সারাদিন সময় হয় না। পছন্দের বই নিয়ে বসতে বসতে মাঝরাত। তখন আবার অন্য সমস্যা। বাকিরা ঘুমোচ্ছে। তাই লাইট জ্বালানোর জো নেই। কিন্তু এই মাঝরাতে বই পড়তে যাবেন কোথায়? চিন্তা নেই, মধ্যরাতেও খোলা থাকে এক লাইব্রেরি। কোথায় জানেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বই পড়ার নেশা বরাবরের। কিন্তু কাজের চাপে সে সুযোগ মেলে কোথায়! গল্পের বই বাদ দিলেও, এ ভারি সমস্যার ব্যাপার। কেউ যদি চাকরির পাশাপাশি প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে চায়, তাহলেও ঠিকমতো বসে বই পড়ার সুযোগ মেলে খুব কম। ভরসা একমাত্র রাতের অন্ধকার। চারিদিক নিরিবিলি, তাই মন বসতেও সময় লাগবে না বেশি। কিন্তু না, রাতের বেলাতেও ঠিকমতো বসে বই পড়ার সুযোগ পান না অনেকেই। সেক্ষেত্রে লাইট জ্বালিয়ে রাখা জাতীয় বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
এমন পরিস্থিতে মনে হতেই পারে, আলাদা একটা বই পড়ার জায়গা থাকলেই হতো। লাইব্রেরি এক্ষেত্রে আদর্শ জায়গা। কেউ বিরক্ত করবে না। গল্পের বই হোক বা পড়ার বই, নিশ্চিন্তে পরা যাবে সবই। কিন্তু সেও তো দিনের বেলায় খোলা থাকে। ব্যতিক্রম কর্নাটকের এক লাইব্রেরি। দিনের বেলায় নয়, এই পাঠাগার খোলা থাকে মাঝরাত অবধি। যা মূলত চাকুরীজীবীদের কথা ভেবেই তৈরি। দিনের বেলা কাজের চাপে বই পড়ার সুযোগ পান না এমন অনেকেই প্রতিদিন ভিড় জমান এই লাইব্রেরিতে। প্রায় মাঝরাত অবধি নিশ্চিন্তে সেখানেই কাটাতে পারেন তাঁরা। যদিও প্রথম থেকেই যে এই লাইব্রেরি এই সময় মেনে আসছে তা নয়। এতদিন অন্যান্য লাইব্রেরির মতোই দিনের বেলা খোলা হত লাইব্রেরি। বন্ধ করা হতো সন্ধ্যে নামলেই। কিন্তু এর ফলে পাঠকের সংখ্যাও যে নির্দিষ্ট একটা গণ্ডিতে বাঁধা পড়ে থাকছে তা লক্ষ করে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এলাকায় বেশিরভাগই চাকুরীজীবী। তাই দিনের বেলা তাঁদের লাইব্রেরি যাওয়ার সময় নেই। অথচ অনেকেরই লাইব্রেরি প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা সরকারি চাকরি কিংবা অন্য কোনও পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাঁদের ভালমতো বই পড়ার একটা জায়গা অবশ্যই দরকার। সেখান থেকেই মাঝরাত অবধি লাইব্রেরি খুলে রাখার ভাবনা।
অল্প দিনের মধ্যেই স্থানীয়দের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই কারওয়ার সেন্ট্রাল লাইব্রেরী। এমনকি স্থানীয় প্রশাসনের তরফেও এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানানো হয়েছে। আগামীদিনে আরও বেশি করে বই আনার ভাবনাও রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া এই লাইব্রেরী আরও একটা বিষয়ে ব্যতিক্রমী নজির গড়েছে। এখানে নিজের বাড়ির বই নিয়ে গিয়েও পড়তে পারেন যে কেউ। যা অন্যান্য লাইব্রেরিতে সচরাচর দেখা যায় না। আসলে এখানে পড়ে কেউ যদি নিজের লক্ষপূরণ করতে পারে, তবে তার থেকে আনন্দের কিছু নেই বলেই মনে করছেন লাইব্রেরী কর্তৃপক্ষের সদস্যরা। যা প্রশংসা কুড়িয়েছে পাঠক মহলের।