বয়স ৫৫। তাতে কী! অভিনয় ও মডেলিং, দুদিকেই তাঁর অবাধ আনাগোনা এখনও। শুধু তাই নয়, এই বয়সেই ‘মিসেস ইন্ডিয়া’ খেতাব জিতে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মহিলা। কার কথা বলছি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শ্রীদেবী-র ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ সিনেমার কথা মনে আছে? একজন একা মহিলার লড়াই। কারও বিরুদ্ধে নয়। নিজের সঙ্গে। আসলে বয়স যত বাড়ে, সমাজের বাঁধা পথে চলতে চলতে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন অনেক নারীই। সেখান থেকে কীভাবে নিজেকে ভালোবেসে ফেলা যায় ফের, সেই গল্পই দেখানো হয়েছিল সিনেমায়। আর সেই নিজেকে খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে বয়স যে কোনও বাধাই নয়, সে কথাই স্পষ্ট করে বলেছিল এই সিনেমা। কিন্তু বাস্তবে, এমনটা আদৌ হয়? অবশ্যই হয়। জম্মুর রূপিকা গ্রোভরকে দেখলেই সে প্রমাণ মিলবে। তিনিও ছক ভেঙেছেন। তবে একটু অন্যরকম ভাবে।
আরও শুনুন: যোগব্যায়াম ইসলামবিরোধী! ভারতকে ‘জব্দ’ করতে ব্যায়ামের অনুষ্ঠানে তাণ্ডব মলদ্বীপে
বছর ৫৫-র রূপিকা পেশায় একজন মডেল। অভিনেত্রীও বটে। কাজ করেছেন নামীদামি অভিনেতাদের সঙ্গে। সে তালিকায় রয়েছেন অমিতাভ বচ্চন, রণবীর সিং-এর মতো একাধিক তারকা। সেই রূপিকাই সম্প্রতি জিতেছেন ‘মিসেস ইন্ডিয়া: ওয়ান ইন আ মিলিয়ন’ খেতাব। জনপ্রিয় এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতাটি মূলত বিবাহিত মহিলাদের জন্যই। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মহিলারা এতে অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে মডেল কিংবা অভিনেত্রীরাও থাকেন। তবে বেশিরভাগেরই বয়স তিরিশের ঘরে। পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে কেউ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা ভাবছেন, এমনটা যেন ভাবাই যায় না। কিন্তু রূপিকা ৫৫ বছর বছর বয়সেই এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি জিতেওছেন সেরার সেরা খেতাব। আয়োজক সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, তিনিই সবথেকে বেশি বয়সের প্রতিযোগী হিসেবে এই খেতাব জিতলেন। স্বাভাবিকভাবেই, জয়ের আনন্দে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত রূপিকা।
আরও শুনুন: অসম্পূর্ণ মন্দিরের উদ্বোধন ‘শাস্ত্রবিরুদ্ধ’, অযোধ্যায় আসছেন না আরও এক শঙ্করাচার্য
তবে প্রতিযোগিতায় জিতে তিনি স্রেফ একটা মেডেল বা পুরস্কার জিতেছেন তা নয়। বরং তাঁর এই জয় সমাজে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরি করল বলেই মনে করছেন রূপিকা। বরাবরই চেনা ছকের বাইরে হাঁটতে পছন্দ করেন তিনি। যে বয়সে পৌঁছে অনেক মহিলাই নিজেদের বোকাবাক্স আর রান্নাঘরে বন্দি করে ফেলেন, সেই বয়সে জাতীয় মঞ্চে এমন সম্মান পাওয়া মোটেও মুখের কথা নয়। এখানেই রূপিকার আসল জয়। তাঁর মতো সকলেই নিজেকের ভালোবাসতে শিখুন, এমনটাই চেয়েছেন বছর ৫৫-র এই অভিনেত্রী। তিনি প্রমাণ করেছেন, বয়স কারও সৌন্দর্যের মাপকাঠি হতে পারে না। শুধু সৌন্দর্য বললে ভুল হবে। কোনও কাজই বয়সের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট হতে পারে না। যার যখন ইচ্ছা, যে বয়সে ইচ্ছা নতুন কিছু শিখতে পারেন। জীবনটাকে উপভোগ করতে পারেন নিজের মতো করে। ইচ্ছা থাকলেও যা অনেকেই করে উঠতে পারেন না, সমাজ, সংসার কিংবা নিজের চাপে। রূপিকা চেয়েছেন এই সব কিছু ভেঙে বেরিয়ে আসুন মহিলারা। তাঁরা নিজেদের চিনতে শিখুন। তাহলেই সমাজ এগোবে। সিনেমায় নয়, বাস্তবেই তৈরি হবে আরও অনেক ছক ভাঙার গল্প।
View this post on Instagram