কাজের কথা নয়। স্কুলের আসল কাজ পঠনপাঠন। ভোটের জন্য সে স্থানগুলিকে নির্দিষ্ট করা হয়নি, কেবল প্রয়োজনের তাগিদে তাদের সাময়িকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। তাহলে কাজ শেষে তা ফিরিয়ে দেওয়ার সময় সেগুলিকে ঠিক আগের মতো করে রাখারই কথা। কিন্তু চেন্নাইয়ের ওই স্কুলে তেমনটা ঘটেনি। ভোটশেষে স্কুলের অবস্থা কী দাঁড়িয়েছে, একটি ভিডিওতে সে ছবি তুলে ধরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ওই ছাত্রী।
আরও শুনুন:
প্রসবযন্ত্রণায় কাতর মহিলা, শুনেই প্রচার ফেলে হাসপাতালে ছুটলেন চিকিৎসক প্রার্থী
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, স্কুলের নানা দেওয়ালে পোস্টার লাগানো হয়েছিল। সেগুলি আস্ত বা ছেঁড়া অবস্থায় দেওয়াল থেকে ঝুলছে একইভাবে। খাবারের উচ্ছিষ্টও এদিকে ওদিকে পড়েই আছে। তা ছাড়াও ক্লাসরুমের স্মার্ট বোর্ড, ল্যাবরেটরির কিছু জিনিসপত্রও নষ্ট হয়ে গিয়েছে এসবের মধ্যে, এমনটাই অভিযোগ খুদের। ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে তার ওই ভিডিও। খুদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন নেটিজেনরাও। তাঁদের সাফ বক্তব্য, সরকার ভোটদানের জন্য শিক্ষাদানের পরিবেশকে নষ্ট করতে পারে না। কেবল স্বচ্ছ ভারতের স্লোগান না দিয়ে কাজেও সে কথার প্রয়োগ করা উচিত সরকারের, কটাক্ষ ছুড়ে বলছেন নেটিজেনরা।
জানা যাচ্ছে, এই খুদে যে একাই অভিযোগে সরব হয়েছে এমনটা নয়। নির্বাচনী মরশুমে স্কুলগুলির এহেন ভোলবদল নিয়ে অজস্র অভিযোগ জমা পড়েছে তামিলনাড়ুর স্কুলশিক্ষা দপ্তরে। তবে এখনও এই ইস্যুতে পদক্ষেপ করার দিকে হাঁটেনি কমিশন বা সরকার, কেউই।