ব্যবসায় বিরাট কোনও লাভ হয়নি। পাননি কোনও লটারিও। এমনকি হঠাৎ করে কোনও গুপ্তধনেরও হদিশও পাননি। অথচ রাতারাতি কোটিপতি হয়েছেন এই ব্যক্তি। ঠিক কীভাবে? আসুন শুনে নিই।
লটারি পাওয়ার স্বপ্ন কে না দেখে বলুন! ঘুমিয়ে হোক বা জেগে, বিনা পরিশ্রমে অনেক টাকা জিতেছেন এমনটা ভাবতে প্রায় সকলেই ভালবাসেন। এই ব্যক্তি তেমন কিছুই ভাবেননি। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যা ঘটেছে তা স্বপ্ন বললে ভুল বলা হবে না।
আরও শুনুন: চোখের আড়ালে অন্য নারীকে দেদার আদর, AI দিয়েই হাতেনাতে ধরলেন তরুণী
ঘটনাটি চিলির। সেখানকার বাসিন্দা এক্সাকুইল হিনজোসার জীবনে ঘটছে এক অদ্ভুত কাণ্ড। বাবার মৃত্যুর পর তিনি পুরনো জিনিস পরিষ্কার করতে বসেছিলেন। তখনই খুঁজে পান একটা পুরনো পাসবই। তাঁর বাবার যে এমন কোনও ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে তা জানতেনই না হিনজোসার। তাই পরিত্যক্ত হিসেবে বইটি ফেলেই দিয়েছিলেন। কিন্তু তখনই চোখে পড়ে সেই পাসবই-এর প্রথম পাতা। কী মনে করে পাসবইটা তুলে ভাল করে দেখতে শুরু করেন তিনি। বুঝতে পারেন আসলে এই বই তাঁর কাছে গুপ্তধনের সমান। কারণ অবশ্যই সেখানে লেখা টাকার হিসাব।
আরও শুনুন: খোদ মহাদেবের জন্য রিজার্ভ থাকবে সিট! সত্যিই কি চালু হয়েছিল এমন ট্রেন?
পাসবইটি চিলির এক রাষ্ট্রায়ত্ত বাঙ্কের। সেখানেই একসময় কিছু টাকা জমা রেখেছিলেন ওই হিনজোসারের বাবা। তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় ৫০ বছর। তাই এতদিনে ওই টাকার মূল্য বেড়ে হয়েছে কয়েক গুণ। তবে হিনজোসার খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন বর্তমানে ব্যাঙ্কটির কোনও অস্তিত্ব নেই। সেই হিসেবে ওই জমানো টাকা ফেরত পাওয়ার কোনও আশা নেই। কিন্তু এখানেই ফের কাজে আসে ব্যাঙ্কের পাসবইটি। হিনজোসার দেখতে পান, ওই বইয়ের ভিতর স্পষ্ট করে লেখা, ‘স্টেট গ্যারান্টিড’। অর্থাৎ ব্যাঙ্ক ব্যর্থ হলে টাকা দেবে সরকার। তাঁর হিসাবমতো ভেবেছিলেন অন্তত কয়েক লক্ষ টাকা পাবেন। যদিও ব্যাঙ্কের হিসাবে সুদের পরিমাণ কত পাওয়া উচিত তা ঠিকমতো জানতেন না হিনজোসার। তবু যা পাওয়া যায়, এই ভেবেই পাসবই নিয়ে সরাসরি সরকারি দপ্তরে হাজির হন তিনি। কিন্তু সেই টাকা দিতে সম্পূর্ণভাবে নাকচ করে সরকার। বাধ্য হয়েই মামলা করেন হিনজোসার। আর সেখানেই অবশেষে সুবিচার পান। আদালত সরকারি দপ্তরকে সাফ নির্দেশ দেয় হিনজোসারকে সব টাকা সুদ সমেত ফেরত দেওয়ার। আর সেখানেই টাকার অঙ্ক শুনে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ হয় হিনজোসারের। তিনি জানতে পারেন, সুদ সমেত ১০ কোটি টাকারও বেশি ফেরত পেতে চলেছেন তিনি। আদালত নির্দেশ অমান্য করার উপায় নেই। তাই সরকারের তরফে সেই টাকা হিনজোসারকে ফেরতও দিয়ে দেওয়া হয়। ফেলে দেওয়া জিনিস থেকেও যে এইভাবে কারও ভাগ্য খুলে যেতে পারে, তারই প্রমাণ দিল এই ঘটনা।