মানুষ নয়, এই দোকানের দায়িত্ব সামলায় বিড়াল। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত দোকানের সবদিকে নজর থাকে মার্জার সুন্দরীর। শুধু তাই নয়, দোকানে এতটুকু গোলমাল হলেই নিজস্ব ভঙ্গিতে প্রতিবাদও জানায়। কোথায় রয়েছে এমন দোকান? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ন-বছর ধরে কর্মরত। এতদিনে একটাও ছুটি নেই। কাজে ফাঁকিও নেই এতটুকু। খোদ মালিকের দাবি, এই কর্মী তাঁর থেকেও বেশি মন দিয়ে কাজ করেন। তবে যার কথা বলছি, সে কোনও মানুষ নয়। এক চারপেয়ে বিড়াল। দোকানের সব দায়িত্ব তাঁকে দিয়েই নিশ্চিন্তে থাকেন মালিক।
কুকুরের মতো প্রভুভক্ত নয়। বরং মালিক যা চাইবেন এ তার উলটোটাই করতে চায়। তা সে ছবি তোলা হোক, বা অন্য কিছু। আর হবে নাই বা কেন! এ হল গিয়ে বাঘের মাসি। তাই পোষ মানলেও তাকে দিয়ে সব কাজ সহজে করিয়ে নেওয়া অসম্ভব। ঠিক ধরেছেন বিড়ালের কথাই বলছি। একেবারে নিজস্ব একটা আমেজ নিয়ে থাকতেই বেশি পছন্দ করে বিড়াল। অনেকে তাই বিড়ালকে স্বার্থপরও বলে। কিন্তু, নিউ ইয়র্কের চায়নাটাউনের এক বিড়ালকে দেখলে এ ধারণা বদলাতে বাধ্য। এলাকায় বোবো নামে পরিচিত এই বিড়াল, আসলে একটি দোকানে কাজ করে। শুনতে অবাক লাগলেও, এক্ষেত্রে কাজ করেই বলতে হয়। কারণ আর পাঁচটা বিড়ালের মতো নিজের মর্জিতে ঘুরে বেড়ানো বোবোর একেবারে না পসন্দ। সারাদিন চুপ করে দোকানের নির্দিষ্ট একটা জায়গায় বসে থাকাই তার একমাত্র কাজ। মাঝে মধ্যে এদিক ওদিক গেলেও, দোকানের বাইরে নয়। এর মধ্যে দোকানে কে এল, কে গেল, কী হল সবদিকে খেয়াল থাকে তার। এমনটা বিগত ৯ বছর ধরে চলে আসছে। এতদিনে কোথাও ছুটি কাটাতে যায়নি বোবো। এমনকি নিজের কাজে কোনও ফাঁকিও দেয়নি। ২০১৪ সালে প্রথমবার তাকে দোকানে নিয়ে আসা হয়। সেই থেকে এখানে নজরদারি চালানোই তার কাজ।
এমনিতে বিড়াল বেশ আদুরে প্রাণী। তবে বোবো-র সেসব বালাই নেই। সে নিজের মতো থাকতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। দেখলে মনে হবে, যেন সত্যিই ডিউটি করছে। সেখানে কোনওরূপ বেচাল তার পছন্দ নয়। মন দিয়ে নিজের কাজটুকু করাই তার একমাত্র লক্ষ্য। কখনও আবার আশেপাশের চারপেয়ে বন্ধুরাও তার সঙ্গে যোগ দেয়। কিন্তু তাদের সঙ্গে মিলে কোনও উপদ্রব করে না বোবো। দোকানের মালিক নিজেও মনে করেন, এই দোকানের দায়িত্ব তাঁর থেকে ভালো সামলাতে পারে এই পোষ্য বিড়ালটিই। তাই তার সবরকমের খেয়াল রাখেন তিনিও। দু-বেলা খাবার দেওয়া থেকে শুরু করে কোনও সমস্যা হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া, সবই করেন। এদিকে বোবো-ও নিজের কাজ দিয়ে তা সুদে আসলে মিটিয়ে দেয়। স্থানীয়দের কাছেও সে বেশ জনপ্রিয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় বোবোর ছবিতে রিয়াক্টের বন্যা বয়ে যায়। তবে সেদিকে নজর দেওয়ার সময় নেই তার। দোকানের চারিদিকে নজর রাখাই তার একমাত্র কাজ।