কেউ ঝাঁপাচ্ছে। কেউ লাফাচ্ছে। কেউ আবার অন্যকে কোলে তুলে মাটিতে ফেলছে। আর গোটাটাই হচ্ছে ঝোলের মধ্যে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। বিরাট এক গর্তে ভরতি করা হয়েছে হয়েছে ঝোল বা গ্রেভি দিয়ে। আর সেখানেই কুস্তি লড়ছেন সকলে। কোথায় হয় এমন অদ্ভুত খেলা? আসুন শুনে নিই।
কুস্তি খেলা সাধারণত মাটিতেই হয়। কিছুক্ষেত্রে তা ম্যাট বা ওই জাতীয় কিছুর ওপরও হতে পারে। কিন্তু কোনও সুইমিং পুলে কুস্তি হতে শুনেছেন কখনও? শুধু তাই নয়, সেই পুল আবার সাধারণ জল দিয়ে ভরতি নয়। তা ভরাট করা হয়েছে, ঝোল বা গ্রেভি দিয়ে।
আরও শুনুন: চলন্ত মেট্রোই যেন র্যাম্প! কায়দার পোশাকে হাঁটলেন মডেলরা, দেখে থ যাত্রীরাও
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। প্রতি বছর এমনই অদ্ভুত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় ইংল্যান্ডের স্টেকস্টেড প্রদেশে। এর পোশাকি নাম, ‘ওয়ার্ল্ড গ্রেভি রেসলিং চ্যাম্পিয়নশিপ’। এলাকার মানুষ তো বটেই, বাইরে থেকেও অনেকেই এসে অংশ নেন এই অদ্ভুতুড়ে প্রতিযোগিতায়। আসলে এই খেলা বিনোদনের স্বার্থেই আয়োজিত। তাই এই খেলা সামনে থেকে উপভোগ করতে সেখানে ভিড় জমান অনেকেই। নির্দিষ্ট মূল্যের টিকিটও থাকে। যদিও সেই টাকা কর্তৃপক্ষ চ্যারিটির কাজেই ব্যবহার করে। তবে প্রতিযোগিতার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। যারা অংশ নেন, তাঁদের সকলকেই পরতে হয় অদ্ভুতুড়ে পোশাক। অনেকটা যেমন খুশি তেমন সাজো-র মতো ব্যাপার। আর সেইভাবেই নামতে হয় কুস্তির ময়দানে। থুড়ি, এক্ষেত্রে ময়দান নয়, বলা ভালো ‘ঝোলে’। নিয়ম হল সেই ঝোলের মধ্যে অন্তত ২ মিনিট টিকে থাকতে হবে। যিনি এমনটা করতে পারবেন তিনিই জিতবেন। প্রতিযোগিরা সকলেই প্রায়, একটা করে মুখোশ পরে থাকেন। কোনওভাবেই যেন ওই ঝোল বা গ্রেভি তাঁদের চোখে মুখে ঢুকে না যায়, সেই জন্যই এই সতর্কতার ব্যবস্থা। এছাড়া বাকি নিয়ম কুস্তির মতোই। স্রেফ মারামারি নয়, নির্দিষ্ট কায়দা মেনেই হয় লড়াই।
আরও শুনুন: আকাশে নয়, পাহাড়ের গায়েই ফোটে রামধনু! কোথায় দেখা মেলে ‘রেনবো ওয়াটারফলে’র?
সাধারণত এই খেলা ছুটির দিনেই আয়োজন করা হয়। যাতে লোকের ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো। শুধু তাই নয়, এই মজার খেলার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতেও আপলোড করা হয়। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে বসেই যেন এই বিশেষ খেলাটি উপভোগ করতে পারেন যে কেউ, সে উদ্দেশ্য নিয়েই এই ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে অনেকের কাছেই রীতিমতো জনপ্রিয় এই গ্রেভি রেসলিং। সাধারণ কুস্তির মতো নিয়ম হলেও, এখানে আসল মজা ওই ঝোলের মধ্যে টিকে থাকা। অনেকেই স্রেফ মজার জন্য এই খেলায় অংশ নেন। খেলার পর তাঁদের কাউকেই আর চেনার উপায় থাকে না। দেখলে মনে হতে পারে সদ্য রঙ খেলেছেন। আর সেই খেলা দেখতেই দলে দলে মানুষ ভিড় জমান ওই অঞ্চলে।