পছন্দমতো পোশাক পরে ঢোকা যাবে না মন্দিরে। ছেঁড়া জিন্স, মিনি-স্কার্ট কিংবা শরীরের বেশিরভাগ অংশ অনাবৃত রয়েছে এমন পোশাক কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তবে স্রেফ পোশাক নয়, এই মন্দিরে বিশেষ তিনটে রং-ও নিষিদ্ধ। কোথায় রয়েছে এই মান্দির? আসুন শুনে নিই।
মন্দিরে ঢোকার জন্য নির্দিষ্ট পোশাক থাকা, কোনও নতুন ঘটনা নয়। দেশের একাধিক মন্দিরে এমন নিয়ম রয়েছে। অনেকে সেই ব্যবস্থাকে রীতিমতো সমর্থনও করেন। বেশিরভাগই যদিও মন্দিরের শালীনতা বজায় রাখার স্বার্থে তৈরি। কিন্তু এমনও এক মন্দির রয়েছে যেখানে বহু আগে থেকেই বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে রয়েছে বিধি নিষেধ। পোশাকের মাপ নয়, এই মন্দিরে ঢুকতে গেলে মাথায় রাখতে হয় নির্দিষ্ট কিছু রং-এর নাম। সেইসব রঙের পোশাক পরে গেলে এই মন্দিরে ঢোকার অনুমতি নেই।
আরও শুনুন: ব্রত পালনে কাটে দুর্ভোগ, পার্শ্ব একাদশীর কী মাহাত্ম্য রয়েছে শাস্ত্রে?
কথা বলছি রাজস্থানের নাগোয়ারের এক মন্দির সম্পর্কে। মন্দিরের আরাধ্য হনুমান এবং গণেশ। স্থানীয় বিশ্বাস, এই মন্দির তৈরি হয়েছিল ১৭৩০ সালে। এই অঞ্চলের তৎকালীন রাজা, পুকুর খুঁড়তে গিয়ে একটি হনুমান ও একটি গণেশ মূর্তি খুঁজে পান। তক্ষনি ঠিক করেন দুটি মূর্তি মন্দিরে এনে প্রতিষ্ঠা করবেন। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও সেইসময় মূর্তি দুটি বের করা সম্ভব হয়নি। এদিকে মূর্তি দেখতে পেয়েও তা পুজো না করে রাজা থাকেন কীভাবে। তাই ঠিক হয়, যেখানে মূর্তিদুটি রয়েছে সেখানেই পুজোর ব্যবস্থা হবে। আর এতেই সমাধান হয় সমস্যার। কয়েকদিন ভক্তিভরে পুজোর পরই দুটি মূর্তি মাটি থেকে বার করা সম্ভব হয়। তারপর তা প্রতিষ্ঠা করা হয় মন্দিরে। তবে এখানকার হনুমান মূর্তিটির রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট। যা দেশের আর কোথাও তেমনভাবে দেখা যায় না। এই মন্দিরের হনুমান মূর্তিটি ১১ মুখী। অর্থাৎ স্রেফ হনুমান নয়, মূর্তিতে আরও ১০জন দেবতার মুখ রয়েছে। সেখানে রামচন্দ্র, মহাদেব, গরুড় থেকে শুরু করে গণেশ, নৃসিংহ, এমনকি সূর্যদেবেরও মস্তক রয়েছে। এমন মূর্তি বের বিরল। তবে শুধু এই মূর্তি নয়, এই মন্দির ঘিরে রয়েছে আরও এক বিশেষ নিয়ম। মন্দিরের নিয়ম, এখানে প্রবেশের জন্য কিছু নির্দিষ্ট বর্ণের পোশাক পরা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কালো, নীল ও সবুজ এই তিন রঙের ছোঁয়া থাকলেও কেউ ঢুকতে পারবেন না মন্দিরে। অনেকেই মনে করেন এমনটা করলে ঘটবে মারাত্মক বিপদ। তাই কেউই সে সাহস দেখান না।
এমনিতেই রাজস্থানের ওই অঞ্চল বিভিন্ন মন্দিরের জন্য বিখ্যাত। তবে এই মন্দিরের হনুমান মূর্তি আর অদ্ভুত নিয়মই ভক্তদের টেনে আনে। প্রতিদিন সেখানে হাজারও ভক্ত ভিড় জমান। মনে করা হয়, এই মন্দিরে নিয়ম মেনে পুজো করলে অবশ্যই পূরণ হয় ভক্তের মনের ইচ্ছা।