ভেবেছিলেন এক আর হল এক। এমনটা হামেশাই হয়ে থাকে। তাই বলে ভাবনা কি থামানো যায়? কমানো-ও যায় না বোধহয়! জানেন কি, এমন একটা দিন রয়েছে যা এই ভাবনাগুলোকেই উদযাপন করতে শেখায়! ঠিক কেমন সেই দিন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভাবতে ক্ষতি কোথায়? একথা নিজেই নিজেকে কতবার শুনিয়েছেন, তাঁর হিসাব নেই নিশ্চয়ই! মেট্রো সিটের উলটোদিকে বসা কারও জুতোর দাম কিংবা বিলাসবহুল গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ানো, ভাবতে দোষ নেই কিছুতেই। আর এক্ষেত্রে সত্যিই কোনও ট্যাক্স লাগে না। কিন্তু তাই বলে, ভাবলেই তো আর সেটা সত্যি হয় না। বলা ভালো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যেমনটা ভাবা হয় সেটা হয় না। আর সেই না হওয়া ভাবনাগুলোর মধ্যেই হয়তো লুকিয়ে থাকে বড় কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা। যা নতুন করে ভাবনার দরজা খুলে দেয়। এবার এমন একটা বিষয়কে উতসর্গ করে একটা দিন থাকাই উচিত! মার্চের ১৫ হল সেই বিশেষ দিন, যার পোশাকি নাম “EverythingYouThinkIsWrongDay”।
আরও শুনুন: ভাতঘুম কিংবা ঘুম-ঘুম ক্লাসরুম! ঘুম সকলেরই ‘বার্থ রাইট’
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। যে ভাবনাকে ঘিরে আমাদের রোজকার পথ চলা। এই দিনটা সেইসন ভাবনার জন্যই। এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন, যিনি ভাবেন না। আবার এমন মানুষও নেই বললেই চলে, যার সব ভাবনা বাস্তবে সত্যি হয়। বলা যেতেই পারে, সত্যি না হওয়া ভাবনাই পরেরদিনের ভাবনার রশদ। অর্থাৎ, যা ভাবা হচ্ছে সেটাই যদি বাস্তবে হুবহু ঘটে যায়, তাহলে নতুন কিছু ভাবনার অবকাশই থাকবে না। একবার ব্যর্থ হলেই তো সেখান থেকে বেরিয়ে আসার নতুন ভাবনা মাথায় আসবে। কে বলতে পারে, সেই ভাবনাতেই আরও বড় সাফল্যের চাবিকাঠি লুকিয়ে নেই? বাস্তবে হয়ও এমন। এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিক বা চিত্রকরদের প্রসঙ্গ তোলা যেতে পারে। তাঁদের সৃষ্ট যা কিছু গোটা বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দেয়, সেসবের বেশিরভাগেই দেখা যাবে শিল্পীর ভাবনা কোনও দাঁড়ি টানেনি। যিনি দেখছেন বা পড়ছেন নিজের মতো করে ভাববেন শেষটুকু। কিংবা ভাববেন না। এখানেই শিল্পীর সার্থকতা। ভাবনার পরিধি অনুযায়ী প্রত্যেকের কাছে সেই লেখা বা ছবির ব্যাখ্যা আলাদা হবে। বলাই বাহুল্য, প্রত্যকের মনে সেই শিল্পকর্ম নতুন করে জন্ম নেবে। ভাবনার ভূমিকা এখানেই শেষ নয়। ছোটবেলায় যা কিছু ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ মনে হত, বড় হলে সেসবই কেমন অবান্তর হতে শুরু করে। আর এই ছোট থেকে বড় হওয়া চলতে থাকে অবিরাম। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। তাই একইসঙ্গে কোনও ভাবনা দিনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং পরেরদিনের সবথেকে অবান্তর হিসেবে জায়গা করে নিতে পারে। বাস্তবে যদিও ভাবনাকে নিয়ে এত চুলচেরা বিশ্লেষণ হয় না। বরং কিছু একটা ভেবে সেইমতো জীবনটা কল্পনা করতে থাকি আমরা। না পাওয়াগুলো জানলে ভাবনাও সেইমতো সেজে ওঠে। তবে খেয়াল রাখার বিষয় একটাই, ভাবনায় ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া সবসময় ঠিক নাও হতে পারে।
আরও শুনুন: বছরের বাড়তি দিনে যা বলাই বাহুল্য
EverythingYouThinkIsWrongDay আসলে সেটুকুই মনে করিয়ে দেয়। ভাবনায় কোনও দোষ নেই। কিন্তু এটা ভেবেই ভাবনা শুরু হোক, যা ভাবছেন তা বাস্তবে পরিণতি পাবে না। সেই অর্থে কোনও চিন্তাও থাকবে না। এইদিনটার তাৎপর্য এমনই। সহজ করে বললে এইদিনের ভাবনায় ভর করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়। ইদানিং সোশাল মিডিয়ার দৌলতে এমন দিনের কথা সকলের সামনে এসেছে। অনেক জায়গায় একে ছুটির দিন হিসেবেও ধরা হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এমন দিনের ভাবনা এল কোথা থেকে? অনেকেই মনে করেন, প্রথমবার এমন দিনের ভাবনা এসেছিল ২০০৩ সালে। কারণটা বেশ সহজ। চিন্তাকে দমিয়ে দেওয়ার যে প্রবণতা সেখান থেকে বেরিয়ে আসা বা বার করে আনার জন্য এই দিন। আগে থেকেই যদি ভেবে নেওয়া হয় যা ভাবছেন তা বাস্তবে পরিণতি পাওয়া অসম্ভব, তাহলে কোনও সমস্যা নেই। সেখানেই EverythingYouThinkIsWrongDay-র জন্ম। যা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে রীতিমতো ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।