মসজিদে যাওয়ার জন্য পথ নেই, তাহলে কীভাবে সেখানে গিয়ে প্রার্থনা করবেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা? সেই পথ বানানোর উদ্দেশ্যেই জমি দান করে বসেছেন এই ব্যক্তি। ধর্মপরিচয়ে যিনি নিজে মুসলিমই নন। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ নয়। বরং সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। যে সম্প্রীতি মানুষকে একে অন্যের পাশে থাকতে শেখায়, সে তাদের মধ্যে ধর্ম বর্ণ জাতপাতের যত ভেদাভেদই থাকুক না কেন। আর এবার তেমনই এক নজির গড়লেন আসামের এই ব্যক্তি। মসজিদে যাওয়ার জন্য পথ নেই বলে তার জন্য জমি দান করেছেন তিনি। অথচ আশ্চর্যের কথা হল, ধর্মপরিচয়ে কিন্তু তিনি মুসলিম নন। তিনি নিজে একজন হিন্দুই। তারপরেও অন্য ধর্মের মানুষদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে আদৌ দ্বিধা করেননি তিনি। বরং তাঁর কাছে এ ঘটনা রীতিমতো স্বাভাবিক বলেই মনে হয়েছে। কোনও প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানোই যে সবচেয়ে বড় উপাসনা, সে কথাই যেন আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন ওই সাধারণ ব্যক্তি।
আরও শুনুন: বিশ্বকাপে দুরন্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার, শামির গ্রামে স্টেডিয়াম বানানোর সিদ্ধান্ত যোগী সরকারের
ধর্ম কথার আসল অর্থ, যা ধারণ করে। কিন্তু চারপাশে চোখ রাখলে অনেকসময়ই সে কথার উলটো একরকম ছবিই ধরা পড়ে। বিশেষ করে আসামের রাজনৈতিক নেতাদের কথাতেও বহুবার সেই বিদ্বেষের ছবি উঠে এসেছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদী বক্তব্যের পাশাপাশি মুসলিমদের বিরুদ্ধে তোপ দাগতেও ছাড়েননি কেউ কেউ। এই পরিস্থিতিতে বড় ব্যতিক্রমেরই নিশান রেখেছেন এই মানুষটি। জানা গিয়েছে, আসামের বঙ্গাইগাঁও জেলার বাসিন্দা এই ব্যক্তির নাম রতিকান্ত চৌধুরী। যে জমিতে তিনি চাষ করেন, তারই এক প্রান্তে ওই মসজিদটি গড়ে তোলা হয়েছিল কিছুদিন আগে। কিন্তু সেখানে কীভাবে যাবেন মুসলিমরা? মসজিদটিতে যাওয়ার জন্য আলাদা করে কোনও পথ নেই। চাষের জমির মধ্যে দিয়েই সেখানে যেতে হয়। ফলে চাষের মরশুমে মসজিদে প্রার্থনা করতে যেতে সমস্যায় পড়তে পারেন স্থানীয় মুসলিমরা। সে কথা ভেবেই এগিয়ে আসেন ওই হিন্দু ব্যক্তি। নিজের জমির এক অংশই তিনি ছেড়ে দেন, যাতে সেখানে পথ বানানো যায়। তাঁর এহেন কাজে স্বভাবতই খুশি এলাকার মুসলিম বাসিন্দারাও। দুই সম্প্রদায়ের ভ্রাতৃত্ব এবং সম্প্রীতিকেই তুলে ধরেছে ওই ব্যক্তির এহেন সিদ্ধান্ত, এমনটাই মনে করছেন সকলে।