অসম্পূর্ণ মন্দিরের উদ্বোধন শাস্ত্রবিরুদ্ধ। এই যুক্তিতে রাম মন্দিরের উদ্বোধনি অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেন আরও এক শঙ্করাচার্য। সম্প্রতি, একইভাবে এই অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী। এবার সেই পথে হাঁটলেন কোন ধর্মগুরু? আসুন শুনে নিই।
রাম মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে অযোধ্যায় সাজো সাজো রব। ইতিমধ্যেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণ পত্র পেয়েছেন দেশ-বিদেশের গণ্যমান্য অতিথিরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাধু-সন্তদের উপস্থিতিতে মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠিত হবেন রামলালা। তবে সেই অনুষ্ঠানে থাকবেন না দুই শঙ্করাচার্য।
আরও শুনুন: রাম মন্দির উদ্বোধনের নিরাপত্তায় বড় ভূমিকা রিকশা চালকদেরও, কীভাবে জানেন?
কিছুদিন আগে রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী। এবার সেই পথে হাঁটলেন উত্তরাখন্ডের শঙ্করাচার্য অবিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতীও। নিশ্চলানন্দ কারণ হিসেবে জানিয়েছিলেন, রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা শাস্ত্র অনুসারে হওয়া উচিত। আসলে, প্রধানমন্ত্রীর হাতে রামলালার মূর্তি উদ্বোধনের প্রসঙ্গেই এমনটা বলেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর সাফ যুক্তি ছিল, সমস্ত ধর্মস্থানগুলিকে এখন পর্যটনক্ষেত্র বানিয়ে তোলা হচ্ছে। পর্যটকদের জন্য নানা বিলাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যা একেবারেই ঠিক নয়। সনাতন ধর্মের জায়গায় যেভাবে করিডর বানানো হচ্ছে, সেই পদক্ষেপেরও সমালোচনা করেছেন তিনি। একই রকম সমালোচনা ছুড়ে দিয়েছেন রাম মন্দির প্রসঙ্গেও। দ্বিধাহীন ভাবে তিনি জানিয়েছেন, রাম মন্দির নিয়ে যেরকম রাজনীতি করা হচ্ছে তা একেবারেই কাম্য নয়। খানিকটা সেই শাস্ত্রের যুক্তি দেখিয়েই রাম মন্দিরের উদ্বোধনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অবিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। উত্তরাখণ্ডের জ্যোতির মঠের কর্ণধার এই শঙ্করাচার্যের দাবি, অসম্পূর্ণ মন্দিরে এই ধরনের পুজোপাঠ শাস্ত্রসম্মত নয়। তিনি সাফ জানিয়েছেন, এই অবস্থায় মন্দির উদ্বোধনও শাস্ত্রবিরুদ্ধ। তাই কোনওভাবেই এই কাজ তিনি সমর্থন করতে পারবেন না।
আরও শুনুন: রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠায় ‘ব্রাত্য’! অযোধ্যায় ‘অভিমানী’ দুর্গা বাহিনী, সংঘের মহিলা সদস্যরাও
তবে রাম মন্দিরে না যাওয়া, মানেই প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরোধিতা করা নয়। নিজের বক্তব্যে সেটিও স্পষ্ট করেছেন অবিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। তাঁর কথায়, শাস্ত্রসম্মত নয় বলেই এই অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দিচ্ছেন না। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিরোধিতার কোনও সম্পর্ক নেই। পুরী, উত্তরাখণ্ড ছাড়াও আরও দুই শঙ্করাচার্য রয়েছেন গুজরাটের দ্বারকা এবং কর্ণাটকে। শোনা গিয়েছিল, দেশের ৪ শঙ্করাচার্যই রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন। তবে নিশ্চলানন্দ এবং অবিমুক্তেশ্বরানন্দ ছাড়া বাকি দুই শংকরাচার্য এমন কোনও ঘোষণা করেননি। বরং তাঁরাও রাম মন্দিরে উদ্বোধনের নিমন্ত্রণ পেয়েছেন বলেই জানিয়েছেন। এবার রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁরা উপস্থিত থাকেন কিনা তা জানা, সময়ের অপেক্ষা। আপাতত, এটুকুই জানা যাচ্ছে, অযোধ্যার বিরাট কর্মযজ্ঞ পুরী এবং উত্তরাখন্ডের দুই শংকরাচার্যকে ছাড়াই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।