রাম মন্দিরের উদ্বোধন ‘শাস্ত্রসম্মত’ নয়। এই দাবিতে ২২ তারিখ অযোধ্যায় আসছেন না দেশের শঙ্করাচার্যরা। তাঁদের যুক্তিকে এবার ঢাল করল কংগ্রেসও। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ার কারণ হিসেবে, হাত শিবিরের তরফেও টানা হল সেই শাস্ত্রের প্রসঙ্গই। ঠিক কী বলছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব? আসুন শুনে নিই।
রাম মন্দিরের উদ্বোধনে থাকছেন না কংগ্রেস নেতৃত্ব। আমন্ত্রণ পয়েও ফিরিয়ে দিয়েছেন হাত শিবিরের অধিকাংশ নেতা। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। বিজেপির তরফে ধেয়ে এসেছে বিভিন্ন কটাক্ষ। এমনকি ‘রাম-বিরোধী’ তকমা জুটেছে কংগ্রেস নেতাদের কপালে। এরই পালটা জবাবে শঙ্করাচার্যদের যুক্তি সামনে আনলেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ।
আরও শুনুন: অসম্পূর্ণ মন্দিরের উদ্বোধন ‘শাস্ত্রবিরুদ্ধ’, অযোধ্যায় আসছেন না আরও এক শঙ্করাচার্য
লোকসভা ভোটের আগে উদ্বোধন হচ্ছে রাম মন্দির। জানুয়ারির ২২ তারিখ রাজকীয় অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকবে দেশবাসী। জেলবন্দী থেকে আরম্ভ করে সাধারণ মানুষ, সকলেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার দেখবেন। অযোধ্যায় উপস্থিত থাকবেন ৭ হাজারেরও বেশি অতিথি। সেই তালিকাতেও, ভিখারি থেকে শুরু করে অন্যান্য দেশের গণ্যমান্য অতিথিরা রয়েছেন। উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মোদিও। তবে এই অনুষ্ঠান নিয়ে সকলেই যে সমানভাবে উচ্ছ্বসিত তা নয়। বরং কেউ কেউ এই উদ্বোধনের বেশ বিরোধিতাই করেছেন। তালিকায় রয়েছেন শঙ্করাচার্যরাও। পুরী এবং উত্তরাখন্ডের দুই মঠের কর্ণধার ঘোষণা করে দিয়েছেন রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁরা কোনওভাবেই থাকতে পারবেন না। কারণ হিসেবে শাস্ত্রে প্রসঙ্গ টেনেছেন তাঁরা। উত্তরাখন্ডের শঙ্করাচার্যের দাবি ছিল, অসম্পূর্ণ মন্দিরের উদ্বোধন শাস্ত্রবিরুদ্ধ। আবার পুরীর শঙ্করাচার্য মন্দির উদ্বোধনের সঙ্গে রাজনীতির যোগ টেনে বিরক্তি প্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, রাম মন্দিরে পর্যটকদের জন্য নানা বিলাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যা একেবারেই ঠিক নয়। সনাতন ধর্মের জায়গায় যেভাবে করিডর বানানো হচ্ছে, সেই পদক্ষেপেরও সমালোচনা করেন তিনি। পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডের শঙ্করাচার্য অবিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী বলেন, কোনও শঙ্করাচার্যই মন্দিরের উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন না। প্রায় একইসময় রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাই দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে শঙ্করাচার্যের যুক্তি মিলিয়েছেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ।
আরও শুনুন: রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠায় ‘ব্রাত্য’! অযোধ্যায় ‘অভিমানী’ দুর্গা বাহিনী, সংঘের মহিলা সদস্যরাও
তাঁরও দাবি, রামমন্দির নির্মাণ এখনও শেষ হয়নি। ভোটের কথা ভেবে তার আগেই মন্দির উদ্বোধন করা হচ্ছে। সুতরাং, বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারের এই পদক্ষেপ হিন্দুদের ধর্মীয় রীতির বিরোধী। সে কারণেই শঙ্করাচার্যরা ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। এরপরই তাঁর প্রশ্ন, তাহলে কংগ্রেস কীভাবে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবে? অর্থাৎ, শাস্ত্রসম্মত নয় বলেই এই অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছে না কংগ্রেস এমনটাই দাবি দিগ্বিজয় সিংহের। সব মিলিয়ে রাম মন্দিরকে সামনে রেখে আবারও বিতর্কে জড়িয়েছে হাত শিবির। বিভিন্ন পুরনো প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। এবার শঙ্করাচার্যের যুক্তি টেনে সেই বিতর্ক সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেন হাত শিবিরের নেতা।