সকালে উঠতে দেরি হয়েছে। এদিকে ভাত না খেয়ে অফিস যাওয়ার উপায় নেই। অগত্যা ভরসা সেই প্রেশার কুকার। একসঙ্গে চাল, ডাল, আলু আর পরিমাণ মতো জল দিলেই কেল্লাফতে। কিন্তু এইভাবে সবকিছুই যদি প্রেশার কুকারে রান্নার অভ্যাস করেন তাহলে কিন্তু হতে পারে মারাত্মক বিপদ। কোন কোন জিনিস ভুলেও প্রেশার কুকারে রান্না করতে নেই? আসুন শুনে নিই।
রবিবার দুপুর মানেই খাসির মাংস। আর সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ বাড়ির একমাত্র ভরসা প্রেসার কুকার। ভালো করে মাংস কষিয়ে প্রেশার কুকারে কয়েকটা সিটি দিলেই কাজ শেষ। চেটেপুটে পাত সাফ হবে নিমেষে। তবে স্রেফ মাংস নয়, প্রেসারে কুকারে একাধিক পদ রান্নার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। আর এখানেই লুকিয়ে যত সমস্যা।
আরও শুনুন: Flex, Woke, Cancel Culture ঘুরছে নতুন প্রজন্মের মুখের ভাষায়, অর্থ জানেন?
ভাত, ডাল, আলু থেকে শুরু করে কেক, সবই প্রেশার কুকারে তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু প্রেশার কুকার মোটেও এই সব রান্নার জন্য তৈরি হয়নি। তাই নির্দিষ্ট কিছু জিনিস ছাড়া প্রেশার কুকার-এর ব্যবহার না করাই ভালো। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে কুকারের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনই সমস্যা হতে পারে যে ওই বিশেষ পদ খাচ্ছেন তাঁরও। তালিকায় প্রথমেই রয়েছে দুধ বা দুধের তৈরি কোনও জিনিস। এমনিতেই সামান্য আঁচে দুধ ফুটে যায়। ফলত কেউ যদি প্রেশার কুকারে দুধ দিয়ে কিছু বানানোর চেষ্টা করেন তবে তা একেবারেই সুস্বাদু হবে না। বরং অতিরিক্ত চাপে দুধের যাবতীয় খাদ্যগুণ নষ্ট হতে পারে। এমনকি রংও বদলে যেতে পারে। অনেকে গাজরের হালুয়া বানানোর জন্য প্রেশার কুকার ব্যবহার করেন। এতে বিশেষ সমস্যা নেই, তবে খেয়াল রাখতে হবে গোটা রান্নাটাই যেন প্রেশার কুকারে না করা হয়। গাজর সিদ্ধ করে নিয়ে বাকিটা অন্য কোনও পাত্রে করলে সবথেকে ভালো। এরপর বলতে হয় কেক-এর কথা। অনেকেই আভেন-এর বদলে প্রেশার কুকারে কেক তৈরি করেন। তবে এক্ষেত্রে ঠিকমতো নিয়ম না মানলে প্রেশার কুকারের ভিতরের অংশ পুড়ে যেতে পারে। আর সেই পোড়া দাগ তুলতে বেশ সমস্যায় পড়তে পারেন। তা চেষ্টা করুন প্রেশার কুকারে কেক তৈরি থেকে বিরত থাকার। এছাড়া অনেকেই সবজি ভাজার জন্য প্রেশার কুকার ব্যবহার করেন। এতেও কুকারের রীতিমতো ক্ষতি হয়। মূলত সিদ্ধ করা ছাড়া আর কোনও কিছুর জন্য কুকার ব্যবহার করা উচিত নয় বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
আরও শুনুন: এই মন্দিরে প্রণামী দেওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, কেন জানেন?
তবে সিদ্ধ মানেই যে সব কিছু তা নয়। যেসব সবজি সহজেই সিদ্ধ হয়ে যায়, তার জন্য প্রেশার কুকার ব্যবহারের কোনও প্রয়োজন নেই। এতে হিতে বিপরীত হবে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সবজিটির যাবতীয় খাদ্যগুণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া তার স্বাদও পুরোপুরি চলে যায় ওইভাবে সিদ্ধ করলে। একইভাবে ডিম সিদ্ধ করার ক্ষেত্রেও প্রেশার কুকার ব্যবহার না করাই ভালো। সময়ের হিসাব ঠিক না রাখলে, যে কোনও বিপদ হতে পারে। অতিরিক্ত চাপের দরুন প্রেসার কুকার বাস্ট করার মতো ঘটনাও ঘটে। সেইসঙ্গে ডিমও আর খাওয়ার অবস্থায় থাকে না। সাধারণ পাত্রে একটু সময় বেশি লাগলেও সেখানে ডিম সিদ্ধ হবে পুরোপুরি। তাই সময় বাঁচাতে প্রেশার কুকারে ডিম সিদ্ধ না করাই ভালো। এছাড়া পাস্তা, চাউমিন এইসবও রান্নার আগে সিদ্ধ করতে হয়। সেই কাজেও প্রেশার কুকার ব্যবহার করলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।