জি-২০ বৈঠক নিয়ে সাজো সাজো রব পড়েছিল গোটা দেশ জুড়েই। জানা গিয়েছে, এই বিপুল আয়োজনের জন্য খরচ হয়েছে মোট ৪১০০ কোটি টাকা। তবে শুধু ভারত নয়, প্রতিবছরই এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দায়িত্ব বর্তায় কোনও না কোনও দেশের উপর, আয়োজনও হয় রীতিমতো আড়ম্বরে। শীর্ষবৈঠকে খরচের নিরিখে কোথায় রয়েছে সেই আয়োজক দেশগুলি? আসুন শুনে নিই।
জি-২০ বৈঠকে এবার সভাপতিত্বের দায়িত্ব ছিল ভারতের। দুদিন ব্যাপী সম্মেলনের আয়োজনে রাজকীয় ভাবে সেজে উঠেছিল রাজধানী দিল্লি। একদিকে দেশের নাম বদল বিতর্ক, অন্যদিকে জি-২০ বৈঠক- বিগত কয়েকদিন ধরে দুই ইস্যুতেই উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। জি-২০ বৈঠক শেষ হওয়ার পরেও এবার এই সম্মেলনের খরচ নিয়ে উঠতে শুরু করেছে নানান প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, জি-২০ বৈঠকের জন্য কেন্দ্রের তরফে খরচ হয়েছে মোট ৪১০০ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, যা অন্যান্য আয়োজক দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
আরও শুনুন: Bharat: ইন্ডিয়াই ভারত! সংবিধানের প্রসঙ্গ টেনে বিরোধীদের একহাত নিলেন জয়শঙ্কর
চলতি মাসের ৯ ও ১০ তারিখে, নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ২৫টি দেশের শীর্ষ নেতারা। রাষ্ট্রনেতাদের স্বাগত জানাতে রাজকীয় অভ্যর্থনা, সোনারুপোর থালাবাসনে ভোজ, জমকালো ‘ভারত মণ্ডপম’- কোনও কিছুরই কমতি হয়নি। দুদিন ব্যাপী সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়কদের সঙ্গে আলোচনা সেরেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। কেন্দ্রের দাবি, এই সম্মেলন বিশ্বের দরবারে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। তাই খরচের ক্ষেত্রে কোনওরকম কার্পণ্য করেনি মোদি সরকার। কিন্তু এই খরচ নিয়েই এবার প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। প্রথমত চলতি বছরের বাজেটে এই সম্মেলনের জন্য খরচের যা হিসাব দেখানো হয়েছিল, বাস্তবে তার কয়েকগুণ খরচ হয়েছে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বাজেটে জি-২০ বৈঠকের জন্য ৯৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। সেখানে দুদিনের এই শীর্ষ সম্মেলনের জন্য খরচ শেষমেশ গিয়ে পৌঁছেছে ৪১০০ কোটি টাকায়। স্বাভাবিক ভাবেই এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিরোধী মহলে। তথ্য বলছে, এতদিন যেসব দেশ জি-২০ বৈঠকের দায়িত্ব সামলেছে, তাদের তুলনায় যথেষ্টই বেশি খরচ করেছে মোদি সরকার। বিগত ১০ বছরের হিসাব ধরলে দেখা যাবে, ২০১৩ সালে রাশিয়ায় আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলনে খরচ হয়েছিল ১৭০ কোটি টাকা। এরপরের বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়া জি-২০ বৈঠকের জন্য খরচ করেছিল ২৬৫৩ কোটি টাকা। যদিও ২০১৬ সালে চিনের সভাপতিত্বে জি-২০ বৈঠকে খরচ হয়েছিল ১.৯ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু তারপরের বছরগুলিতে আবারও কমতে শুরু করে টাকার অঙ্ক। ২০১৭ সালে জার্মানি এই খাতে খরচ করে ৬৪১ কোটি, তারপরের বছর আর্জেন্টিনায় আয়োজিত বৈঠকে খরচ হয় ৯৩১ কোটি। এরপর ২০১৯ সালে কিছুটা হলেও বাড়ে খরচের পরিমাণ। ২৬৬০ কোটি খরচ করে রাজকীয় ভাবে জি-২০ বৈঠক সেরেছিল জাপান। যদিও তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ইন্দোনেশিয়ায় আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলনে খরচ হয় ৩৬৪ কোটি টাকা। সুতরাং এই তালিকা থেকেই স্পষ্ট, বিগত কয়েক বছরে বেশ কিছু প্রথম বিশ্বের দেশ বৈঠক আয়োজনে যা খরচ করেছে, তার থেকেও অনেকটাই বেশি খরচ করে জি-২০ বৈঠক সেরেছে ভারত।
আরও শুনুন: Bharat: ‘ইন্ডিয়া’ নামের দাবিদার কি পাকিস্তান? ভারতের নামবদলের জল্পনার মাঝেই নয়া রটনা
আর এই ইস্যুতেই মোদি সরকারের দিকে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখেল। টুইটে, জার্মানির আয়োজিত ২০১৭ সালের জি-২০ বৈঠকের সঙ্গে সদ্য শেষ হওয়া ভারতের জি-২০ বৈঠকের তুলনা টেনেছেন তিনি। তাঁর কথায়, জার্মানি এই সম্মেলনের আয়োজনে ৬৪১ কোটি টাকা খরচ করেছিল, আর মোদি সরকার তার প্রায় ৭ গুণ বেশি টাকা খরচ করেছে। যদিও হিসাব বলছে, স্রেফ জার্মানি নয়। শীর্ষ বৈঠকের আয়োজনে অন্যান্য অনেক দেশের থেকেই বেশি টাকা খরচ করেছে ভারত। তাই বৈঠক শেষ হলেও থামছে না বিতর্ক। বরং জি-২০ সম্মেলনের বাজেট নিয়ে রীতিমতো সরগরম গোটা দেশের রাজনৈতিক মহল।
Shocking:
Modi Govt spent SEVEN TIMES (7x) more than Germany did on hosting G20 Summit
In 2017, Germany hosted the G20 Summit in Hamburg
The total cost, according to Germany’s G20 website, was €72 million (₹ 641 crores)
In comparison, how much has the Modi Govt spent? 👇 pic.twitter.com/tyNDBc7qsy
— Saket Gokhale (@SaketGokhale) September 8, 2023