রামের পায়ে ফুল দেওয়া অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। এমনটা কোনও হিন্দু রামভক্ত নয়, বলছেন এক মুসলিম ব্যবসায়ী। তাঁর পাঠানো ফুলেই সাজানো হয় অযোধ্যার অধিকাংশ হিন্দুমন্দির। এবার রামমন্দিরেও ফুল পাঠানোর দায়িত্ব পেলেন তিনিই। কার কথা বলছি? আসুন শুনে নিই।
রাম মন্দিরে মুছবে ধর্মীয় ভেদাভেদ। এমনটা আগেই স্পষ্ট করেছিল মন্দির কর্তৃপক্ষ। এবার জানা গেল, রাম মন্দির সাজানোও হবে এক মুসলিম বিক্রেতার পাঠানো ফুলে। শুধু রাম মন্দির নয়, অযোধ্যার অন্যান্য হিন্দু মন্দিরও সাজানো হবে ওই মুসলিম বিক্রেতার পাঠানো ফুলেই।
আরও শুনুন: রামচরিত: কৃত্তিবাস থেকে সুকুমার, বহু ধারায় খরস্রোতা বাংলায় রামায়ণ চর্চা
দীর্ঘ আন্দোলনের পর মিলেছিল, অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির গড়ার অনুমতি। সেই মন্দিরের উদ্বোধন এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। জানুয়ারির ২২ তারিখ উৎসবের মাহেন্দ্রক্ষণ ঠিক হয়েছে। ওইদিনেই মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠিত হবেন রামলালা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একইসঙ্গে থাকবেন দেশ বিদেশের গণ্যমান্য অতিথিরা। আর এই নিয়ে গোটা দেশ জুড়েই যেন উৎসবের আমেজ।
বিশেষভাবে সেজে উঠছে অযোধ্যা নগরী। ইতিমধ্যেই সেখানে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। নতুন এয়াপোর্টও পেয়েছে রামনগরী অযোধ্যা। সেইসঙ্গে নতুন ট্রেন, রাস্তা, একাধিক ভাষ্কর্য আরও কত কি! তবে মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠান মানে, ফুল থাকা আবশ্যক। অযোধ্যার মন্দিরেও তার ব্যতিক্রম হবে না। জানা গিয়েছে, রাম মন্দির সহ শহরের প্রায় সমস্ত মন্দিরই এদিন বিশেষভাবে ফুল দিয়ে সাজানো হবে। যার জন্য দরকার হবে যথেষ্ট পরিমাণ ফুলের যোগান। তবে মহম্মদ আনিস থাকতে সে নিয়ে কোনও চিন্তা নেই। ঠিক ধরেছেন, এই মুসলিম বিক্রেতার কথাই বলছি।
আরও শুনুন: রামচরিত: বাংলার আছে নিজস্ব ‘অযোধ্যা’, এখনও বইছে ক্ষীণস্রোতা ‘সরযূ’
রাম মন্দির সহ অযোধ্যার বিভিন্ন মন্দির ফুল দিয়ে সাজানোর বরাত পেয়েছেন আনিস। যদিও তাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমেই বলতে হয়, তাঁর ব্যবসার কথা। প্রায় পাঁচ পুরুষ ধরে আনিসরা অযোধ্যায় ফুলের ব্যবসা করছেন। যার বেশিরভাগটাই যায় শহরের বিভিন্ন হিন্দু মন্দিরে। তালিকা, বিখ্যাত হনুমান গড়ি মন্দিরও রয়েছে। এইসমস্ত মন্দিরেই আনিস ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা যত্ন সহকারে ফুল পাঠান। আর সেই ফুলেই পুজো হয় আরাধ্যের। এবার রাম মন্দিরেও ফুল পাঠাবেন আনিস। জানা গিয়েছে, মন্দির উদ্বোধনের দিন যেসব ফুল বিক্রেতা রাম মন্দির সাজানোর দায়িত্ব পেয়েছেন,আনিস তার অন্যতম। এই নিয়ে বেজায় খুশি তিনি নিজেও। তাঁর কথায়, রামের পায়ে ফুল দেওয়া অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। একইসঙ্গে আনিসের দাবি, গোটা অযোধ্যা নগরীতেই সেই অর্থে হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ নেই। তাই এই ঘটনা একেবারেই স্বাভাবিক। তবে এই প্রথম নয়, রাম মন্দিরকে সামনে রেখে আগেও সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। দেশ বিদেশে একাধিক মুসলিম অতিথি মন্দির উদ্বোধনে ডাক পেয়েছেন। এবার মুসলিম বিক্রেতার পাঠানো ফুলে রামলালাকে সাজানোর ঘটনা সেই সম্প্রীতির বার্তাই আরও স্পষ্ট করল।