কাজের চাপে ওষ্ঠাগত প্রাণ। অবসর নেই বললেই চলে। তবু মোটা টাকা রোজগারের লোভে অনেকেই সেই চাপ সহ্য করেন। তবে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা জানাচ্ছে এই অভ্যাস থেকেও ছুটি চাইছে অনেকেই। বেতন কমলেও আপত্তি নেই, স্রেফ কাজের চাপ কমুক। আর কী জানাচ্ছে ওই সমীক্ষা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কথায় আছে, ফেলো কড়ি মাখো তেল! পেশাদার জগতে এর থেকে সত্যি আর কিছু হয় না। যার যেমন রোজগার তার কাজের চাপ ততটাই বেশি। কিছুক্ষেত্রে তা কায়িক শ্রম কিছুক্ষেত্রে মানসিক। চাপ না নিলে মোটা টাকা রোজগার অসম্ভব। এদিকে রোজগার না করলে যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলা ভার! তাই কার্যত বাধ্য হয়েই টাকার পিছনে ছুটে বেড়ান অনেক। নিজের কথা বাদ দিলেও, কীভাবে পরিবারের বাকী সদস্যদের আরেকটু ভালো রাখা যায়, সেই চিন্তা কমবেশি সকলেরই। তাই চাপ বাড়লে বাড়ুক, বেতন যে পকেট ভারী করে এই ধারণায় বিশ্বাসী ছিলেন অনেকেই।
আরও শুনুন: খেলা, বন্ধু নাকি ধর্ম! মানসিক অস্থিরতা থেকে মুক্তি মিলবে কীসে?
তবে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা জানাচ্ছে, এই বেতন সর্বস্ব ধারণা অনেকের কাছেই বদলাচ্ছে। বরং কীভাবে কাজের অতিরিক্ত চাপ কমিয়ে সুস্থ থাকা যায় সেই খোঁজ করছেন ভারতীয়রা। জানা যাচ্ছে, প্রায় ৬৪ শতাংশ ভারতীয় চাইছেন কাজের অতিরিক্ত চাপ কমুক। কাজ করতে আপত্তি নেই। কিন্তু সেই কাজের জন্য ব্যক্তিগত জীবন যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তাহলে সেটা মানতে নারাজ ওই ভারতীয়রা। এর জন্য বেতন হয়তো আগের মতো হবে না। রোজগার কমবে বেশ কিছুটা। তাতেও আপত্তি নেই। কাজের চাপ কমার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন কমলেও সমস্যা নেই বলেই মনে করছেন ওই ভারতীয়রা। সম্প্রতি এক মার্কিন গবেষণায় এমনই কিছু তথ্য সামনে এসেছে। সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, প্রায় ৭৮ শতাংশ ভারতীয় মনে করেন অতিরিক্ত কাজের চাপ শারীরিক ও মানসিক সমস্যা ডেকে আনছে। তবে এই চাপ শুধুমাত্র অতিরিক্ত কাজ করার নয়। আসলে, কাজের ধরণ পরিবর্তন হলেই তৈরি হচ্ছে আসল চাপ। যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছেন না অনেকেই। জোর করে এগোতে চাইলেই বাড়ছে চাপ। এদিকে ৮৯ শতাংশ মনে করছে এই কাজের ধরণ বদলানো বা অতিরিক্ত নিলেই উন্নতি করা সম্ভব। তাঁদের দাবি, কাজ শেখার আসল উপায় এই চাপের মধ্যে নিজেকে ফেলা।
আরও শুনুন: ঘরে বাইরে সামাল দিতে গিয়েই ঘাটতি কেরিয়ারে, মত দেশের ৭০ শতাংশ নারীরই
তবে সবটাই যে একা সামলাতে এমন নয়। উর্ধতনের সাহায্যও মিলছে যথেষ্টই। সাধারণত আইটি সংস্থাগুলিতে সমস্ত বিভাগের দায়িত্ব সামলানোর জন্য নির্দিষ্ট একজন করে ম্যানেজার থাকে। সিনেমা-সিরিজে সেই ম্যানেজারদের নিয়ে যতই মশকরা চলুক, আদতে তাঁদের খুব একটা খারাপ বলতে নারাজ অধিকাংশ ভারতীয় কর্মী। প্রায় ৯১ শতাংশের দাবি ম্যানেজারের সাহায্যেই যাবতীয় উন্নতি করতে পারেছেন। নতুন কাজের ক্ষেত্রেও তাঁরাই সঠিক পরামর্শ দেন বলে দাবি এই কর্মীদের। এক্ষেত্রে সংস্থার কথাও উল্লেখ করেছেন ৮০ শতাংশ। তাঁদের দাবি, নতুন কোনও কাজ শেখা কিংবা সেই কাজ সঠিকভাবে করার জন্য সংস্থার তরফেও কর্মীদের যথেষ্ট উৎসাহ দেওয়া হয়। তবু কোথাও গিয়ে অনেকেরই মনে হয়েছে অতিরিক্ত চাপ নেওয়ার থেকে নিজেকে সুস্থ রাখা বেশি দরকারি। তাই বেতন কমতে পারে জেনেও, কাজের চাপ কমানোর পক্ষেই সওয়াল করেছেন ৬৪ শতাংশ ভারতীয়।