রাম মন্দিরের নির্মাণ ঘিরে যেমন অধীর আগ্রহ ছিল ছিল ভক্তদের, স্বাভাবিকভাবেই মন্দির প্রতিষ্ঠা ঘিরেও তেমনই সাজো সাজো রব। আর সেই আবহেই করসেবার স্মৃতি ফেরাতে তৎপর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। রাম মন্দির আন্দোলনের সঙ্গে যে কর্মসূচি জড়িয়ে ছিল অঙ্গাঙ্গিভাবেই। কী এই করসেবা? শুনে নেওয়া যাক।
দীর্ঘ বিতর্ক, আইনি বিবাদ পেরিয়ে ভক্তদের জন্য খুলে যাচ্ছে রাম মন্দিরের দরজা। রামজন্মভূমিতে রামলালার প্রতিষ্ঠা ঘিরে উন্মাদনার জোয়ার সারা দেশে। এবার করসেবকদেরও এই অনুষ্ঠানের শরিক করে নিতে তৎপর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। রাম মন্দির উদ্বোধনের প্রাক্কালে নয়া কর্মসূচি নিল পরিষদ। আর সেই সূত্রেই ফিরে এল করসেবকদের অবদানের কথাও।
আরও শুনুন: ‘মুসলিমরাও রামেরই উত্তরসূরি’, সমন্বয়ের বার্তা দিতেই রামজ্যোতি নিয়ে পথে নামছেন দুই মুসলিম তরুণী
বস্তুত অযোধ্যার রামমন্দির আন্দোলনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জুড়ে রয়েছে করসেবার প্রসঙ্গ। করসেবা যাঁরা করেন, তাঁরাই করসেবক। কিন্তু কী এই করসেবা? বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্যাখ্যা বলে, নিজের করে অর্থাৎ হাতে যাঁরা মন্দির তৈরির জন্য সেবা দান করবেন, তাঁরাই হলেন করসেবক। ১৯৯০ সালে পরিষদের আন্তর্জাতিক সভাপতি অশোক সিংঘলের নেতৃত্বে হয়েছিল করসেবা আন্দোলন। রামরথ যাত্রার মধ্য দিয়ে যে আন্দোলনকে বিরাট মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। প্রথম করসেবা কর্মসূচি হয়েছিল ১৯৯০ সালের ২১ অক্টোবর। এরপর সেই বছরেরই ৩০ অক্টোবর অযোধ্যামুখী হন বিপুলসংখ্যক করসেবক। এই যাত্রায় শামিল ছিলেন বাংলার করসেবকেরাও। যাত্রাপথেই অনেককে গ্রেপ্তার করে তখনকার মুলায়ম সিং যাদব সরকারের অধীন উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। গ্রেপ্তার হন আডবাণী নিজেও। দু-পক্ষের দ্বৈরথে গুলি চালায় পুলিশ, মৃত্যু হয় কলকাতার দুই যুবকের।
আরও শুনুন: বাবা বাবরির পক্ষে, ছেলের সমর্থন মোদিকেই, রাম মন্দিরের উদ্বোধনে ডাক সেই ইকবাল আনসারির
সেই স্মৃতি ফিরিয়েই এবার মন্দির প্রতিষ্ঠার পর ৪২ দিন ব্যাপী বড় কর্মসূচি ঘোষণা করল গেরুয়া শিবির। যে করসেবকেরা অতীতে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন, তাঁদের সপরিবারে অযোধ্যা নিয়ে গিয়ে নতুন মন্দির দেখানোর দায়িত্ব নিয়েছে পরিষদ। যাঁরা বেঁচে নেই, তাঁদের উত্তরসূরিরাও শামিল হতে পারবেন এই যাত্রায়। এই লক্ষ্যেই প্রায় চারশো বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করতে পারে রেল মন্ত্রক। ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে মন্দির উদ্বোধনের পরের ৪২ দিন ধরে চলবে এই কর্মসূচি। সব মিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে রাম মন্দিরকে সামনে রেখেই ফের বড় কর্মসূচি নিল গেরুয়া শিবির।