হঠাৎ করেই কিছু টাকার প্রয়োজন হয়েছে। এদিকে কিছুতেই আর যোগাড় করতে পারছেন না। মনে মনে ঈশ্বরকে ডাকছেন, আর চাইছেন যে কোনও উপায়ে সমস্যার সমাধান হোক। এমন সময় টাকা ধার দিতে এগিয়ে এলেন স্বয়ং হনুমান। স্বপ্নে নয়, বাস্তবেই ঘটতে পারে এমন ঘটনা। কারণ দেশের এই মন্দিরে ভক্তদের টাকা ধার দেন স্বয়ং হনুমান। কোথাও রয়েছে এমন মন্দির? আসুন শুনে নিই।
মনের ইচ্ছা পূরণ হলে মন্দিরে পুজো দেন অনেকেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানত হিসেবে টাকা দেওয়ার চল রয়েছে। কেউ কেউ গয়নাও দান করেন। তবে এই হনুমান মন্দিরের হয় ঠিক উলটোটা। অর্থাৎ এখানে ভক্তদের টাকা দেন স্বয়ং ভগবান। তবে ধার হিসেবে।
আরও শুনুন: সামান্য আয়োজনেই হন তুষ্ট, শ্রাবণের সোমবার মহাদেবকে কোন ভোগ দেবেন?
কথা বলছি, রাজস্থানের প্রতাপগড়ের রোকাডিয়া মন্দির সম্পর্কে। মন্দিরের আরাধ্য সংকটমোচন হনুমান। সাধারণত হনুমানের যে মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়, এই মন্দিরের বিগ্রহ ঠিক তেমন নয়। তবে মন্দিরের জনপ্রিয়তার কারণ অন্য কিছু। কথায় আছে, এই মন্দিরে ভক্তদের টাকা ধার দেন হনুমান। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি।
কিন্তু কীভাবে এমনটা হয়? তাহলে খুলেই বলি।
আরও শুনুন: এইসব মন্দিরে স্বয়ং হনুমানের বাস, পুজো দিলে কী এমন ফল মেলে?
মন্দিরটি তৈরি হয়েছে হালে। তবে এই হনুমান বিগ্রহের বয়স সম্পর্কে কারও কোনও ধারণা নেই। স্থানীয় বিশ্বাস বিগ্রহটি স্বয়ম্ভূ। অর্থাৎ নিজে থেকে তৈরি হয়েছিল এই মূর্তি। তখন থেকে বিগ্রটির মধ্যে একটি গর্ত রয়েছে। যা খানিকটা পকেটের মতো। মনে করা হয়, এই পকেটেই যাবতীয় টাকা পয়সা জমিয়ে রাখেন হনুমান। কারও প্রয়োজন হলে এখান থেকে টাকা নিয়ে যেতে পারেন। তবে শর্ত একটাই, সেই টাকা আবার ফেরত দিতে হবে। সময়ের কোনও বাঁধন নেই। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়া আবশ্যক। আর টাকা ফেরতও দিতে হবে ওই একই জায়গায়। ফলত কখনই ওই পকেটে টাকা ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। ভাবছেন তো, এখান থেকে তো কেউ চাইলেই টাকা চুরি করতে পারেন! তবে এমনটা একেবারেই হয় না। শোনা যায়, একবার কেউ এমনটা করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু বিগ্রহের মধ্যে থাকা ওই গর্তে হাত ঢুকিয়ে আর বের করতে পারেননি তিনি। পরেরদিন গারমবাসীরা এসে উদ্ধার করেন। এর থেকেই সকলের শিক্ষা হয়ে যায়। তাই প্রয়োজন ছাড়া বা অসৎ উদ্দেশে কেউ টাকা নেন না এই হনুমানের থেকে। যদিও বর্তমানে মূল বিগ্রহে হাত দেওয়ার সুযোগ পান না সাধারণ মানুষ। মূলত প্রাচীন বিগ্রহটিকে সংরক্ষনের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেয় মন্দির কর্তৃপক্ষ। তবে লোকমুখে আজও হনুমানের টাকা ধার দেওয়ার কথা ঘোরে। স্থানীয় প্রবীনদের অনেকে এইভাবে উপকৃতও হয়েছেন বলে দাবি করেন। হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে প্রতি বছর বিশাল মেলা বসে এই মন্দির চত্বরে। এ সময় স্রেফ স্থানীয়রা নন, দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে এসে হাজির হন। যদিও স্বচক্ষে টাকা ধার দেওয়ার ঘটনা কেউ দেখেননি। কিন্তু লোকমুখে এই কাহিনি শুনেই চমকে ওঠেন ভক্তরা।