প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে রামলালার। সেই উপলক্ষে বহু সাধু-সন্তের সমাগম হবে অয্যোধ্যায়। অথচ এই উৎসবে শামিল হতে নারাজ পুরীর গোবর্ধন পীঠের বর্তমান শংকরাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী। কেন তাঁর আপত্তি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
২২ জানুয়ারি অযোধ্যার মন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা। যেখানে প্রধান অতিথি তথা মধ্যমণি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তাঁর হাতেই হবে প্রাণপ্রতিষ্ঠার উৎসব। সারা দেশ থেকে বহু সাধু-সন্তই এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু অয্যোধ্যা যেতে নারাজ স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী। প্রভু রামকে নিয়ে এই যে উদযাপন, তাতে তাঁর আপত্তি নেই। তবে অন্য কয়েকটি বিষয়ে তাঁর নির্দিষ্ট মতামত আছে। আর তাতেই বোঝা যাচ্ছে, কেন তিনি অয্যোধ্যা যেতে চান না।
-: আরও শুনুন :-
হু হু বিক্রি সোনা-রুপোর কয়েনে খোদাই রাম মন্দিরের! ৮০০ কোটির বাণিজ্য যোগীরাজ্যের ব্যবসায়ীদের
এমন নয় যে, এই অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাঁর কাছেও পৌঁছেছে আমন্ত্রণপত্র। যেখানে উল্লেখ আছে, তিনি যদি উৎসবে আসতে চান তাহলে সঙ্গে আর একজনকেও নিয়ে আসতে পারেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, এই চিঠিটুকুই মাত্র তাঁর কাছে এসেছে। আর কোনও রকম যোগাযোগ করা হয়নি। তবে তাঁর সাফ কথা, যদি একশো জনকেও সঙ্গে নিয়ে যেতে বলা হত, তাহলেও তিনি যেতেন না। কেন? ওই সাক্ষাৎকারেই তিনি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী মূর্তি উদ্বোধন করবেন। মূর্তি স্পর্শ করবেন। আমি কি সেই সময় ওখানে বসে হাততালি দেব আর জয়ধ্বনি করব! আমার পদেরও তো মর্যাদা আছে।” তাঁর স্পষ্ট মত, রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা শাস্ত্র অনুসারে হওয়া উচিত। তাই তাঁর পালটা প্রশ্ন, এরকম অনুষ্ঠানে তিনি গিয়ে কী করবেন? রাম মন্দিরের উদ্বোধনের আয়োজনে তবে কি শাস্ত্র লঙ্ঘিত হওয়ারই ইঙ্গিত দিলেন শংকরাচার্য? তাঁর এই মন্তব্যের পর স্বাভাবিক ভাবেই এই প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়েছে।
-: আরও শুনুন :-
‘মুসলিম বলে রামের ভজনা করব না!’ সম্প্রীতির আলো ছড়িয়ে হেঁটেই রাম মন্দির যাচ্ছেন শবনম
পাশাপাশি আরও একটি বিষয়ে তিনি যে অখুশি তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাঁর সাফ কথা, সমস্ত ধর্মস্থানগুলিকে এখন পর্যটনক্ষেত্র বানিয়ে তোলা হচ্ছে। পর্যটকদের জন্য নানা বিলাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যা একেবারেই ঠিক নয়। সনাতন ধর্মের জায়গায় যেভাবে করিডর বানানো হচ্ছে, সেই পদক্ষেপেরও সমালোচনা করেছেন তিনি। একই রকম সমালোচনা ছুড়ে দিয়েছেন রাম মন্দির প্রসঙ্গেও। দ্বিধাহীন ভাবে তিনি জানিয়েছেন, রাম মন্দির নিয়ে যেরকম রাজনীতি করা হচ্ছে তা একেবারেই কাম্য নয়।
স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী বিশ্বাস করেন, বর্তমানে যিনি যে ধর্মামবলম্বীই হোন না কেন, অতীতে সকলেই সনাতন হিন্দু ধর্মেরই অংশ ছিলেন। তবে, সাম্প্রতিক রাম মন্দির, তার উদ্বোধন অনুষ্ঠান, এবং যেভাবে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হচ্ছে, তা নিয়ে তাঁর যে বেশ আপত্তি আছে, তা তিনি গোপন করেননি। বরং খোলাখুলিই জানিয়েছেন সে কথা। বুঝিয়ে দিয়েছেন, কেন তিনি অয্যোধ্যা যেতে নারাজ।