বিশ্বকাপের প্রতিটা ম্যাচে দুরন্ত পারফরম্যান্স। ফাইনালের আগেই ঝুলিতে ভরেছেন ২৩ টা উইকেট। শুধু দেশ নয়, বর্তমানে গোটা বিশ্বের ক্রিকেটমহল শামি-র আলোচনায় বুঁদ। এবার সেই সাফল্যের পুরস্কার পেতে চলেছে তাঁর গ্রাম। আসুন শুনে নিই।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচ। সেখানে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ৫৭ রান দিয়ে সাত-সাতটা উইকেট। এমন ম্যাজিক দেখিয়েও শামিকে তেমন উচ্ছ্বাস করতে দেখা যায়নি। কারণটা অবশ্যই বিশ্বকাপ ফাইনাল। দীর্ঘ ১২ বছর পর দল আবার ফাইনালে। তাই বিশ্বকাপ হাতে না তোলা অবধি তাঁর শান্তি নেই। তবে এই আবহে শামির কৃতিত্বের ফল পেতে চলেছে তাঁর গ্রাম।
আরও শুনুন: ঠাঁই মেলেনি ২০১১’র বিশ্বকাপে, ১২ বছর পর দেশকে জয়ের দোরগোড়ায় ঠেলেই কামব্যাক রোহিতের
সব বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই, এমন এক গ্রামে বড় হওয়া। উন্নতমানের ট্রেনিং-এর সামর্থ্য ছিল না কখনই। এমনকি আশেপাশে ছিল না কোনও স্টেডিয়াম বা ক্রিকেট ইন্সটিটিউশনও। প্রথম থেকেই কোচ বদরুদ্দিন স্যারের দেশি ট্রেনিং শামির একমাত্র ভরসা। আর সেই ট্রেনিং-এ ভর করেই নিজেকে গড়েছেন শামি। হাজারও প্রতিকূলতা পেরিয়ে হয়ে উঠেছেন দেশের সেরা বোলার। চলতি বিশ্বকাপে তিনিই টিম ইন্ডিয়ার বোলিংয়ের প্রাণভোমরা। বলাই বাহুল্য, এর ফল সারাজীবন ভোগ করবেন শামি। একথা বলাই যায়, বিশ্বকাপ শেষে তাঁর ঝুলিও ভরবে একাধিক পুরস্কারে। তবে স্রেফ শামি নয়, বঙ্গ পেসারের কৃতিত্বের ফল পেতে চলেছে তাঁর ছোটবেলার গ্রামও। শামি সুযোগ না পেলেও, পরবর্তী প্রজন্ম যেন গ্রামের সবরকম সুবিধা পায়, তার জন্য তৈরি হবে নতুন স্টেডিয়াম এবং ওপেন জিম। যোগী রাজ্যের আমরোহা জেলার, সাহসপুর গ্রামে শামির বড় হওয়া। সেখানেই স্টেডিয়াম ও জিম তৈরির কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।
আরও শুনুন: কোহলি-শামি একসঙ্গেই লেখেন দেশের রূপকথা, বিশ্বকাপ ফুরোলে দেশবাসী মনে রাখবে তো?
এমন কিছু যে হতে পারে, সেই আন্দাজ আগেই করেছিলেন কেউ কেউ। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দপ্তরে স্টেডিয়াম তৈরির প্রস্তাব পৌঁছয়। সেখানে যদিও স্রেফ শামির গ্রাম নয়, গোটা উত্তরপ্রদেশ জুড়ে মোট ২০টি নতুন স্টেডিয়াম তৈরির প্রস্তাব রাখা হয়। সেই প্রস্তাবে মুখ্যমন্ত্রী রাজি হতেই স্টেডিয়াম তৈরির সম্ভাবনা একেবারে পাকা হয়। ইতিমধ্যে শামির গ্রামে এসে ঘুরেও গিয়েছে সরকারি প্রতিনিধিদের একটি দল। জানা গিয়েছে, ১ হেক্টর জমির উপর তৈরি হতে নতুন স্টেডিয়ামটি। জিমও হবে তার লাগোয়াই। প্রাথমিক ভাবে স্টেডিয়াম তৈরির খরচ হিসেবে ৫ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, স্টেডিয়ামটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হতে পারে শামির বাবা-মা’র হাতেই। তবে এর আনন্দ দ্বিগুণ হবে ভারত বিশ্বকাপ জিতলে। তাই এই মুহূর্তে শুধু নিজের গ্রাম নয় গোটা দেশের মুখ উজ্জ্বল করুন শামি, সেই প্রার্থনাই গোটা দেশের।