স্কুলের সিলেবাসেও এবার যোগ হল গীতা। সম্প্রতি এমনই ঘোষণা করেছেন গুজরাটের শিক্ষামন্ত্রী। কেন এই ভাবনা সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। সে রাজ্যে কোন কোন ক্লাসের পড়ুয়াদের পাঠ্য হিসেবে যোগ হল এই ধর্মগ্রন্থ? আসুন শুনে নিই।
ভারতীয় সংস্কৃতির সম্যক ধারণা হোক স্কুল পড়ুয়াদের। এই ভাবনাতেই এবার স্কুলের সিলেবাসে ‘গীতা’ রাখার সিদ্ধান্ত নিল গুজরাট সরকার। সম্প্রতি নতুন সিলেবাস ঘোষণাও করেছেন সে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। সেখানে আলাদা একটি বই হিসেবে রাখা হয়েছে শ্রীমদ্ভাগবত গীতা। জানা গিয়েছে, এবার থেকে সে রাজ্যের সমস্ত পড়ুয়াকে নিয়মিত পাঠ করতে হবে এই ধর্মগ্রন্থ।
আরও শুনুন: গীতা ছিল প্রিয় গ্রন্থ, মহাত্মার কাছে যে শ্লোকগুলি হয়ে উঠেছিল মহামন্ত্র
যুদ্ধক্ষেত্রে আত্মীয়দের রণসজ্জায় সজ্জিত দেখে বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন অর্জুন। সেই বিষাদ কাটানোর দায়িত্ব নেন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ। সেদিন তিনি অর্জুনকে যা বলেছিলেন, তাই-ই গীতার জ্ঞানরাশি হিসাবে মানবসমাজে প্রচারিত। অনেকেই বলে থাকেন, এ সংসারে গীতার সমতুল্য কিছু হয় না। তাই ছোট থেকেই তার পাঠ করার অভ্যাস হোক স্কুল পড়ুয়াদের, এমনটাই চাইছেন গুজরাটের শিক্ষামন্ত্রী। জানা গিয়েছে, ক্লাস সিক্স থেকে টুয়েলভ, সবাইকে পড়তে হবে গীতার নির্বাচিত অংশ। যার জন্য আলাদাভাবে সাজানো হয়েছে সিলেবাস। সম্পূর্ণ গীতার ১৮ টি অধ্যায়। বিভিন্ন পর্যায় বা ধাপ রয়েছে এই ধর্মগ্রন্থের। পড়ুয়াদের বয়স অনুযায়ী সেই অধ্যায় ভাগ করা হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, এর জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। তাঁর কথায়, মোদি যেমন গোটা দেশকে এক হওয়ার কথা বলেন। সেই কাজ সম্ভব হবে, যদি সবার মধ্যে গীতার জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়া যায়। একইসঙ্গে গীতা পড়লে ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হবে পড়ুয়াদের, এমনটাও মনে করছেন শিক্ষামন্ত্রী প্রফুল পানসেরিয়া।
আরও শুনুন: পুরুষোত্তম তত্ত্ব জানলেই বোঝা যায় ঈশ্বরের স্বরূপ, কী সেই জ্ঞান? উত্তর গীতায়
আপাতত দুটি ভাগে গীতা পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে রাজ্যের সরকার। প্রথম ভাগ পাঠ্য হবে ক্লাস সিক্স থেকে এইটের পড়ুয়াদের। নাইন থেকে টুয়েলভ পড়ানো হবে অন্যান্য অংশ। এর জন্য আলাদা বইও প্রকাশিত হয়েছে। স্কুলের সিলাবাসে যেমন সাপ্লিমেন্টরি বই থাকে, এই বইও খানিকটা তেমনই। সেখানে গীতার বিভিন্ন শ্লোক যা আসলে সংস্কৃত ভাষায় রচিত, তার গুজরাটি অনুবাদ রাখা হয়েছে। সবটাই পড়ুয়াদের সুবিধার্থে। আগামী বছর থেকে এই নতুন পাঠক্রম মানতে হবে সে রাজ্যের সমস্ত স্কুলকেই। সরকারের দাবি, গীতা পাঠের অভ্যাস পড়ুয়াদের নতুন করে ভাবতে শেখাবে। জীবন আসলে কী, বা জীবনের উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত, তার ব্যাখ্যা গীতার চাইতে ভাল আর কোথাও থাকতে পারে না। এমনটাই মনে করছে সে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রক। আর সেই ভাবনা পড়ুয়াদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এই বিশেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।