যে কেউ আর যখনতখন সোশাল মিডিয়াতে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না। সমাজমাধ্যম ব্যবহারের জন্য বয়স বেঁধে দিক কেন্দ্র। সম্প্রতি এমনই মত প্রকাশ করল কর্ণাটক হাই কোর্ট। ঠিক কী বলেছেন বিচারপতি? শুনে নেওয়া যাক।
এ দেশে সোশাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে বয়সের সীমা বেঁধে দেওয়া উচিত। অবিলম্বে এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করুক কেন্দ্র সরকার। এই মর্মেই সম্প্রতি সরকারের কাছে আর্জি রাখলেন কর্ণাটক হাই কোর্টের এক বিচারপতি। সোশাল মিডিয়া এক্স-এর একটি মামলার প্রসঙ্গেই এ কথা বলেছেন তিনি। এর আগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯এ ধারা অনুযায়ী একটি ব্লকিং অর্ডার ইস্যু করেছিল কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। তার বিরুদ্ধেই আদালতের কাছে আপিল করেছিল এক্স। কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চে তাদের বক্তব্য খারিজ হয়ে যায়। এরপরে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে সংস্থা। আর সেই মামলার শুনানিতেই এবার সোশাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে বয়স বেঁধে দেওয়ার কথা বললেন আদালতের বিচারপতি। তাঁর মতে, যখন কেউ সোশাল মিডিয়ায় রেজিস্টার করছেন, তখনই তাঁকে কোনওভাবে শনাক্তকরণের প্রমাণ দিতে হবে। সরাসরি আইডি প্রুফ জমা দেওয়ার কথাই তিনি বলছেন কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি বিচারপতি।
আরও শুনুন: ইমামের নির্দেশে শিবমন্দিরে নমাজ পড়লেন মুসলিম মহিলা, তুমুল শোরগোল উত্তরপ্রদেশে
এমনিতেই, ঠিক কোন বয়স থেকে সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করা উচিত, কতক্ষণ সময় সেখানে কাটানো উচিত, এ নিয়ে নানারকম আলাপ আলোচনা চলে আসছে সোশাল মিডিয়া চালু হওয়ার পর থেকেই। এই নিয়ে ডক্টর অ্যামি অর্বেনের নেতৃত্বে অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা যৌথভাবে একটি গবেষণা চালিয়েছিলেন, যা প্রকাশিত হয়েছিল ‘নেচার’ পত্রিকায়। ১০ থেকে ৮০ বছর বয়সি প্রায় ৮৪ হাজার মানুষকে নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে ১৭,৪০০ জনের বয়স ছিল ১০ থেকে ২১ বছরের মধ্যে। গবেষকরা বলেন, বয়ঃসন্ধির সময়ে কিশোর-কিশোরীদের সামগ্রিক ভাল থাকার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে নেটমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার। মেয়েদের ক্ষেত্রে ১১ থেকে ১৩ বছর বয়সিদের মধ্যে ও ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৪ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের মধ্যে এই প্রভাব সর্বাধিক। তাই অনেকেই বলেন, কমপক্ষে ১৩ বছর বয়স হওয়ার আগে সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করা উচিত নয়। বর্তমানে ভারচুয়াল জগতের প্রভাবে অনেকসময় অপরাধের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে কম বয়সের ছেলেমেয়েদের। যা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন ওয়াকিবহাল মহল। আর এবার এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রকেই বয়স বেঁধে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে বললেন বিচারপতি।