ভালবাসা কি শুধু উপহার দিলেই বাড়ে? একেবারেই না। দাম্পত্যে একে অন্যের খেয়াল রাখতে পারাটাও অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু স্ত্রীর খেয়াল রাখার জেরে কখনও পুলিশের দ্বারস্থ হতে দেখেছেন কাউকে? এই ব্যক্তি ঠিক তেমনটাই করেছেন। ঠিক কী ঘটেছে? আসুন শুনে নিই।
মেট্রোসিটি আর ট্রাফিক জ্যাম। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, এ যেন সমার্থক শব্দ। কলকাতা, মুম্বই, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ সব জায়গায় রোজকার জ্যামে অতিষ্ট হন সাধারণ মানুষ। অন্যদিন নিরুপায় হয়েই সে জিনিস মেনে নেন সকলে। কিন্তু বাড়িতে যেদিন স্ত্রী উপোস করে থাকেন, সেদিন কি আর জ্যাম সহ্য করা যায়!
আরও শুনুন: ‘লাভ জিহাদে’র ছল! হিন্দু মেয়েদের মেহেন্দি পরাতে পারবেন না মুসলিম শিল্পীরা, ফতোয়া যোগীরাজ্যে
সম্প্রতি সেই জ্যামে আটকেই অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়েছেন দিল্লির এক ব্যক্তি। কীভাবে জ্যাম থেকে বেরোবেন তা জানতে চেয়ে, সোজা পুলিশকে ফোন করেছেন তিনি। কিন্তু কেন? এত অস্থির হওয়ার কারণ কী?
কারণ আর কিছুই না, স্রেফ ভালোবাসা। তাও অন্য কারও প্রতি নয়, নিজেরই স্ত্রীর প্রতি। সম্প্রতি দেশজুড়ে পালিত হয়েছে ‘করবা চৌথ’। স্বামীর মঙ্গলকামনায় স্ত্রী এই ব্রত পালন করেন। তবে এর নিয়ম বেশ কঠিন। সারাদিন কিচ্ছুটি খাওয়া চলবে না। সন্ধ্যে বেলা চালুনি দিয়ে প্রথমে চাঁদের মুখ, তারপর সেই চালুনি দিয়ে স্বামীর মুখ দেখতে হবে। এরপর নিজে হাতে খাইয়ে দেবেন স্বামী। তবেই শেষ হবে ব্রত। অবাঙ্গালিদের মধ্যেই মূলত এই ব্রত পালনের চল রয়েছে। উত্তরভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মহিলারা নিষ্ঠা ভরে এই ব্রত পালন করেন। ব্যতিক্রম নয় রাজধানি দিল্লিও। সেখানকার অধিকাংশ বিবাহিত মহিলারাই বছরের এই নির্দিষ্ট দিনে নিয়ম মেনে স্বামীর জন্য উপোস করেন। এমনকি বলিউডের নামীদামী তারকারাও থাকেন সেই তালিকায়। তবে সম্প্রতি দিল্লির এই ব্যক্তির ঘটনা নেটদুনিয়া শোরগোল ফেলেছে।
আরও শুনুন: ‘দেশের জন্য ৪০ ঘণ্টা, নিজের জন্য ৩০ ঘণ্টা’, মূর্তির সমর্থনে মাহিন্দ্রা সিইও
বাড়িতে স্ত্রী ব্রত করলেও, তাঁর অফিস ছুটি নেই। তাইই সময়মতো কাজে গিয়েছেন। সন্ধ্যী মধ্যেই ফিরে আসবেন এই ভেবে খানিক তাড়াতাড়ি সেরেও নিয়েছিলেন কাজ। কিন্তু বাধ সাধল দিল্লির ট্র্যাফিক জ্যাম। তাতেই আটকে গিয়ে বেজায় বিপাকে পড়েন ওই ব্যক্তি। এদিকে তাঁর জন্য বাড়িতে না খেয়ে বসে রয়েছে স্ত্রী। উপায় না দেখে সোজা পুলিশে ফোন করেন ওই ব্যক্তি। কাতর কন্ঠ্যে জানান, নিজের সমস্যার কথা। রোজ রোজ হাজারও অভিযোগ জানাতে থানায় ফোন করেন অনেকেই। তবে এমন সমস্যার কথা কেউ বলেন না। ওই ব্যক্তির দাবি ছিল, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁকে জ্যাম থেকে উদ্ধার করুক পুলিশ। কারণ সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছে। আকাশে জ্বলজ্বল করছে চাঁদ, তাই এক্ষুনি বাড়ি না গেলে খুব সমস্যা হয়ে যাবে। বলা বাহুল্য, ওই ব্যক্তির অভিযোগ শুনে দুই পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে পৌঁছেও যান। তাঁরাই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন সেই জ্যাম থেকে। বাড়ি ফিরে প্রিয়তমা স্ত্রীর উপোস ভাঙেন ব্যক্তি। কিন্তু এই ঘটনা নেটদুনিয়ায় রীতিমতো ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে প্রায় সকলেই ওই ব্যক্তির ভালোবাসার তারিফ করেন। কেউ কেউ পুলিশের তৎপরতা দেখেও মুগ্ধ হন। সব মিলিয়ে এই ভালোবাসার গল্পে মশগুল হয়ে থাকে নেটদুনিয়া।