মসজিদের পতাকা সরিয়ে, গেরুয়া পতাকা লাগানোর অভিযোগ। ঘটনায় শোরগোল যোগীরাজ্যে। তৎপর পুলিশ প্রশাসনও। কী ঘটেছে ঠিক? শুনে নেওয়া যাক।
ধর্মে ধর্মে বিভেদের উসকানিতে মাঝে মাঝেই অশান্তি মাথাচাড়া দেয় দেশে। ধর্মের উন্মাদনায় কখনও কখনও ভিন্ন মতকে গুরুত্ব দিতেই ভুলে যান কেউ কেউ। আর তখনই বাড়ে সমস্যা। সম্প্রতি ধর্মকে কেন্দ্র করে এক ঘটনার জেরে তেমনই আশঙ্কার সিঁদুরে মেঘ দেখছে উত্তরপ্রদেশ। মসজিদের পতাকা সরিয়ে দেওয়া এবং সেখানে গেরুয়া পতাকা লাগানোর অভিযোগ ঘিরেই সরগরম যোগীরাজ্য। অভিযোগ, এক মসজিদের চূড়ায় থাকা সবুজ পতাকা সরিয়ে, গেরুয়া পতাকা লাগানো হয়েছে। আর সেই পতাকার উপর লেখা রয়েছে ‘জয় শ্রী রাম’। যার দরুন আরও জোরালো হয়েছে বিতর্কের আঁচ।
আরও শুনুন: রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিনেই জন্ম, রামরহিম নামেই সন্তানকে ডাকবেন মুসলিম মহিলা
রামমন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে সদ্য ভক্তির জোয়ারে ভেসেছে গোটা দেশ। ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার মন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে রামলালার। অযোধ্যাবাসী তো বটেই, গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধ্বনিত হচ্ছে ‘জয় শ্রী রাম’। এই আবহে যোগীরাজ্যের মসজিদের এই ঘটনায় নতুন করে অশান্তি ছড়াল এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছেও রাম মন্দির উদ্বোধনের ঠিক পরের দিন। জানা গিয়েছে, ওই মসজিদ উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুর জেলার লালবাগ অঞ্চলের। স্থানীয়দের বয়ান থেকে পুলিশের অনুমান, ঘটনার দিন সন্ধেবেলা ওই মসজিদে হাজির হয় অভিযুক্ত তিন যুবক। তারপর মসজিদের একবারে মাথায় উঠে পড়ে তিনজনেই। সঙ্গে ছিল ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা গেরুয়া পতাকা। এমনিতে, রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই পতাকা চোখে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় থাকা রাম মন্দির বা হনুমান মন্দির চত্বর সাজানো হয়েছিল ওই পতাকা দিয়ে। আসলে, মন্দির উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, নিজেদের এলাকায় রামের নামে উদযাপন করার কথা। অকাল দীপাবলি পালনের নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। এক্ষেত্রে মসজিদের ছাদে উঠে তিন যুবক সেখানে থাকা সবুজ পতাকাটি সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ইসলাম ধর্মের প্রতীক হিসেবে যে কোনও মসজিদ বা মাজারে এই ধরনের পতাকা দেখা যায়। সেটি সরিয়ে ওই স্থানে ‘রামনাম’ লেখা গেরুয়া পতাকা লাগিয়ে দেয় ওই তিনজন। ঘটনাটি চোখে পড়তেই পুলিশের দ্বারস্থ হন স্থানীয় কয়েকজন মুসলিম বাসিন্দা। দায়ের করা হয় এফআইআরও। এদিকে রাম মন্দির উদ্বোধন ঘিরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে বিষয়ে এমনিও সতর্ক ছিল উত্তরপ্রদেশের পুলিশ প্রশাসন। ফলে অভিযোগ পেতেই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে তৎপর হয় পুলিশ। ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই অভিযুক্ত তিন যুবককে। তবে তদন্ত এখনও চলছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। ঠিক কী উদ্দেশ্য নিয়ে ওই তিন যুবক এই কাজ করেছে সেই খোঁজও চলছে। অশান্তির পরিবেশ তৈরি না হলেও, এই ঘটনাকে সামনে রেখে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই। তবে নতুন করে কোনও অশান্তির পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়, সেদিকেও কড়া নজর রাখছে পুলিশ।