চুইং গাম চিবানোর পর কী করেন? সহজ উত্তর, ফেলে দেন। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, কোথায় ফেলেন? সেখানেও সহজেই উত্তর হবে, নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলেন। কিন্তু এখানে চুইং গাম চিবানোর পর ডাস্টবিনে ফেলার নিয়ম নেই। তা আটকে দিতে হয় একটা দেওয়ালে। কোথায় রয়েছে এমন দেওয়াল? আসুন শুনে নিই।
চুইং গাম খাওয়ার অভ্যেস অনেকেরই রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ চিবানোর পর সেই অংশটি বিশেষ পছন্দ করেন না কেউই। তাই চুইং গাম খাওয়ার পর তা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলে দেওয়াই উচিত। তবে সেই নির্দিষ্ট জায়গা যদি কোনও দেওয়াল হয়, তাহলে কেমন লাগে বলুন তো? অথচ দীর্ঘক্ষণ চিবানোর পর চুইং গাম দেওয়ালে আটকে দেওয়াই এখানকার প্রচলিত রীতি। আজকের নয়, এই নিয়ম চালু রয়েছে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে।
আরও শুনুন: দর্শন সেরেছেন শাহরুখ থেকে সানি লিওন, দুদিনে ১ কোটিরও বেশি আয় লালবাগচা গণেশের
কথা বলছি ওয়াশিংটনের সিয়াটল প্রদেশের এক বিখ্যাত পর্যটন ক্ষেত্র সম্পর্কে। এমনিতেই সেখানে একাধিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তবে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ একটা দেওয়াল। কারণ সেখানে আটকানো রয়েছে অজস্র চুইং গাম। তাও আবার চিবানোর পর। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। এই অদ্ভুত রেওয়াজ চালু হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। সিয়াটলের জনপ্রিয় পাইক প্লেস মার্কেটে ঢোকার মুখেই দেখা যাবে এই দেওয়াল। স্থানীয়দের কাছে যা, থিয়েটার গাম ওয়াল নামে পরিচিত। ঠিক কেন এমনটা করা হয়, তার সঠিক উত্তর দিতে পারেন না কেউই। দেওয়ালটার উচ্চতায় প্রায় ৮ ফুট, আর চওড়ায় ৫০ ফুট। গোটাটা জুড়েই অজস্র চুইং গাম। এমনটাও মনে করে হয়, এই দেওয়ালের প্রতিটা ইটে খুব কম করে হলেও ১৫০ টা করে চুইংগাম আটকানো রয়েছে। এমনিতে অন্যের চিবানো চুইংগাম দেখে যতই ঘেন্না লাগুক, এই দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে নিশ্চিন্তে ছবি তোলেন সকলে। বলা ভালো, এই বিশেষ দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলাই বর্তমানে ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। আর শুধু ছবি তুলেই যে সবাই চলে যান তা নয়। আটকে রেখে যান নিজের চিবানো চুইংগামও।
আরও শুনুন: ক্রিকেটেও শিবঠাকুর! ত্রিশূল, ডমরু, বেলপাতায় সাজছে বারাণসীর স্টেডিয়াম
তবে যতই আকর্ষনীয় হোক, আদপে এ জিনিস যথেষ্টই অস্বাস্থ্যকর। যেমন বিশ্রি দুর্গন্ধ তেমনই পোকামাকড়ের আস্তানা। সব মিলিয়ে এখানে বেশিক্ষণ দাঁড়াতেই পারেন না কেউ। তবু হুজুকে গা ভাসিয়ে ছবি তোলার জন্য এমনটা করেই থাকেন অনেকে। ২০১৫ সালে অবশ্য এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে অতিরিক্ত চুইংগাম আটকানোর ফলে নষ্ট হতে বসেছিল দেওয়ালটাই। তাই তড়িঘড়ি গোটা দেওয়াল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় সমস্ত চুইং গাম। একেবারে পরিষ্কার করে সাধারণ দেওয়ালের রূপ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে কী! কয়েকমাস কাটতে না কাটতেই আবার যে কে সেই। প্রথমে একজন দুজন, তারপর প্রায় সকলেই এখানে চুইং গাম আটকাতে শুরু করেন। ফলে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবারও সেই পুরনো রূপেই ফিরে যায় ওই দেওয়াল। এখনও চুইং গাম আটকানোর রেওয়াজ বর্তমান। এই কারণেই জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে এই দেওয়ালও।