কেবল রকেট বয়েজ-ই নয়, ভারতের মহাকাশ অভিযানের সাফল্যে রকেট ওম্যানের ভূমিকাও কিন্তু কম নয়। হ্যাঁ, রকেট ওম্যান-ই বলা হয় চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মিশন ডিরেক্টর, ঋতু কারিদাল-কে। এই অভিযানে ঋতুর সঙ্গে ছিলেন আরও একাধিক মহিলা বিজ্ঞানী। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মেয়েদের বিজ্ঞান পড়া নিয়ে একসময় রীতিমতো আপত্তি ছিল এ দেশের এক বড় অংশের। সত্যি বলতে, পড়াশোনার অধিকার আদায় করতেই এ দেশের মেয়েদের পাড়ি দিতে হয়েছে অনেকটা পথ। কিন্তু সেই দেশেই চন্দ্রযান অভিযানের সাফল্যের নেপথ্যে এবার জুড়ে গেল এক মহিলারই নাম। চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মিশন ডিরেক্টর, ঋতু কারিদাল শ্রীবাস্তব। অবশ্য তিনি একা নন, হাতে হাত ধরে এ অভিযানকে সফল করে তুললেন আরও একাধিক মহিলা বিজ্ঞানী। আর তাঁদের এই বেনজির সাফল্যই দেশের মেয়েদের বিজ্ঞানচর্চার পথ আরও একটু খুলে দিল।
আরও শুনুন: চর্চায় সিনেমার হিরো, বাস্তবের মহাকাশচারী রাকেশ শর্মা এখন কোথায়?
ইসরোর বিজ্ঞানী ঋতুর মুকুটে এর আগেও অনেক পালক জুড়েছে। ভারতের রকেট ওম্যান বলা হয় তাঁকে। মঙ্গল অভিযানের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন ঋতু। আর চন্দ্রযান অভিযানের সাফল্য অনেকখানিই নির্ভর করেছে তাঁরই উপর। লখনউয়ের মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ঋতু ছোট থেকেই আকাশ ছুঁতে চেয়েছিলেন। ইসরো কিংবা নাসার কাজ নিয়ে যা যা খবর বেরোত, সেসব পেপারকাটিং জমাতেন তিনি। ১৯৯৬ সালে লখনউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর পাশ করেন। তারপর বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সেস থেকে এমটেক ডিগ্রি নিয়ে ইসরোতে যোগ দেন ঋতু। খোদ এপিজে আব্দুল কালামের হাত থেকে ‘ইসরো তরুণ বিজ্ঞানী’ সম্মান পেয়েছিলেন ঋতু। আর এবার চন্দ্রযান-৩ যেভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরু জয় করল, সেই সাফল্যের ইতিহাসে বড় ভূমিকা রইল তাঁর।
আরও শুনুন: চাঁদ ছোঁয়ার স্পর্ধায় শরিক, একটা ‘কালো’ ঘটনা কি মুছতে পারে যাদবপুরের ‘আলো’?
ঋতু ছাড়াও এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন বাংলার মেয়ে মৌমিতা দত্ত। কলকাতার হোলি চাইল্ড স্কুলের প্রাক্তনী তিনি। এই বিশাল কর্মকাণ্ডে জুড়ে রইলেন নন্দিনী হরিনাথ, অনুরাধা টিকে, মিনাল রোহিত, মুথাইয়া বনিতা, ভি আর ললিথাম্বিকা প্রমুখ একাধিক বিজ্ঞানী, যাঁরা লিঙ্গপরিচয়ে নারী। নারীর সঙ্গে বুদ্ধি বা মেধার সম্পর্ক কম, এমন কথা এখনও এ দেশে কান পাতলেই শোনা যায়। সেইসব কথাকেই সপাটে উড়িয়ে দিয়ে মেয়েদের চলার পথটা আরও খানিক বড় করে দিলেন ঋতু কারিদাল সহ এই মহিলা বিজ্ঞানীরা।