কোনও অপরাধের দায়ে ঠাঁই হয়েছে জেলে। কিন্তু সেই অপরাধীর যদি বই পড়ার অভ্যাস থাকে, তাহলেই নাকি সাত খুন মাফ! কোথায় রয়েছে এমন আশ্চর্য নিয়ম? শুনে নেওয়া যাক।
বই পড়ার উপকার নিয়ে নতুন করে তো কিছু বলার নেই। কিন্তু বই পড়ার দৌলতে যে কেউ জেল থেকে ছাড়া পেতে পারেন, এমন উপকারিতার কথাও কি শুনেছেন? শুনতে আশ্চর্য লাগলেও সত্যি। এমনই কানুন রয়েছে কোনও কোনও জেলে, যেখানে বই পড়লেই হতে পারে সাজা মকুব।
ব্যাপারটা ঠিক কী?
আরও শুনুন:
স্ত্রীর জন্মদিন ভুলে গেলেই হতে পারে হাজতবাস! কোথায় এমন নিয়ম রয়েছে জানেন?
আসলে দক্ষিণ আমেরিকায় এমনই কিছু কারাগার রয়েছে, যেখানে সত্যি সত্যিই এই নিয়ম চালু। এর মধ্যে রয়েছে ব্রাজিলের ‘কাসা দে কাস্তোদিয়া দে পিরাকোয়ারা’ সহ আরও তিনটি ফেডারেল প্রিজন। দেশটির সবচেয়ে ভয়ংকর অপরাধী যারা, তাদেরই এইসব জেলে বন্দি রাখা হয়। কেউ খুনের দায়ে দোষী, কেউ আবার ধর্ষণের অভিযোগে বন্দি, কেউ আবার কোনও বড়
ডাকাতি-লুটপাটের চক্রী। দক্ষিণ আমেরিকায় এমনিতেও অপরাধের হার আশঙ্কা জাগানোর মতো। ফলে জেলগুলিতে অপরাধীর সংখ্যাও কম নয়। কাসা দে কাস্তোদিয়াতে যেমন প্রায় হাজার সাতেক বন্দি রয়েছে। আর এইসব জেলেই ‘রিডেম্পশন থ্রু রিডিং’ অর্থাৎ বই পড়ার মাধ্যমে মুক্তি নামে একটি অভিনব প্রকল্প চালু করেছে ব্রাজিল সরকার।
এই প্রকল্প অনুযায়ী, বছরে একজন বন্দি মোট ১২টি বই পড়তে পারেন। অর্থাৎ প্রতিটি বই পড়ার জন্য বরাদ্দ সময় এক মাস। বই পড়লেই শুধু হবে না, বইয়ের একটি সমালোচনা লিখেও জমা দিতে হয় তাদের। সেখানে বইয়ের বিষয় থেকে শুরু করে ভালো বা খারাপ লাগার কারণ, সবকিছু নিয়েই আলাপ আলোচনা থাকে। লেখায় কোনও ভুল থাকলে কিংবা অপরিচ্ছন্ন হলে কাটা যায় নম্বর। এই লেখাপড়ার ভিত্তিতেই একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল সিদ্ধান্ত নেয়, কোন বন্দির সাজা মকুব হতে পারে। বই প্রতি ৪ দিন, আর বছরে সর্বাধিক ৪৮ দিন কমে বন্দির শাস্তির মেয়াদ।
আরও শুনুন:
‘কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ’, ইংরেজদের এই অপমানের বদলা নিতেই জন্ম তাজ হোটেলের
এমনিতে ভালো আচরণ কিংবা ভালো কাজের দরুন কখনও কখনও শাস্তির মেয়াদ কমে জেলে। কিন্তু সেই ভালো কাজের তালিকায় বই পড়াকেও জুড়ে দিয়ে একইসঙ্গে দুটি বিষয়ে জোর দিয়েছে ব্রাজিল সরকার। একদিকে বন্দিদের খানিক সুবিধা দেওয়া যেমন এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য, তেমনই এর ফলে অপরাধীদের মধ্যে পড়াশোনার অভ্যাসটিও বেশি করে চারিয়ে দিতে চান কর্তৃপক্ষ। অপরাধপ্রবণতা কমানোর উদ্দেশ্যেই কারাগারগুলিতে এহেন উদ্যোগ শুরু করেছে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশ।