সময়ের পার্থক্য কোনও অস্বাভাবিক বিষয় নয়। একই সময় কোথাও দিন আবার কোথাও রাত হতেই পারে। কিন্তু একই দেশে এমনটা হওয়া কি আদৌ সম্ভব? শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। এমনও এক দেশ রয়েছে, যেখানকার মানুষজন দিন ও রাতের সাক্ষী থাকেন একইসঙ্গে। কোন দেশের কথা বলছি? আসুন শুনে নিই।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কখনই এক সময় থাকে না। কোথাও দিন তো কোথাও রাত। ভৌগলিক দূরত্বের ভিত্তিতে অন্তত কয়েক ঘন্টার তফাৎ থাকাই স্বাভাবিক। তবে একই দেশের মধ্যে বিভিন্ন শহরের সময় আলাদা, এমনটা সচরাচর শোনা যায় না। ব্যতিক্রম রাশিয়া।
আরও শুনুন: মুসলিম বা ব্রিটিশ আমলে নয়, হিন্দু রাজাদের সময়েই কি বেশি ধনী ছিল দেশ?
বিশ্বের বৃহত্তম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম রাশিয়া। সেখানে গেলেই এমন অদ্ভুত ঘটনার সাক্ষী হতে পারেন যে কেউ। যদিও গোটা বছরভর যে এমনটা হয় তা নয়। মোটামুটি মে মাসের শুরু থেকে একেবারে জুলাই অবধি এমন ঘটনা ঘটে। সে সময় দেশের একপ্রান্তের মানুষজন সকালের জলখাবার খান, তো অন্যপ্রান্তের মানুষ নৈশভোজের ব্যবস্থা শুরু করেন। কারণটা অবশ্যই দিন ও রাতের অবস্থান। এত বড় দেশের দুদিকে দুরকম অবস্থা লক্ষ করা যায় বছরের এই বিশেষ সময় জুড়ে।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এমনটা হয় কেন?
আরও শুনুন: ভারতে যারা জন্মায় তারা সবাই হিন্দু, গুলাম নবি আজাদের দাবিতে শোরগোল নেটদুনিয়ায়
আসলে এই সময়ের পার্থক্য তৈরি হয় হয় পৃথিবীর আবর্তন গতির জেরে। মানচিত্র জুড়ে রয়েছে অসংখ্য কাল্পনিক রেখা। সেইসব অক্ষরেখা আর দ্রাঘিমারেখার পার্থক্যের ভিত্তিতেই তৈরি হয় টাইম জোন। জানা যায়, গোটা রাশিয়া জুড়ে রয়েছে এমনই ১১ টি টাইম জোন। তাই একই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঘড়িতে আলাদা আলাদা সময় ধরা পড়ে। আর সেই ভিত্তিতেই দেশের একপ্রান্তে যখন দিন অন্যপ্রান্তে তখন সূর্যের চিহ্ন মাত্র নেই। তবে স্রেফ রাশিয়া নয়। ঠিক এই ধরনের না হলেও সূর্যের অবস্থান ঘিরে আরও কিছু অদ্ভুত দৃশ্যের দেখা মেলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। যার মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় নরওয়ের কথা। এই দেশকে নিশীথ সূর্যের দেশ বলা হয়। এখানে রাতের আকাশেও সূর্যের দেখা মেলে। আর সেই দৃশ্য এতটাই সুন্দর হয়, প্রতিবছর দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন ছুটে আসেন এই দৃশ্যের সাক্ষী হতে। আবার কিছু কিছু দেশ এমনও রয়েছে যেখানে বছরের কয়েক মাস শুধুই দিন, আর কয়েকমাস অন্ধকার রাত। বিশেষত ফিনল্যান্ড, সুইডেনের মতো দেশগুলোতে এই ধরনের অস্বাভাবিকতা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। তাই এখানকার মানুষজনের জীবনযাপনের ধরনও বেশ আলাদা। তবে সেক্ষেত্রে গোটা দেশের মানুষই প্রায় এক রুটিন মেনে চলেন। রাশিয়ার মতো একই দেশে প্রকৃতির দু-রকম অবস্থান যে একেবারেই বিরল, তা বলাই বাহুল্য।