যমজ বোন। অথচ একে অন্যকে চিনতেন না। ১৯ বছর পর দুজনের মিলন হয়েছে। তাও আবার নাচের মাধ্যমে। ঠিক কীভাবে আলাদা হয়েছিলেন তাঁরা? একে অন্যকে খুঁজেই বা পেলেন কীভাবে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ঠিক যেন রমেশ সিপ্পির ‘সীতা অউর গীতা’। তবে বাস্তবের গল্পে সিনেমার থেকেও নাটকীয়তা খানিক বেশি। কারণ এক্ষেত্রে যা ঘটেছে, তা শুধুমাত্র বিরল বললেও কম বলা হয়। যমজ হওয়া সত্ত্বেও একে অন্যকে দেখননি টানা ১৯ বছর। এতদিন পর দুজনেই আবিষ্কার করলেন, পৃথিবীতে হুবহু তাঁদের মতো দেখতে আরও একজন রয়েছে।
আরও শুনুন: শাশুড়ির সেবা করা পরম ধর্ম, মনুস্মৃতি টেনে বধূকে কর্তব্য বোঝাল আদালত
ভাবছেন তো, এমনটা কীভাবে সম্ভব?
তাহলে খুলেই বলি। ঘটনাটি ইউরোপের জনপ্রিয় শহর জর্জরিয়ার। দুই বোনই একই শহরের বাসিন্দা। কিন্তু তাতে কি, দুজনেই জানতেন না একে অন্যের পরিচয়। এমনকি তাঁরা যে পরিবারে বড় হয়েছেন সেই পরিবারের সঙ্গেও তাঁদের রক্তের সম্পর্ক নেই। কথা বলছি অ্যামি খিভিসিয়া এবং আনো সারটানিয়া সম্পর্কে। দুজনকে দেখতে হুবহু এক। পাশাপাশি দাঁড়ালে বোঝার উপায় নেই, কার নাম অ্যামি, কার নাম আনো। কিন্তু দীর্ঘ ১৯ বছর এইধরনের কোনও পরিস্থিতিতে তাঁদের পড়তে হয়নি। কারণ দুজনেরই দুজনের অস্তিত্ব সম্পর্কে কোনও ধারণা ছিল না। তবে জিনগত আরও একটা মিল ছিল দুজনের। খুব ভালো নাচ জানতেন দুই বোনই। আর সেই সূত্রেই দুজনের মিলন। জনৈক টিভি শো-তে প্রথমবার অ্যামি আবিষ্কার করেন ঠিক তাঁর মতো দেখতে একজন সেখানে অংশ নিয়েছেন। যা দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যান অ্যামি। এদিকে অনলাইনে কোনও এক ভিডিওতে আনো আবিষ্কার করেন তাঁর মতো দেখতে আরেক তরুণীকে। বলাই বাহুল্য, তাঁরা একে অন্যকে দেখেই এমন অবাক হয়েছেন। এরপরই শুরু হয় খোঁজ। অনলাইনেই অনেক কাঠখড় পুরিয়ে অবশেষে দুজন দুজনকে খুঁজেও পান। কিন্তু তাঁরা যে যমজ বোন, একথা তখনও অজানাই ছিল।
আরও শুনুন: ‘জয় শ্রী রাম’ বলেই অধ্যাপকের পা ছুঁয়ে প্রণাম, ব্রিটেনে ভারতীয় পড়ুয়ার কাণ্ডে শোরগোল
ধীরে ধীরে সামনে আসে সেই তথ্য। দুই বোন জানতে পারেন, এই ঘটনার কারণ তাঁদের নিজের বাবা। তিনিই দুই মেয়েকে জন্মানোর পর দুই আলাদা পরিবারের কাছে বিক্রি করে দেন। আসলে, অ্যামি ও আনোর মা, তাঁদের জন্ম দিয়েই কোমায় ছলে যান। সেই অবস্থায় দুই একরত্তির দায়িত্ব কে নেবে, এইসব ভেবেই এমনটা করেন তাঁদের বাবা। যদিও বিক্রি করার পিছনে এটাই একমাত্র কারণ কি না, সেই নিয়ে দ্বন্দ রয়েছে। তবে সেকথা ভেবে আর কাজ নেই। দুই বোন, বড় হয়ে দুই আলাদা পরিবারে। তাই এতদিন পর নিজের রক্তের সম্পর্কের কাউকে খুঁজে পেয়ে তাঁরা দুজনেই বেজায় খুশি হন।