প্রিয় নায়ক অমিতাভ। সুযোগ পেলেই ‘বিগ-বি’-র সিনেমার প্রচার শুরু। কিন্তু তাই বলে চুরি করতে গিয়েও এমনটা করলে, সমস্যা তো হবেই। এখানেও হয়েছে ঠিক তেমনই। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন শুনে নিই।
সদ্য শেষ হয়েছে চুরি। এবার সুযোগ বুঝে পালাতে পারলেই কেল্লাফতে। কিন্তু বাধ সাধল একটা দেওয়াল। পালানোর কথা ভুলে, সেখানে প্রিয় নায়কের সিনেমার ছবি আঁকতে বসল চোর। এতেই হল কাল। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজির পুলিশ। হাতেনাতে ধরা পরল চোর। কিন্তু এমন সিনেমা পাগল চোরের কাণ্ড দেখে রীতিমতো তাজ্জব পুলিশ অফিসাররাও।
আরও শুনুন: বদলাচ্ছে দেশ! ১০০ বছর পেরিয়ে মিলল অধিকার, তামিলনাড়ুর মন্দিরে পুজো দিলেন দলিতরা
ঘটনাটি ইন্দোরের। সেখানকার জুনা রিসালা এলাকায় এদিন চুরি করতে যায় বিজয় ও সোনু নামে দুই যুবক। এলাকার অধিকাংশ বাড়িতেই তখন সবাই ঘুমের দেশে। সুযোগ বুঝে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দেয় ওই দুজন। সেখান থেকে টাকাপয়সা, গয়নাগটি সহ আরও অনেক কিছু চুরি করে তারা। তারপর সবকিছু নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার তাল করেছিল দুজনে। পরিকল্পনা মতো প্রথমে সোনু চম্পট দেয়। তার কাছেই বেশিরভাগ জিনিস ছিল বলেই দাবি পুলিশের। আগে থেকেই তারা ঠিক করে রেখেছিল, দুজন দুদিক দিয়ে পালাবে। সেইমতো বিজয়ের অন্যদিক দিয়ে পালানোর কথা। সেইমতো বাড়ির পিছন দিকে হাজির হয় বিজয়। কিন্তু সেখানেই বাধে গন্ডগোল। পালাতে গিয়ে তার চোখে পড়ে একটা সাদা দেওয়াল। যা দেখার পর পালানোর কথা বেমালুম ভুলে যায় সে।
ভাবছেন তো সেখানে কী এমন ঘটল?
আরও শুনুন: শিবভক্তদের উপর লাঠিচার্জের নির্দেশ দিয়ে পেলেন শাস্তি, কে এই ‘সাহসী’ আইপিএস?
আসলে বিজয় নামে ওই যুবক, চোর হলেও অমিতাভ বচ্চনের বিরাট মাপের ভক্ত। স্রেফ বচ্চনের সিনেমা দেখা নয়, যেখানেই সুযোগ পেত সেইসব সিনেমার প্রচার করে বেড়াত সে। ফাঁকা দেওয়াল দেখলে তো কথাই নেই। তক্ষনি সিনেমার কোনও ডায়লগ বা অমিতাভের ছবি আঁকতে বসে যেত বিজয়। এদিন ওই সাদা দেওয়াল দেখেও, আঁকতে বসে পড়ে বিজয়। বিগ-বি অভিনীত ‘অগ্নিপথ’ সিনেমার একটা ডায়লগ তক্ষনি দেওয়াল জুড়ে লিখে ফেলে সে। সেইসঙ্গে খোদ অমিতাভের একটা ছবি আঁকারও চেষ্টা করে। আর সেই কাজ করতে গিয়েই কোনওভাবে বেশ জোরে কিছু ভাঙার শব্দ হয়। বাড়ির সবাই টের পেয়ে তক্ষনি পুলিশে খবর দেন। সঙ্গে সঙ্গে হাজির হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এইসময় আর পালানোর কোনও পথ ছিল না। তাই ঘটনাস্থলেই হাতে নাতে ধরা পড়ে বিজয়। চুরির ঘটনার যাবতীয় পরিকল্পনার কথা নিজে মুখে স্বীকার করে সে। তার সঙ্গে যে আরও একজন ছিল, সে কথাও পুলিশকে জানায় বিজয়। যদিও সেই সঙ্গীর কোনও খোঁজ পায়নি বলেই জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু এভাবে যে বিজয়কেও ধরা সম্ভব হবে, তা ভাবতেও পারেননি পুলিশ আধিকারিকরা। সিনেমা ভক্ত অনেকেই হন, কিন্তু এমন ভক্ত খুঁজে পাওয়া দুস্কর বলেই মনে করেছেন তাঁরা। সেইসঙ্গে বিজয়ের ধরা পড়ার ঘটনায় যে একেবারেই বিরল তাও মেনে নিয়েছেন সকলেই।