রোগী সেজে হাসপাতালে গিয়েছিলেন আইএস অফিসার। উদ্দেশ্য ছিল অন্য। কাউকে কিচ্ছুটি বুঝতে দেননি সেসব। অপেক্ষা করেছিলেন সুযোগের। সব কিছু ভালো করে বুঝে নিতেই, আসল রূপ সামনে আনেন। কী হল তারপর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
জালিয়াতি ফাঁস করতে ছদ্মবেশ ধরেছেন গোয়ান্দা বা পুলিশ। সিনেমায় এমনটা হামেশাই দেখা যায়। বাস্তবেও যে এসব হয় না, তা নয়। সম্প্রতি সেই প্রমাণই মিলল যোগীরাজ্যে। সেখানকার এক আইএস অফিসার রোগী সেজে হাসপাতালে গিয়ে হাতেনাতে ধরলেন কর্তৃপক্ষের কারচুপি। এমনকি বাক্স বাক্স এক্সপায়ারি ওষুধও হাসপাতালে আবিস্কার করেছেন তিনি।
আরও শুনুন: স্রেফ ওষুধ নয়! আইসিইউ-র রোগীকে সারাতে ‘ভজন’ শোনানোর সিদ্ধান্ত হাসপাতালের
ঘটনাটি যোগীরাজ্যের ফিরোজাবাদ অঞ্চলের। সেখানকার এসডিএম পদে নিযুক্ত রয়েছেন আইএস অফিসার কৃতি রাজ। তিনিই সম্প্রতি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। জানা গিয়েছে, দিন কয়েক ধরেই ওই হাসপাতাল সম্পর্কে নানা অযিযোগ পাচ্ছিলেন কৃতি। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে শুরু করে চিকিৎসায় নানা সমস্যার কথা তাঁকে জানাতেন অসহায় রোগীরা। এদিকে কৃতি ভালোমতোই জানতেন, আইএস পরিচয়ে হাসপাতালে গেলে কিছুই ধরতে পারবেন না। তিনি আসছেন জানলেই সবকিছু ওপর ওপর ঠিক করে দেওয়া হবে। কিন্তু এতে তো সমস্যা মিটবে না। তাই খানিক অন্য পথে হাঁটার কথা ভাবেন কৃতি। ঠিক করেন, হাসপাতালে যাবেন, কিন্তু নিজের পরিচয়ে নয়। এমনই একদিন সকালে তাঁর কাছে অভিযোগ আসে, বেলা ১০ অবধি হাসপাতালে কোনও ডাক্তার আসেনি। রোগীরা সামান্য চিকিৎসা টুকুও পাচ্ছেন না। একথা শুনেই কৃতি সিদ্ধান্ত নেন হাসপাতালে যাবেন। এমনিতে প্রশাসনিক পদের জোরে কৃতি কোথাও গেলেই সঙ্গে সিকিউরিটি থাকে। তবে এদিন হাসপাতালে যাওয়ার সময় কোনও নিরাপত্তা রক্ষীকেই সঙ্গে নেননি কৃতি। একেবারে সাদামাটা জামাকাপড় পরে হাজির হন হাসপাতালে। দাঁড়িয়ে পড়েন সাধারন রোগীদের লাইনেই। কেউ যাতে চিনতে না পারে, তাই মুখ ঢেকে নেন ওড়না দিয়ে। কিছুক্ষণ ওইভাবেই কথা বলেন হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে।
আরও শুনুন: যানজটে রোগীর মৃত্যু দেখে পেশাবদল চিকিৎসকের, ডাক্তারির পাশাপাশি সামলান ট্রাফিকও
স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে চিনতে পেরে অন্যান্য রোগীদের মতোই আচরণ করেন হাসপাতালের কর্মীরা। এতক্ষণ ধরে সবই লক্ষ করছিলেন কৃতি। কে কাজ করছে, কে করছে না, বা আদৌ হাসাপাতালে চিকিৎসা কতটুকু হচ্ছে সব ভালোভাবে বুঝে নেন। তারপরই নিজের আসল রূপ সামনে আনেন। ব্যস! আর কিছু করার নেই। ধরে ধরে সকলকে প্রশ্ন করতে শুরু করেন কৃতি। সামনে আনেন নানা গাফিলতির অভিযোগ। উত্তরে কার্যত চুপ ছিলেন হাসপাতালের সকলেই। এরপর হাসপাতালেই বাক্স বাক্স এক্সপায়ার করে যাওয়া ওষুধ আবিষ্কার করেন। ঘটনার আরও তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন কৃতি। তবে এই ঘটনার ভিডিও নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়। যা দেখে নেটিজেনরা তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। যদিও এই কাজ তাঁর দায়িত্বের মধ্যেই পরে। তবু এইভাবে প্রায় ফিল্মি কায়দায় হাতেনাতে জালিয়াতি ফাঁস করা মুগ্ধ করেছে নেটদুনিয়াকে।
#WATCH | Uttar Pradesh: Sub-Divisional Magistrate Sadar Kriti Raj inspected a government health centre in Firozabad, after receiving several complaints regarding inconveniences faced by patients.
(Source: SDM Office) pic.twitter.com/UZamZhpvxJ
— ANI UP/Uttarakhand (@ANINewsUP) March 13, 2024