রাম, সীতা, লক্ষ্মণ কিংবা হনুমান এলেই বিনামূল্যে খাবার পাবেন। সম্প্রতি, দিল্লির এক দোকানের বিজ্ঞাপনে এমনটাই দেখা গিয়েছে। যে দোকানের মালিক একজন মুসলমান। ব্যাপারটা ঠিক কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ব্যস্ত রাস্তার ধারে খাবারের দোকান। তার বাইরেই বড় করে টাঙানো বিজ্ঞাপন। সেখানে লেখা, রাম, সীতা, হনুমান, লক্ষ্মণ এই দোকানে এলেই বিনামূল্যে খাবার পাবেন। আর এই অফার সারাজীবনের জন্য বৈধ। ভাবছেন তো এমনটা কলিযুগে, রাম-সীতা আসবেন কীভাবে?
আরও শুনুন: পথ সুরক্ষার দায়িত্বও রাম-এর! চাহিদা তুঙ্গে ‘জয় শ্রী রাম’ হেলমেটের
তাহলে খুলেই বলি। আসলে, সবটাই বিজ্ঞাপনের কৌশল। যার সঙ্গে মিশেছে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আবেগ। মন্দির প্রতিষ্ঠার এক সপ্তাহ কাটলেও, ভক্তদের উন্মাদনায় এতটুকু ভাটা পড়েনি। প্রতিদিন লাখো ভক্ত হাজির হচ্ছেন অযোধ্যার মন্দির। স্বচক্ষে একবার রামলালার দর্শন সারবেন। এই আশায় দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ভক্তরা। এই আবহে, এমন অদ্ভুত বিজ্ঞাপন প্রকাশ্যে এনেছে দিল্লির এক রেস্তোরাঁ। নয়ডার সেক্টর ১৬ মেট্রো স্টেশনের কাছে ওই রেস্তোরাঁটির মালিক ওয়াবেজ খান। যদিও একে পুরোদস্তুর রেস্তোরাঁ বলা ভুল। ব্যস্ত রাস্তার ধারে ছোটখাট একটা খাবারের দোকান বলা যায়। তবে এই বিজ্ঞাপনের জোরে তা আর ছোট নেই। ইতিমধ্যেই স্রেফ এই বিজ্ঞাপনের জন্য দোকানে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন অনেকেই। ঠিক কী রয়েছে ওই বিজ্ঞাপনে?
আরও শুনুন: উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে রাম মন্দির যাওয়ার জের, ইমামের বিরুদ্ধে জারি হল ফতোয়া
একেবারে উপরে লেখা দোকানের নাম। ঠিক তার নিচেই রাম, সীতা, লক্ষ্মণ এবং হনুমানের ছবি। আর সেইসঙ্গে লেখা, যাঁদের নাম রাম, সীতা লক্ষ্মণ কিংবা হনুমান তাঁরা এই দোকানে বিনামূল্যে খাবার পাবেন। আর এই অফার যে রাম মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সেকথাও বিজ্ঞাপনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা রয়েছে। বলাই বাহুল্য, বাস্তবে রাম-সীতার মতো পৌরাণিক চরিত্র না থাকলেও একই নামের অনেকেই থাকতে পারেন। অন্তত, নামের মধ্যে রাম-সীতার ছোঁয়া রয়েছে এমন উদাহরণও একটু খুঁজলেই মিলবে। তাঁদের সকলের জন্যই এই বিনামূল্যে খাবারের অফার। দোকানের মালিক ওয়াবেজ খানের দাবি, রাম মন্দির উদ্বোধনে হিন্দুরা যেমন খুশি, তেমনই মুসলিমরাও। আর সেই খুশিতেই এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন ওয়াবেজ। তাঁর কথায়, ইতিমধ্যেই রাম এবং সীতা নামের কয়েকজন এসেও ছিলেন। প্রতিশ্রুতি মতো, বিনামূল্যেই তাঁদের খাবার দিয়েছেন ওয়াবেজ। প্রথম দিকে কোনও পরিচয়পত্র দেখতে চাননি তিনি। কিন্তু পরে ভিড় বেশি হলে তেমনটা করতে হতেও পারে বলেই জানিয়েছেন ওয়াবেজ। কারণ এই অফার সারাজীবনের জন্য বৈধ রাখবেন বলেই ঠিক করেছেন ওই মুসলিম দোকানি। তাঁর কথায়, যতদিন এই দোকান চলবে ততদিন রাম-সীতা নামের যে কেউ এসে বিনামূল্যে খেয়ে যেতে পারেন। তবে এই উদ্যোগ তাঁর সম্প্রদায়ের অনেকেই ভালোভাবে নেননি। তবে সেই নিয়ে বিশেষ মাথাব্যথা নেই ওয়াবেজের। রাম মন্দির উদ্বোধনের আবহে নতুন করে সম্প্রীতির বার্তা দিতেই তাঁর এই উদ্যোগ। যা আগামী দিনেও একইভাবে বজায় রাখবেন বলেই মনে করছেন নয়ডার এই মুসলিম দোকানি।