চোখ ঢাকা কালো কাপড়ে। ওই অবস্থাতেই বাইক চালাচ্ছেন দুই জাদুকর। ঠিক করেছেন এভাবেই যাবেন অযোধ্যায়। তাও সুদূর দক্ষিণের এক গ্রাম থেকে। শুধুই কী প্রচারে আসার চেষ্টা, নাকি এমন ঝুঁকির নেপথ্যে অন্য কোনও কারনও রয়েছে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
এইমাত্র সামনে ছিল। এখন আর নেই। এভাবেই চোখের নিমেষে জলজ্যান্ত মানুষ উধাও করে দিতে পারেন জাদুকররা। আবার খালিহাতে ফুঁ দিয়ে হাজির করতে পারেন আস্ত পায়রা। চোখ বেঁধেও অনেক সময় কঠিন কোনও কাজ নির্ভুল ভাবে করে দেখান। কিন্তু ওই অবস্থায় বাইক চালাতে দেখেছেন কাউকে? সম্প্রতি, এমন ম্যাজিকই দেখাচ্ছেন তেলেঙ্গানার দুই জাদুকর। চোখ কালো কাপড়ে ঢেকেই বাইক চালিয়ে অযোধ্যার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: পোষ্যের ইচ্ছেখুশি নাম রাখছেন? সাবধান! আইন কিন্তু সব দেখছে
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। ইতিমধ্যেই দুই জাদুকর রামমন্দিরের পথে বেশ খানিকটা এগিয়েছেন। জানা গিয়েছে, প্রতিদিন অন্তত ২০০ কিমি এগোচ্ছেন তাঁরা। পথে থামছেন। বিশ্রাম নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ম্যাজিক দেখিয়ে খানিক আনন্দও করছেন। তারপর আবার বাইকে। সিটে বসার সঙ্গে সঙ্গে পরে নিচ্ছেন কালো একটা টুপি। যা পরলে সাধারন কারও পক্ষে কিছুই দেখতে পাওয়া সম্ভব নয়। অথচ ওই অবস্থায় অবলীলায় বাইক ছোটাচ্ছেন দক্ষিণের দুই জাদুকর। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এমনটা কেন করছেন তাঁরা?
আরও শুনুন: ৮৫ শতাংশ মহিলারই ‘কৃষক’ তকমা জোটে না, তবু আন্দোলনে শামিল তাঁরাও
জানুয়ারির শেষে রাম মন্দির উদ্বোধন হওয়ার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা এসে ভিড় জমাচ্ছেন রাম মন্দিরে। কর্তৃপক্ষের দাবি, বিগত একমাসে কয়েক লক্ষ ভক্ত রাম লালাকে স্বচক্ষে দর্শন করে গিয়েছেন। যার দরুন দানবাক্সও উপচে পড়েছে কোটি কোটি টাকায়। শুধু তাই নয়, ভক্তদের মধ্যে অনেকেই নানা কায়দায় রাম লালাকে দর্শন করেছেন। কিছুদিন আগে এক মহিলা হ্যাঙ্গ গ্লাইডারে চড়ে আকাশপথে রাম মন্দিরের প্ররিক্রমা সেরেছেন। কেউ আবার সাইকেল চালিয়ে কয়েকশো কিমি পেরিয়ে রাম মন্দিরে হাজির হয়েছেন। তবে তেলেঙ্গানার মারুতি জোশি এবং রামক্রুষ্ণা (Maruti Joshi and Ramkrushna) যা করেছেন তা স্রেফ ব্যতিক্রম বললেও কম বলা হবে। তেলেঙ্গানার সামসাবাদের বাসিন্দা এই দুই জাদুকর চোখে কালো কাপড় বেঁধে বাইক চালিয়ে রাম মন্দিরে পৌঁছনর পণ করেছেন। যার জন্য ১৬০০ কিমি পথ পাড়ি দেবেন তাঁরা। রাম মন্দিরে যাওয়ার টান তো রয়েছেই, সেইসঙ্গে চোখ বেঁধে বাইক চালানোর নেপথ্যে এক বিশেষ বার্তা দিতে চেয়েছেন দুই জাদুকর। তাঁদের দাবি, অনেক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ, যারা বাইক বা গাড়ি চালাতে রীতিমতো দক্ষ, তাঁরাও পথ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এদিকে যারা অন্ধ বা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা রয়েছে, তাঁরা নিশ্চিন্তে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছেন। যার কারণ একটাই সাবধানতা অবলম্বন। আসলে চোখে কাপড় বেঁধে বাইক চালিয়ে দুই জাদুকর এই পথ সচেতনতাই বাড়াতে চেয়েছেন। তাঁদের এই কাজ দেখে অনেকের কৌতুহল হবে, এবং তখনই নিজেদের উদ্দেশ্য সকলকে জানাতে পারবেন বলে মনে করছেন দুজনে। যদিও এই কাজ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। এর জন্য দীর্ঘ ৬-৮ মাস তাঁরা অভ্যাস করেছেন। সেইসঙ্গে চোখ বেঁধে ম্যাজিক দেখানোর কৌশলও তাঁদের জানা। সবমিলিয়ে এমন অভাবনীয় কাজও অবলীলায় সেরে ফেলছেন দক্ষিণের দুই জাদুকর। সব ঠিক থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই রামলালার দরবারে তাঁরা পৌঁছে যাবেন। আর তখনই তাঁদের আসল উদ্দেশ্য সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন দুই জাদুকর।