দূর থেকে দেখলেন লাল লিপস্টিক রাঙা দুই ঠোঁট। আশেপাসে আর কিছু অবশ্য ছিল না। ঠোঁটের মালকিনকে জানতে, সামনে এগিয়ে এলেন। কিন্তু একি! কোথায় কে? তরুণী দূর, কোনও মানুষই নেই আশেপাশে। বরং রয়েছে সবুজ পাতা। তাহলে ওই ‘ঠোঁট’ আসলে কী? আসুন শুনে নিই।
ছিল বিড়াল হয়ে গেল রুমাল…এক্ষেত্রেও ঠিক এই কথা মনে আসতে পারে। তবে ঠিক বিড়াল বা রুমাল নয়। এখানে টকটকে লাল ঠোঁট হয়ে যেতে পারে একটা ফুল। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। কথা বলছি, এমন এক ফুল সম্পর্কে যা দেখতে হুবহু লাল ঠোঁটের মতো। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, এই বুঝি ঠোঁটের মালকিন চুমু খেতে জন্য ডাকছেন।
আরও শুনুন: রয়েছে পাখির মতোই ঠোঁট আর লেজ, কোথায় দেখা মেলে এমন আজব ফুলের?
ছদ্মবেশ ধরতে জানে ফুলও। হ্যাঁ, তা ছাড়া আর কী বলবেন একে! প্রকৃতির নানা অজানা অচেনা আশ্চর্যের মধ্যে অবশ্যই একে রাখতে হয়। স্রেফ ঠোঁটের মতো আকারই নয়, এই ফুলের মতো এমন উজ্জ্বল লাল রং খুব কম জায়গাতেই চোখে পড়ে। বিজ্ঞানসম্মত নাম সাইকোট্রিয়া ইলাটা। স্থানীয়রা অবশ্য একে হট লিপ প্ল্যান্ট বলেই চেনেন। তবে এর ঠিকানা আমাদের দেশে নয়। সুদূর কলম্বিয়া, কোস্টরিকা কিংবা পানামা অঞ্চলে এই ফুল চোখে পড়তে পারে। তাও সারা বছর ফোটে না। স্রেফ শীতকালে, মানে ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাসের মধ্যেই এই ফুল দেখা যায়। আমেরিকায় একে কিসিং ফ্লাওয়ারও বলা হয়। বলাই বাহুল্য, ঠিক যেরকম সুন্দর ঠোঁটের স্বপ্ন দেখে অনেকে, তেমনটাই হুবহু দেখতে এই ফুল। তাই চুমুর সঙ্গে এর নাম জড়াতে বাধ্য।
আরও শুনুন: সেনাবাহিনীতে চাকরি পেল পেঙ্গুইন, মিলল ‘স্যার’ উপাধিও
আকারে বেশি বড় নয়। গন্ধও তেমন বিশেষ কিছু না। কিন্তু তাতে কি! এর উজ্জ্বল রং-ই যথেষ্ট। পাখিদের রীতিমতো আকর্ষণ করে এই ফুল। এছাড়া পোকা মাকড় কিংবা প্রজাপতি তো আছেই। মানুষও অবশ্য বাদ যায় না। চুমু খাওয়া যাবে না তো কি হয়েছে! এই ফুল সংগ্রহে রাখার জন্য কলম্বিয়ার বিভিন্ন জঙ্গলে ঘুরে বেড়ান প্রকৃতি প্রেমীরা। তালিকায় বিজ্ঞানী বা গবেষকরাও থাকেন। স্রেফ ছবি তোলার জন্যও এই সময় অনেকে ভিড় জমান। ছোট হলেও সবুজের মাঝে এই ফুল খুঁজে পাওয়া তেমন কঠিন ব্যাপার নয়। কারণ একটাই, ফুলের উজ্জ্বল রং। তবে স্রেফ ফুলের কথা বললেই হবে না। এই ফুলের পাতাও বেশ অন্যরকম। ফুলের পাশে এমনভাবেই পাতাগুলো থাকে, যাতে দূর থেকে দেখে কেউ একবারে তাকে ফুল হিসেবে চিনতে না পারে।