শীতকালে ঠাণ্ডা লাগবেই। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু তেমন ঠাণ্ডা না পড়লেও যদি আপনার সর্দিকাশি লেগেই থাকে, তাহলে অবশ্যই সমস্যার। ডক্তারের কাছে গেলে এর কারণ হিসাবে বিভিন্ন ব্যাখ্যা মিলবে। কিন্তু জানেন কি, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আপনার রাশির অবস্থান! কোন রাশির জাতকদের ঠাণ্ডা লাগার ধাত বেশি? আসুন শুনে নিই।
জ্যোতিষমতে আমাদের জীবনে যা কিছু ঘটছে, তার নেপথ্যে রয়েছে বিভিন্ন গ্রহ। জন্মের সময় কোন গ্রহ রাশিচক্রের কোথায় অবস্থান করছে, তার থেকেই ভবিষ্যৎ জীবনের আন্দাজ করা সম্ভব। যদিও এক্ষেত্রে জ্যোতিষীদের মধ্যেই মতের অমিল দেখা যায়। তবু কেউ কেউ একেবারে নির্ভুল ভাগ্যগনণা করেন, স্রেফ রাশি চক্রে গ্রহের অবস্থান দেখেই। তবে শুধুমাত্র ভাগ্যগণনা নয়, রাশি চক্রে গ্রহের অবস্থান বলে দিতে পারে শরীরের অন্দরের কথাও। এমনকি কার ঠাণ্ডা বেশি লাগবে, সে খোঁজও দিতে পারে জ্যোতিষশাস্ত্রই।
আরও শুনুন: স্মার্টফোন আসক্তিতেই যৌন ক্ষমতা হারাচ্ছে পুরুষ, কেন এমন দাবি বিশেষজ্ঞদের?
জ্যোতিষ শাস্ত্রমতে গ্রহের সংখ্যা ৯টি। আর রাশির সংখ্যা ১২। সেইসঙ্গে রয়েছে ১২টি লগ্নও। নির্দিষ্ট রাশির যেমন নির্দিষ্ট অধিপতি গ্রহ রয়েছে। তেমন লগ্নের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট অধিপতি রয়েছে। যেমন রবি, চন্দ্র, বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি এই সাতটি গ্রহই ১২টি রাশির অধিপতি। তবে লগ্ন অনুযায়ী ঠিক হয় গ্রহ শুভ না অশুভ। তাই লগ্নের ভত্তিতেই নির্বাচন শ্রেয়। যেমন, মেষ লগ্নের অধিপতি মঙ্গল, বৃষের ক্ষেত্রে শুক্র, মিথুন লগ্নের অধিপতি বুধ, কর্কট চন্দ্র, সিংহ লগ্নের অধিপতি গ্রহ রবি। আবার কন্যা লগ্নেরও অধিপতি বুধ। তুলা ও ধনু শুক্র, বৃশ্চিকের ক্ষেত্রে লগ্ন অধিপতি হলেন মঙ্গল। ধনু লগ্নের লগ্ন অধিপতি বৃহস্পতি, মকর এবং কুম্ভের ক্ষেত্রে শনি গ্রহ। আর মীন লগ্নের অধিপতি শুভ গ্রহ। জন্মের সময় মিলিয়ে তৈরি করা হয় জন্মবৃত্তান্ত। সেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে কোন রাশির উপর কোন গ্রহের অবস্থান। এমনকি এর থেকেও নির্দিষ্ট হয়, জাতকের লগ্ন, গণ কিংবা নক্ষত্র কী হবে। এবার আসা যাক ঠাণ্ডার প্রসঙ্গে।
আরও শুনুন: যে কোনও দিন নয়, কোন বারে কাদের নিরামিষ খাওয়া উচিত?
জ্যোতিষমতে সবথেকে ঠাণ্ডা গ্রহ শনি। একইসঙ্গে চন্দ্র এবং বুধকেও শীতলগ্রহ হিসেবেই গণ্য করা যায়। তবে সেক্ষেত্রে এদের সঙ্গে শনিগ্রহ থাকা আবশ্যক। সুতরাং একথা বলাই যায়, রাশিচক্রে শনিগ্রহের অবস্থান স্পষ্ট হলে সেই জাতক জাতিকার ঠাণ্ডা লাগার ধাত থাকবে। গ্রহের অবস্থান সেই অর্থে হিসাব মেনে হয় না। জন্মের সময় অনুযায়ী আলাদা হতেই থাকে। তবে সাধারণ ভাবে কয়েকটি রাশিকে নির্দিষ্ট করা যেতে পারে, যাদের শনি গ্রহের প্রভাবে ঠাণ্ডা লাগতে পারে যে কোনও সময়। তালিকায় কর্কট বৃশ্চিক এবং মীনের কথা বলা যেতে পারে। জ্যোতিষমতে এই রাশির জাতক জাতিকাদের অন্যান্য রাশির তুলনায় ঠাণ্ডা লাগার ধাত বেশি হয়। আবার কুম্ভের সঙ্গে শনির যোগ রয়েছে, সেই হিসাবে কুম্ভ রাশির জাতক জাতিকারাও একইভাবে বেশি ঠাণ্ডা অনুভব করতে পারেন শীতকালে। তবে কারও রাশিচক্রে মঙ্গলের অবস্থান স্পষ্ট হলে, কোনওভাবেই ঠাণ্ডার প্রভাব কাজ করবে না। সেক্ষেত্রে শনিগ্রহ থাকলেও ঠাণ্ডা লাগার চিন্তা নেই। কারণ জ্যোতিষমতে মঙ্গল গ্রহের প্রভাবে অতিরিক্ত গরম লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। জ্যোতিষীরা এর সমাধান হিসেবে কিছু রত্নের কথা বলে থাকেন। সঠিক পরামর্শ মেনে তা ব্যবহার করতেই পারেন। তবে ঠাণ্ডা লাগার ধাত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। রত্ন ধারণে পাকাপাকি ফল মিললেও, সাময়িক স্বস্তি পাওয়া অসম্ভব। সেক্ষেত্রে অপেক্ষা করলে আপনারই বিপদ।