ভোট বাক্স ভরতে নানা প্রতিশ্রুতি দেন রাজনৈতিক নেতারা। সেইসঙ্গে খরচও করেন দেদার। নিয়ম অনুযায়ী, জনগনকে সরাসরি টাকা দিতে পারেন না। বদলে পেট ভরে খাইয়ে দেন। কিন্তু এই খাতেও এবার খরচ করা যাবে না ইচ্ছেমতো। সম্প্রতি এমনই নিয়ম জারি করেছে কমিশন। ঠিক কেমন সেই নিয়ম? আসুন শুনে নিই।
অলংকরণ: সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুয়ারে ভোট। পাড়ায় পাড়ায় চলছে ভোট প্রচার। সেইসঙ্গে জমিয়ে খাওয়া। ভোটের আগে জনগণের মন ভরাতে খামতি রাখেন না বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতাই। লুকিয়ে টাকাও বিলি করেন কেউ কেউ। তবে প্রকাশ্যে সেসবের বালাই নেই। তাই খরচ করার প্রধান উপায় খাওয়ানো।
আরও শুনুন: ভোট বড় বালাই! চলছে কু-কথায় শোকজের মরশুম, কিন্তু অন্য সময়?
এমনিতে, ভোট প্রচারে একাধিক নিয়ম মানতে হয় প্রার্থীদের। কোনওভাবেই যেন কাউকে প্ররোচিত না করতে পারেন প্রার্থীরা সেদিকে কড়া নজর থাকে কমিশনের। তবু কখনও ভয় দেখিয়ে, কখনও বা টাকা বিলিয়ে ভোট আদায় করতে চান ‘বাহুবলি’ নেতা। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেই কমিশন। আসন্ন নির্বাচনে সেইসমস্ত নিয়ম আরও কড়া হচ্ছে। কমিশনের তরফে একাধিক পদক্ষেপ কড়া হয়েছে তার জন্য। সেইসঙ্গে এতদিন ছিল না এমন কিছু নতুন নিয়মও জারি করা হয়েছে। খাবারের দাম বেঁধে দেওয়া যার অন্যতম। সরয়াসরি টাকা বিলি করতে না পারলেও, প্রচারে বেরিয়ে এলাকার মানুষজনকে বিভিন্ন খাবার বিলি করতেন রাজনৈতিক নেতারা। সভা থাকলে সেখানে আসা সকলেই পেতেন জলখাবার। দখা যেত এই খাতে এতটাই খরচ করে ফেলেছেন নেতারা যা ভাবনার বাইরে। সঠিক প্রমাণ না থাকলেও সহজেই বোঝা যেত খাওয়ানোর অছিলায় নিয়ম ভেঙে টাকা ছড়িয়েছেন নেতারা। তাই এবার কমিশনের তরফেই বেঁধে দেওয়া হয়েছে খাবারের দাম। প্রার্থীরা চাইলেই কাউকে খাওয়াতে পারেন, তবে সেই দাম মেনেই কিনতে হবে জিনিস। এক্ষেত্রে কত পরিমানে কেনা হচ্ছে তা জানলেই বোঝা যাবে নেতা আসলে কোন খাতে টাকা খরচ করেছেন।
আরও শুনুন: মুখ ঢেকে যায় নির্বাচনে! তবে ভোটের রাজনীতি কি পারবে প্লাস্টিকমুক্ত হতে?
খাবারের তালিকায় চা, শিঙাড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন মিষ্টি রয়েছে। রাজ্য অনুযায়ী তৈরি হয়েছে দামের তালিকা। মধ্যপ্রদেশের মান্ডালায় চায়ের দাম ঠিক হয়েছে ৭ টাকা। শিঙাড়ার দাম সাড়ে সাত। এদিকে পাঞ্জাবের জলন্ধরে চা, শিঙাড়া দুই-এর দামই ১৫ টাকা করে। এভাবেই কোথাও ৫ টাকা আবার কোথাও ১০ টাকা দাম ধার্য্য করা হয়েছে এই প্রচলিত জলখাবারের। এখানেই শেষ নয়। তালিকায় রয়েছে ছোলা-বাটুরার মতো পেটভরা খাবারও রয়েছে। পাঞ্জাবে তার দাম ৪০ টাকা। একই ভাবে ইডলি, পোহা এমনকি মাংসের দামও বেঁধে দিয়েছে কমিশন। দল বা প্রার্থীকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই দাম অনুযায়ী যেন কেনা হয় খাবার। যদিও এই নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা কটাক্ষ শুরু করেছে বিরোধী শিবিরের নেতারা। আদৌ এই নিয়ম মানা হবে কতটা সেই প্রশ্নই তুলেছেন তাঁরা।