সলমন আর সেলিম খানের সঙ্গে ছবি দিয়েই বিপাকে পড়লেন বিজেপি নেতা। গেরুয়া শিবিরের হিন্দুত্ববাদী আদর্শের প্রেক্ষিতে তাঁর এই আচরণ নিয়েই উঠল প্রশ্ন। কী ঘটেছে ঠিক? শুনে নেওয়া যাক।
সামনে লোকসভা ভোট। আর তার আগে সলমন খান ও সেলিম খানের সঙ্গে ছবি ভাগ করে নিলেন বিজেপি নেতা। জানালেন, সমাজসেবার ক্ষেত্রে খানদের অবদানের কথা নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁরা। খেয়েছেন দুপুরের খাবারও। আর এই অভিজ্ঞতা তাঁকে খুশি করেছে বলেই জানিয়েছিলেন ওই নেতা। কিন্তু সোশাল মিডিয়ায় এই বিষয়টি সামনে আসতেই উলটে সমালোচনার মুখে পড়লেন গেরুয়া শিবিরের ওই নেতা। নেটিজেনদের সাফ প্রশ্ন, এবেলা আপনার হিন্দুত্ব কোথায় গেল?
আরও শুনুন:
বিজেপিতে বিদ্রোহী, কিন্তু প্রচার করবেন মোদির ছবি দিয়েই, আদালতে আবদার নেতার
সাম্প্রতিক কালে দেশজুড়েই যে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির হাওয়া উঠেছে, তা নিয়ে নতুন করে তো কিছু বলার নেই। দৈনন্দিনের নানারকম ছোটবড় বিষয়েও দেখা যাচ্ছে, ধর্মকে টেনে আনছেন অনেকেই। কথায় কথায় ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগার অভিযোগ তুলছেন। ধর্মের প্রতি এই অতিরিক্ত সংবেদনের ছাপই কি দেখা গেল এহেন প্রতিক্রিয়ায়?
না, এখানে কিন্তু ঠিক তেমনটা ঘটেনি। বরং সম্প্রীতির ছবি কীভাবে ভোটমুখী রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে যাচ্ছে, সেদিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন নেটিজেনদের একাংশ। আর সে কারণেই এই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। আশিস শেলার নামের ওই নেতা এমনিতে হিন্দুত্ববাদী মন্তব্য করার জন্য বেশ পরিচিত। মুম্বাইয়ের বিজেপি প্রেসিডেন্ট শেলার দলের পন্থা অনুযায়ী বারে বারেই হিন্দুত্বের পক্ষে কড়া সওয়াল করেছেন। গেরুয়া শিবিরের আরও অনেক নেতানেত্রীর মতোই, তাঁর তির ছুটে গিয়েছে অন্য ধর্মের প্রতিও। সেখানে সেই ধর্মেরই দুই তারকার সঙ্গে হঠাৎ করে এমন আন্তরিক ছবি দেওয়াকে মোটেই ভালো চোখে দেখেননি নেটিজেনদের একাংশ। হ্যাঁ, কেউ কেউ প্রশংসা করেছেন বটে। তবে অনেকেরই বক্তব্য, এখন সেইসব হিন্দুত্ববাদী কথা কোথায় গেল? কেউ কটাক্ষ ছুড়েছেন, ভোটের সময় এলেই সলমন খান-দের প্রতি ভালোবাসা জেগে ওঠে! কেউ প্রশ্ন করতে ছাড়েননি, তাহলে, এখন কি আপনার মনে হয় যে মুসলিমরাও ভালো লোক হতে পারে?
আরও শুনুন:
মুসলিম লিগের ছাপ কংগ্রেসের ইস্তেহারে! মোদির তোপে লুকিয়ে হিন্দুরাষ্ট্রের স্বপ্নই?
আসলে রাজনীতি যতরকম বিভাজন তোলারই চেষ্টা করুক না কেন, রুপোলি পর্দায় যে তারকাদের দেখে গোটা দেশ স্বপ্ন সাজিয়েছে দীর্ঘদিন, তাঁদের কেবল ধর্মের খোপে ঢুকিয়ে ফেলতে অনেকেই নারাজ, এখনও। সেই কারণেই সম্প্রীতির বিজ্ঞাপন দেওয়ার প্রয়োজনে তাঁদের ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, সে প্রশ্নও জেগেই থাকে। যেমন রাম মন্দিরে তারকাদের ভিড়ের মধ্যে তিন খানের নিমন্ত্রণ না পাওয়া নজরে পড়েছিল, তেমনই আম্বানির ছেলের বিয়ের তিন খানের নাচকে তুলে ধরার দিকেও অনেকেই সংশয়ের চোখে তাকিয়েছিলেন। এবার এই ছবি ঘিরেও উসকে উঠল তেমনই সন্দেহের তির।