সঙ্গীকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে। আর তাতেই মিলবে এক কোটি টাকা মাইনে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সম্প্রতি এমনই চাকরির কথা ঘোষণা করেছে এক বহুজাতিক সংস্থা। ঠিক কোন যোগ্যতায় মিলবে এই চাকরি? আসুন শুনে নিই।
ঘুরে বেড়াতে কে না ভালোবাসে? কিন্তু বিনা পয়সায় তো সেটা সম্ভব নয়। বরং ঘুরতে যাওয়ার আগে যা বাজেট ঠিক করা হয়, অনেক সময়ই তার থেকে বেশি খরচ হয়ে যায়। তবে এক্ষেত্রে ঘুরতে গিয়ে খরচ তো হবে নাই, উলটে রোজকার হবে মোটা টাকা। তাও আবার একা নয়, সঙ্গীকে নিয়েই যাওয়া যাবে নতুন সফরে।
আরও শুনুন: বিপদের আশঙ্কায় কৃষ্ণ মূর্তিকে বিসর্জন! পাঠ্যবইয়ের গল্পে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের দাবি, সরব বিজেপি
পাহাড় হোক বা সমুদ্র, জনপ্রিয় জায়গা মানেই পাল্লা দিয়ে ভিড়। তাই অনেকেই ভিড়ের মধ্যে বেড়াতে যেতে পছন্দ করেন না। সেক্ষেত্রে তালিকায় উঠে আসে নির্জন কোনও দ্বীপ। তবে ভিড় কম হলে একদিকে যেমন শান্তি, তেমনই জিনিসপত্রের দাম সেখানে রীতিমতো বেশি হয়। তবু টাকা-পয়সা জমিয়ে অনেকেই মাঝেমধ্যে বেড়িয়ে পড়েন সেই অজানার উদ্দেশে। এক্ষেত্রেও করতে হবে ঠিক তেমনটাই। তবে তার জন্য খরচ করতে হবে না একটা টাকাও। উলটে এমনটা করতে পারলেই বছরে দেড় কোটি টাকা মাইনে পাওয়া যাবে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সম্প্রতি এমনটাই ঘোষণা করেছে ফেয়ারফ্যাক্স অ্যান্ড কেনসিংটন নামে এক সংস্থা। আসলে বিশেষ এক উদ্দেশ্য নিয়েই এমনটা করা হয়েছে।
ঠিক কী উদ্দেশ্য?
আরও শুনুন: তাঁর ভিডিওতে রশ্মিকার মুখ! ভাইরাল ডিপ ফেক ভিডিও-র তরুণী আসলে কে?
প্রাথমিক ভাবে বলতে নতুন কর্মী নিয়োগ। তবে সেই কর্মীদের কোনও অফিসে বসে কাজ করতে হবে না। তাঁদের পাড়ি দিতে হবে নির্জন এক দ্বীপে। একা নয়, সেখানে নিয়ে যেতে হবে সঙ্গীকেও। তারপর সব দায়িত্ব ওই সংস্থার। নির্জন দ্বীপে রাজকীয় খাওয়া দাওয়া থেকে আরম্ভ করে বিলাসবহুল জীবনযাত্রার যাবতীয় ব্যবস্থা করবে ওই সংস্থাই। এর জন্য এক টাকাও খরচ করতে হবে না যুগলকে। উলটে তাঁদের বছরে দেড় কোটি টাকা মাইনে হিসেবে দেবে ওই সংস্থা। ভাবছেন তো, এমন সুযোগ মিলবে কোন শর্তে? শর্ত একটাই, যুগলকে তাঁদের প্রতিদিনের কাজকর্ম ক্যামেরা বন্দী করতে হবে। ভিডিও, রিলস সব কিছু বানাতে হবে নির্জন দ্বীপে। যাবতীয় যা সুবিধা মিলছে সেসব কথা ভালোভাবে গুছিয়ে বলতে হবে। তারপর সেই ভিডিও ছড়িয়ে দিতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এক্ষেত্রে আরও একটা শর্ত রয়েছে। এই অভিনব চাকরি যিনি পাবেন, তাঁর রীতিমতো ভালো মানের ফলোয়ার্স থাকতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এক কথায় বলতে গেলে, এই চাকরি মূলত সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সরদের জন্যই। সংস্থার আসল উদ্দেশ্য এভাবে ওই নির্জন দ্বীপে ব্যবসা নতুন করে পর্যটন ব্যবসা শুরু করা। এই ইনফ্লুয়েন্সরদের অনেকেই পাথেয় মনে করেন। তাই তাঁরা যদি কোনও জায়গা ভালো বলেন, বা চলতি ভাষায় রেকোমেন্ড করেন, তবে সেখানে যাওয়ার আগ্রহ দেখাবেন অনেকেই। সেক্ষেত্রে আখেরে লাভ ওই সংস্থার। তাই বছরে দেড় কোটি মাইনে দিলেও এই চাকরিতে বিশেষ কিছু শর্তও চাপিয়েছে ওই সংস্থা। টানা একবছর সেখান থেকে ফেরার সুযোগ মিলবে না। মাত্র ২৫ দিনের ছুটিতে বাড়ি এলেও, তারপর সেই দ্বীপেই ফিরে যেতে হবে। তাই যতই লোভনীয় হোক, ওই চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে অনেকেই সাত পাঁচ ভাবছেন। সেইসঙ্গে কে কতটা জনপ্রিয় সেই নিরিখেই যেহেতু সুযোগ মিলবে, তাই অনেকে চাকরির জন্য আবেদনও জানাতে পারছেন না। আর যাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে চাকরি পাওয়ার জন্য তাঁদের দিতে হচ্ছে ভিডিও তৈরির পরীক্ষা। কে কত ভালো ভিডিও বা রিল তৈরি করতে পারেন সেই ভিত্তিতেই হবে চূড়ান্ত বিচার। তাই ওপর থেকে দেখে যতই অন্য রকম মনে হোক, এই চাকরি পাওয়া মোটেও ততটা সহজ নয়।