রাজনীতির ময়দানে নামার আগে থেকেই বিজেপি সমর্থনে সুর চড়াতেন অভিনেত্রী কঙ্গনা। নানা ইস্যুতে মুসলিমবিদ্বেষের আভাস মিলত তাঁর কথায়। সেই কঙ্গনাই নাকি বলেছিলেন, গোমাংস তাঁর পছন্দের। সম্প্রতি অভিনেত্রীর উদ্দেশে এমনই অভিযোগ তুলেছেন মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতা। ঠিক কী দাবি তাঁর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বিতর্কে জড়িয়ে বারে বারেই খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন বলি-অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আমলে একাধিকবার তিনি খোলাখুলিই সরকারের পক্ষে মুখ খুলেছেন। আর সেই সূত্রে অনেক সময়ই তাঁর কথায় সাম্প্রদায়িক ইশারা মিলেছে। যদিও এতদিন সরাসরি রাজনীতির অংশ ছিলেন না। তাই তাঁর কথায় তেমন আমল দিতেন না বিরোধী শিবিররের অনেকেই। এবার সেই ছবি বদলেছে। আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির হয়ে ভোট যুদ্ধে নামছেন কঙ্গনা। তাই বিরোধী শিবিরের নেতা-নেত্রীরাও নানা ইস্যুতে কঙ্গনাকে বিঁধতে ছাড়ছেন না। এমনকি সাম্প্রদায়িক প্রসঙ্গ টেনেও কঙ্গনাকে নিশানা করেছেন হাত শিবিরের এক নেতা।
ঠিক কী ঘটেছে?
আসলে, রাজনীতির মঞ্চ সবসময়েই কু-কথায় পঞ্চমুখ। কেবল রাজনৈতিক বিরোধিতা নয়, নারীর চরিত্র নিয়ে কুৎসা করাও রাজনীতির চেনা অভ্যাস। লোকসভার হাওয়ায় সেই অভ্যাসে জোয়ার এসেছে নতুন করে। যার শিকার হয়েছেন কঙ্গনা নিজেও। কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনাতের কঙ্গনাকে উদ্দেশ্য করে বলা মন্তব্যে রীতিমতো শোরগোল পড়েছিল। সেখানে অবশ্য নেত্রীকে ‘যৌনকর্মী’র সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল বলেই অভিযোগ। তবে সম্প্রতি যা ঘটেছে সেখানে এই ধরনের আক্রমণ ঘটেনি। বরং কঙ্গনার বলা এক পুরনো মন্তব্য সামনে এনেই, কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা বিজয় ওয়াড়েত্তিয়ার। তাঁর দাবি, কঙ্গনা নিজেই গোমাংস খাওয়ার কথা বলেছিলেন। এমনকি এই মাংস পছন্দ করেন অভিনেত্রী, এমনটাও দাবি হাত নেতার। আসলে, কঙ্গনা যে বারবার মুসলিমদের নিশানা করে মন্তব্য করেন, সে প্রসঙ্গে কটাক্ষ করতেই এই তথ্য সামনে এনেছেন কংগ্রেস নেতা।
যদিও বিজেপির তরফে এই ধরনের অভিযোগকে আমল দেওয়া হয়নি। দলের মুখপাত্র সরাসরি এই ধরনের দাবি অস্বীকার করে, কংগ্রেস নেতাকে তুলোধোনা করেছেন। এমনিতেই লোকসভার আগে নিজেদের শ্রেষ্ট প্রমাণ করতে এই ধরনের দাবি-পাল্টা দাবি চলতেই থাকছে। তবে সেখানে কখনও নারী বিদ্বেষ আবার কখনও সাম্প্রদায়িক ইস্যু জড়িয়ে ফেলা আসন্ন নির্বাচনের অন্যতম ট্রেন্ড হয়ে উঠেছে। নির্দিষ্ট ভাবে কোনও দলকে আলাদা করা যাচ্ছে না। সকলেই একে অন্যের দিকে কালী ছুড়তে ব্যস্ত। কখনও তা মাত্রা ছাড়ালে শাস্তির ব্যবস্থা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও বা লাভ হচ্ছে কোথায়? পুরনো মন্তব্য বা ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে একে অন্যকে কাঠগড়ায় তুলছেন নেতারা। সম্প্রতি কঙ্গনার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগেও যেন সেই ছাপ আরও স্পষ্ট হল।