নির্বাচনী পোস্টারেও ডিজিটাল ছোঁয়া। তাও প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি দক্ষিণের বিভিন্ন প্রান্তে এমনই এক পোস্টার ছড়িয়েছে, যার উপর মোবাইল ধরলেই ভেসে উঠছে মোদির বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য। ব্যাপারটা ঠিক কেমন? আসুন শুনে নেওইয়া যাক।
ভোটপ্রচারে AI ব্যবহার আসন্ন নির্বাচনের নয়া ট্রেন্ড। প্রধানমন্ত্রী মোদি থেকে শুরু করে বিরোধী পক্ষের অনেকেই AI কাজে লাগিয়ে ভোটপ্রচার সারছেন। এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবাদে, ভোটপ্রচারে নামছেন গান্ধী-নেহেরুও। এই আবহে সামনে এল প্রচারের আরও এক অত্যাধুনিক পদ্ধতি। যার নাম দেওয়া হয়েছে, স্ক্যান করলেই স্ক্যাম।
আরও শুনুন: শ্রাবণ মাসে মাংস খায় না হিন্দুরা! রাহুল-লালুর পুরনো ভিডিও টেনে ‘মুঘল’ তকমা মোদির
নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে নেতাদের কথার ঝাঁজ। আক্রমণ পালটা আক্রমণে তটস্থ জাতীয় রাজনীতির অন্দরমহল। সরকার পক্ষের নানা গাফিলতির কথা তুলে ধরে বিরোধী শিবির যেমন প্রশ্নবাণ ছুড়ছে, তেমনই একের পর এক উন্নয়নের খতিয়ান ঢাল হিসেবে সামনে আনছে শাসকদল। যার দরুন ভোটারদের অবস্থা বেশ শোচনীয়। কার কথা শুনবেন, আর কার কথা শুনবেন না, সে নিয়ে ভাবতে বসলে অনায়াসে কাবার হচ্ছে দিন। তবু নিজেদের ঢাক পেটাতে আর অন্যের ভুল সামনে আনতে এতটুকু ফাঁক রাখছেন না কোনও নেতাই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগ তোলার মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন জনসভা। একইসঙ্গে দেওয়াল লিখনেও ফুটে উঠছে দুর্নীতি আর উন্নয়নের খতিয়ান। কখনও সরাসরি নাম করে চলছে আক্রমণ। যা কেন্দ্র করে শুরু হচ্ছে নতুন বিতর্ক। কড়া হাতে সেসব থামানোর চেষ্টা চালাচ্ছে কমিশন। জমছে অভিযোগের পাহাড়। কিন্তু সেইভাবে লাভের লাভ হচ্ছে নাই বলা যায়। প্রায় রোজই বিভিন্ন ইস্যুতে সরগরম হচ্ছে রাজনীতির ময়দান। এই আবহে সামনে এসেছে ভোটপ্রচারের এক নতুন ধরণ। পুরোটাই অবশ্য প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে।
আরও শুনুন: দেওয়াল জোড়া প্রচার আছে, তবে বদল লিখনেই
ঠিক কীভাবে হচ্ছে এই প্রচারে?
আপাতভাবে দেখলে দেওয়ালে আটকানো পোস্টার মাত্র। সেখানে আবছা ভাবে ফুটে উঠছে প্রধানমন্ত্রী মোদির মুখ। মূলত তামিলনাড়ুতেই এই ধরনের পোস্টার বেশি চোখে পড়ছে। কিন্তু কাছে গেলেই বোঝা যাবে ওই পোস্টারের মোদির ছবি আসলে অন্য কথা বলছে। ছবিটির উপরে লেখা ‘জি পে’। আর নীচে লেখা, ‘দয়া করে স্ক্যান করুন, স্ক্যাম দেখতে পাবেন’। বলার অপেক্ষা রাখে না, ওই ছবি আসলে একটি কিউ-আর কোড। যার উপর মোবাইল ধরলেই স্ক্রিনে ফুটে উঠছে বিভিন্ন তথ্য। পোস্টারে থাকা ছবি স্ক্যান করলেই মোবাইল খুলে যাবে একটা ভিডিও। যেখানে এক ব্যক্তিকে বিভিন্ন ইস্যুতে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে শোনা যাচ্ছে। ইলেকট্ররাল বণ্ড, ক্যাগ রিপোর্ট সহ বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধী পক্ষ বিজেপির নামে যেসব অভিযোগ তোলে, ভিডিওতে সেই সবকিছুই বলছেন ওই ব্যক্তি। শুধু তাই নয় ভিডিওতে ওই ব্যক্তির দাবি বিজেপির সঙ্গে বড় বড় কর্পোরেট সংস্থার আঁতাত রয়েছে। ভিডিওর একেবারে শেষদিকে সরাসরি বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আর্জিও জানানো হচ্ছে। বদলে ইন্ডিয়া জোটকে সমর্থনের কথা বলা হয়েছে। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী সরাসরি এভাবে ভোটারদের প্ররোচিত করা যায় না। কিন্তু এখানে কে এই কাজ করছেন, এমনটা বোঝা কঠিন। অনেকে DMK-এর দিকে নিশানা করছেন। তবে এই কাজ যেই করুক, ভোটের আগে এর ফলে ভালোমত প্রভাব পড়তে পারে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।