রামলালার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছিলেন তাঁরাও। রামের মন্দির দেশের গর্ব হয়ে উঠুক, এ তো তাঁদেরও ইচ্ছে ছিল। তবে, সেই মুহূর্ত যখন এসেই গেল, তখন তাঁদের যে ঠিক কী ভূমিকা, তা ভেবেই পাচ্ছেন না দুর্গা বাহিনীর মহিলা সদস্যরা। একটু যেন ক্ষোভই তাই জমে উঠেছে তাঁদের মনে। কী বলছেন তাঁরা? আসুন শুনে নিই।
এত বড় রাম মন্দিরের উদ্বোধন। বিপুল আয়োজন। মহা সমারোহ। আর সেখানে তাঁদের কী করতে হবে? এ ব্যাপারে অনেকদিন পর্যন্ত কিছু জানতেনই না দুর্গা বাহিনীর সদস্যরা। শেষমেশ অবশ্য একটা কাজ বরাদ্দ হয়েছে তাঁদের জন্য। রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিনে কী করতে হবে আর কী করতে হবে না, তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে আসা। কিন্তু মাত্র এইটুকু? হ্যাঁ এইটুকুই তাঁদের কাজ। তবে, সেদিন তাঁরা নিজেরা কী করবেন, তা বুঝে উঠতেই পারছেন না।
আরও শুনুন: ৩০ বছর মুখে কথা নেই, রাম মন্দির উদ্বোধন হলে তবে মুখ খুলবেন মহিলা
একটু যেন তাই অভিমানই জমে উঠেছে দুর্গা বাহিনীর মহিলা সদস্যদের মনে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তাঁদের কাজ দিয়েছে বটে। তবে, এই কাজ-ই কি প্রাপ্য ছিল তাঁদের? প্রশ্ন বাহিনীর প্রেসিডেন্ট বর্তিকা বসুর। তাঁরা বলছেন, নয়ের দশকে যখন রাম-জন্মভূমি আন্দোলন চলছে, তখন তো এরকম পরিস্থিতি ছিল না। মহিলারাও এই আন্দোলনের মুখ হিসাবে সামনেই ছিলেন। এমনকী এর জন্য তাঁরা যথেচ্ছ কষ্টও সহ্য করেছেন। তাহলে, এখন মাত্র এইটুকু কাজ দিয়ে সরিয়ে রাখা হল কেন? প্রশ্ন আছে, উত্তর নেই দুর্গা বাহিনীর কাছে। অযোধ্যায় তাঁদের নিজস্ব কোনও অফিসও নেই। অন্য একটি মন্দিরকে অফিস করেই আপাতত কাজ চালাবেন বলে মনস্থ করেছেন।
একই অভিমান রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মহিলা শাখা রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতি-র সদস্যাদেরও। তাঁরাও মনে করছেন যে, এতদিন পর যখন মন্দির বাস্তব হয়ে উঠল, তখন যেন তাঁদের দূরে দূরেই সরিয়ে রাখা হচ্ছে।
আরও শুনুন: ‘মুসলিমরাও রামেরই উত্তরসূরি’, সমন্বয়ের বার্তা দিতেই রামজ্যোতি নিয়ে পথে নামছেন দুই মুসলিম তরুণী
দুই সংগঠনেরই মহিলা সদস্যদের আক্ষেপ, তাঁরা কাজ করতে চাইলেও সেভাবে তাঁদের কাজ দেওয়া হচ্ছে না। সব কাজ পুরুষদেরই দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে মন্দির কমিটির বক্তব্য, মহিলারা চমৎকার কথা বলতে পারেন। অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তাই তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রদীপ জ্বালানোর কথাটি বলতে বলা হয়েছে। তবে, পুরুষরা যে গুরুত্ব পাচ্ছেন, মহিলারা যে তা থেকে অনেক দূরে, তা কার্যত স্পষ্ট। ভগবান রামের অভিষেকের লগ্নে তবে কি খানিক ব্রাত্যই থেকে গেলেন মহিলারা? দুর্গা বাহিনীর সদস্যদের আক্ষেপে লেগে থাকল সে প্রশ্নই।